গত সাধারণ নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার পর জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেস পার্টি এখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি৷ জনপ্রিয়তা কার্যত এখন তলানিতে৷ কেন এই অবস্থা? রাহুল গান্ধী কি পারবেন দলকে রাহুর দশা থেকে মুক্ত করতে?
বিজ্ঞাপন
অপেক্ষাকৃত নবীন নেতা নেহেরু-গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রস পার্টি এখন এক ঐতিহাসিক সংকটের মধ্যে দিয়ে চলেছে৷ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভরাডুবির পর এখনো পর্যন্ত পায়ের নীচে মাটি নেই৷ ২০০৯ সালের নির্বাচনে ৫৪৩টি সংসদীয় আসনের মধ্যে কংগ্রেস জোটের যেখানে ছিল ২৬২টি আসন, বর্তমানে তা এসে ঠেকেছে মাত্র ৪৪টিতে৷ রাজ্য বিধানসভার ভোটেও একের পর এক রাজ্য হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে কংগ্রেসের৷ স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত এত বড় একটা ঐতিহ্যমন্ডিত পার্টি, যাকে বলা হতো সর্বভারতীয় রাজনৈতিক ক্ষমতার ভরকেন্দ্র বা পাওয়ার-হাউস, আজ কংগ্রেসের হাল দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছে, কেন এই দৈন্যদশা?
পাওয়ার হাউস হিসেবে যাঁরা একদা কংগ্রেসের হাল ধরে রেখেছিলেন, সেইসব ওজনদার নেতারাও কংগ্রেসকে ডুবন্ত জাহাজ মনে করে একে একে মুখ ফেরাতে শুরু করেছেন৷ যেমন, চৌধুরি বীরেন্দ্র সিং, রাও ইন্দরজিত সিং এবং হালে উত্তরপ্রদেশের সাবেক কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রীতা বহুগুনাও কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপির দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন৷ এখন দলের যিনি মূল কান্ডারি, সেই সোনিয়া গান্ধীও যেন আজ উটপাখির মতো বালিতে মাথা গুঁজে আছেন৷ গান্ধী পরিবারের ধারাবহিকতা বজায় রাখতে. তিনি বুঝতে চেষ্টা করেননি, পরিবারতন্ত্র চিরকাল চলে না৷ এটা ষাট বা সত্তরের দশক নয়৷
ভারতের নির্বাচন ২০১৪
ভারতে একমাসেরও বেশি সময় ধরে নয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে৷ ৭ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ৷ ভোট গণনা হবে ১৬ মে৷ ৮০ কোটি ভোটার এই নির্বাচনে অংশ নেবেন৷
ছবি: DW/A. Chatterjee
জনগণের সরকার
ভারতের সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর৷ পার্লামেন্টে দুটি কক্ষ রয়েছে৷ উচ্চকক্ষকে বলা হয় রাজ্যসভা আর নিম্নকক্ষ লোকসভা হিসেবে পরিচিত৷ নিম্নকক্ষে যে দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তারাই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করে৷
ছবি: AP
দৌড়ে এগিয়ে
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে৷ তবে তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের পথটা নতুনভাবে বিবেচনা করতে হবে৷ কেননা ২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গার কারণে যুক্তরাষ্ট্র নরেন্দ্র মোদীকে বয়কট করেছে৷
ছবি: Reuters
কংগ্রেস নেতা
দীর্ঘ সময় ধরে কংগ্রেসের হাল ধরা সোনিয়া গান্ধী এবার দলের দায়িত্বের বোঝা তুলে দিয়েছেন নিজ পুত্র রাহুল গান্ধীর কাঁধে৷ ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রপৌত্র, প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পৌত্র এবং সবচেয়ে কমবয়সি প্রধানমন্ত্রীর ছেলে রাহুল৷ কিন্তু গত ১০ বছর ধরে রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট থেকেও সেখানে বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দুর্নীতি বিরোধী নেতা
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির রাজ্যসভা নির্বাচনে অভিষেক হয় দুর্নীতি বিরোধী দল আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের৷ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘কিং মেকার’ দল
বামপন্থি চারটি দল এবং সাতটি আঞ্চলিক দল মিলে থার্ড ফ্রন্ট গঠন করেছে, যা বিজেপি এবং কংগ্রেসের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ৷ লোকসভায় এখনই তাদের আধিপত্য আছে৷ ঝুলন্ত পার্লামেন্টের সম্ভাবনা থাকলে তারা হয়ে উঠতে পারে ‘কিং মেকার’৷ অর্থাৎ তারা যে দল সমর্থন করবে তারাই গঠন করবে সরকার৷
ছবি: Sajjad HussainAFP/Getty Images
সামাজিক গণমাধ্যমের ভূমিকা
এ বছর নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে৷ এটিকে নির্বাচনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে কোনো দলই পিছিয়ে নেই৷ এ বছর প্রথম ভোট দেবেন এমন মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি৷ এদের মধ্যে ৪০ ভাগ শহরে বাস করে, যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সক্রিয়৷ ফলে নতুন এই প্রজন্ম এবারের নির্বাচনে একটা বড় ভূমিকা রাখছে৷
মেশিনের মাধ্যমে ভোট
লোকসভার ৫৪৫ টি আসনের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভারতের মানুষ ভোট দেবেন ৫ সপ্তাহ ধরে৷ ইলেকট্রনিক মেশিন পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ চলবে৷ ফলাফল জানা যাবে ১৬ মে৷
ছবি: AP
সংখ্যালঘুদের উপর নির্ভরশীলতা
ভারতে ১৩ শতাংশ ভোটদাতা মুসলিম৷ ১০০টি সংসদীয় কেন্দ্রে ১৫-২০ শতাংশ, ৩৫টি কেন্দ্রে ৩০ শতাংশ এবং ৩৮টি আসনে মুসলিম ভোটদাতাদের সংখ্যা ২০ থেকে ৩০ শতাংশের মতো৷ কাজেই আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম ভোটবাক্স নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘নমো’ উন্মাদনা
যখন থেকে বিজেপি নরেন্দ্র মোদীকে (নমো) তাদের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেয়; তখন থেকেই সে দেশের গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ব্র্যান্ড হিসেবে ‘নমোকে’ তুলে ধরার উদ্যোগ নেয়৷ বিজেপির প্রচার-কুশীলবদের রি-ব্র্যান্ডিং অভিযানের তোড়ে নৈতিকতার প্রশ্নগুলো হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
9 ছবি1 | 9
দলের সাংগঠনিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ সময়ের দাবি৷ আগামী বছর দুয়েকের মধ্যে ৭টি বড় রাজ্যে নির্বাচন৷ সবথেকে আগে উত্তরপ্রদেশ ও পাঞ্জাব৷ সেইভাবেই দলীয় দায়দায়িত্বের নতুন বিন্যাস জরুরি৷ বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের রোগ নিরাময়ের সক্রিয় উদ্যোগ নেননি, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল৷ ফলে এক সময়ে যে অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য ছিল কংগ্রেসের দুর্গ, আজ সেই রাজ্যে কংগ্রেসের অস্তিত্বই মুছে গেছে৷ তামিলনাড়ুতে কংগ্রেস কখনো ক্ষমতায় আসেনি, আসার সম্ভাবনাও নেই৷ হরিয়ানা কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে গত নির্বাচনে৷ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে কংগ্রেসের মৌরসিপাট্টা দীর্ঘকালের৷ সেই রাজ্যও কংগ্রেসের হাতছাড়া৷
এটা দিনের আলোর মতো সত্য যে, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব কংগ্রেসের জন্য এক বোঝা৷ তাঁর মধ্যে রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি বা বিচক্ষণতার যথেষ্ট অভাব আছে৷ এমনটাই মনে করেন পর্যবেক্ষক মহল৷ সাংসদ হিসেবে বিতর্কে অংশ নেওয়া বা দলের হয়ে জোরালো বক্তব্য রাখা কিংবা সংসদে তাঁর নিয়মিত উপস্থিতি নিয়েও ঘরে বাইরে তিনি সমালোচিত৷ আসামের বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা হেমন্ত বিশওয়া শর্মা তো বলেই বসলেন, রাহুল গান্ধী অনিচ্ছুক রাজনীতিক৷ তাঁকে জোর করে রাজনীতিতে টেনে আনা হয়েছে৷গান্ধী পরিবারের প্ল্যাকার্ড তুলে ধরতে৷ কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেবার জন্য যে নিষ্ঠার দরকার, সেটা তাঁরমধ্যে নেই৷
ক্যাডার-ভিত্তিক দলে পরিবারতন্ত্র অচল৷
এই প্রসঙ্গেই ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বললেন প্রবীণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানি ডক্টর অমল মুখোপাধ্যায়৷ তিনি মনে করেন, কংগ্রেসের মধ্যে এখন চলেছে নেতৃত্বের সংকট৷রাজীব গান্ধীর সময় পর্যন্ত যে ধরণের নেতৃত্ব ছিল আজ কংগ্রেসের মধ্যে তা নেই৷ দ্বিতীয়ত, রাজ্য স্তরে কংগ্রেসের সাগঠনিক কাঠামো খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ সেই কারণে কংগ্রেস শক্তি হারাচ্ছে৷ রাজ্যগুলিতে দলের সাংগঠন খুবই আগোছালো৷ অধিকাংশ রাজ্যেই কংগ্রেসের উপযুক্ত নেতার অভাব৷ এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে রাহুল গান্ধী কতটা সফল হবেন সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে৷ এক কালে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের যে ক্যারিশমা ছিল, রাহুল গান্ধীর মধ্যে তার ছিঁটেফোঁটাও নেই৷ আম জনতাকে আকর্ষণ করার মতো ক্ষমতা নেই রাহুল গান্ধীর৷
ডক্টর মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় ভুল হয়েছে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে দল থেকে সরিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে বসানো৷ বিগত ২০০৪ আর ২০০৯ সালে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পেছনে ছিল প্রণববাবুর সাগঠনিক দেখভাল এবং কলাকৌশল৷ তাঁরই হওয়া উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রী৷ তাঁকে রাষ্ট্রপতি করায় কংগ্রেসের থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক বলতে কিছুই রইলো না৷ প্রণববাবু যদি থাকতেন, তাহলে সম্ভবত কংগ্রেসকে গত নির্বাচনে এই রকম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতো না৷''
ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে ভোট আসন্ন৷ জাতীয় রাজনীতিতে উত্তরপ্রদেশ চিরকালই দিক নির্দেশক৷ কাজেই সেই নির্বাচনের ফলাফল হবে রাহুল গান্ধীর জন্য এক অগ্নিপরীক্ষা৷ যদিও এক মিডিয়া চ্যানেলের প্রাক-নির্বাচন সমীক্ষায় ইতিমধ্যেই এক পূর্বাভাষে কংগ্রেসকে চতুর্থ স্থানে বসানো হয়েছে৷ সেক্ষেত্রে রাহুল গান্ধীর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে৷
একজন নরেন্দ্র মোদী
উগ্র সাম্প্রদায়িক আদর্শ এবং বিভাজনের রাজনীতির কারণে ভারতের বহু মানুষের কাছে তিনি খলনায়ক৷ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে নতুন মোড়কে সামনে এনে সেই নরেন্দ্র মোদীই শোনাচ্ছেন ভারতকে বদলে দেয়ার মন্ত্র৷
ছবি: dapd
চা ওয়ালা
১৯৫০ সালে গুজরাটের নিম্নবিত্ত এক ঘাঞ্চি পরিবারে জন্ম নেয়া নরেন্দ্র মোদী কৈশরে বাবাকে সাহায্য করতে রেল ক্যান্টিনে চা বিক্রি করেছেন৷ ঘাঞ্চি সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেন নামের এক বালিকার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়, যদিও বেশিদিন সংসার করা হয়নি৷ ছাত্র হিসেবে সাদামাটা হলেও মোদী বিতর্কে ছিলেন ওস্তাদ৷ ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর প্রচারক হিসাবে রাজনীতির দরজায় পা রাখেন মোদী৷
ছবি: UNI
গুজরাটের গদিধারী
১৯৮৫ সালে আরএসএস থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়ার ১০ বছরের মাথায় দলের ন্যাশনাল সেক্রেটারির দায়িত্ব পান ১৯৯৫ সালে গুজরাটের নির্বাচনে চমক দেখানো মোদী৷ ১৯৯৮ সালে নেন দলের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব৷ ২০০১ সালে কেশুভাই প্যাটেলের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে দলের মনোনয়নে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আবির্ভূত হন নরেন্দ্র মোদী, যে দায়িত্ব তিনি এখনো পালন করে চলেছেন৷
ছবি: Reuters
দাঙ্গার কালিমা
মোদীকে নিয়ে আলোচনায় ২০০২ সালের দাঙ্গার প্রসঙ্গ আসে অবধারিতভাবে৷ স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গুজরাটে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন৷ মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও তিনি দাঙ্গায় উসকানি দেন৷ তিনি এ অভিযোগ স্বীকার করেননি, আদালতও তাঁকে রেহাই দিয়েছে৷ তবে দাঙ্গার পক্ষে কার্যত সাফাই গেয়ে, হিন্দুত্ববাদের গান শুনিয়েই তিন দফা নির্বাচনে জয় পান মোদী৷
ছবি: AP
রূপান্তর
দাঙ্গার পর নিজের ভাবমূর্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেন নরেন্দ্র মোদী৷ একজন বিতর্কিত নেতার বদলে উন্নয়নের কাণ্ডারি হিসাবে তাঁকে প্রতিষ্ঠা দিতে শুরু হয় ‘গুজরাট মডেল’-এর প্রচার৷ ২০০৭ সালের পর নিজেকে একজন সর্বভারতীয় নেতা হিসাবে তুলে ধরতে নতুন প্রচার শুরু করেন এই বিজেপি নেতা, প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্র্যান্ড মোদী’৷গুজরাটের উন্নয়নের চিত্র দেখিয়ে কলঙ্কিত ভাবমূর্তিকে তিনি পরিণত করেন ভারতের ত্রাতার চেহারায়৷
ছবি: UNI
ভারতের পথে পথে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে নরেন্দ্র মোদী পাড়ি দিয়েছেন তিন লাখ কিলোমিটার পথ৷ সারা ভারতে পাঁচ হাজার ৮২৭টি জনসভায় তিনি অংশ নিয়েছেন, নয় মাসে মুখোমুখি হয়েছেন পাঁচ কোটি মানুষের৷ কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসাবে শুরু করলেও এবার তিনি হিন্দুত্ব নিয়ে প্রচার এড়িয়ে গেছেন সচেতনভাবে, যদিও বাংলাদেশের মানুষ, ভূখণ্ড এবং ধর্ম নিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতাদের বক্তব্য নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছে৷
ছবি: AP
নতুন ইতিহাস
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটই যে এবার ভারতে সরকারগঠন করতে যাচ্ছে, বুথফেরত জরিপ থেকে তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ ৬৩ বছর বয়সি মোদীর নেতৃত্বে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি৷ ৭ই এপ্রিল থেকে ১২ই মে অনুষ্ঠিত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৮১ কোটি ৪০ লাখ৷ তাঁদের মধ্যে রেকর্ড ৬৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শেষ হাসি
নির্বাচনে বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল – মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের অর্থনীতি নতুন গতি পাবে, গুজরাটের আদলে তিনি ভারতকে বদলে দেবেন৷ অবশ্য সমালোচকরা বলছেন, ‘কলঙ্কিত ভাবমূর্তি’ ঢাকতে এসব মোদীর ফাঁপা বুলি৷ তাঁর স্বৈরাচারী মেজাজ, শিক্ষা ও অর্থনীতির জ্ঞান নিয়েও ঠাট্টা-বিদ্রুপ হয়েছে৷ বলা হচ্ছে, ভোটাররা টানা তৃতীয়বার কংগ্রেসকে চায়নি বলেই বিজেপি জয় পেয়েছে৷ যদিও শেষ হাসি দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর মুখেই৷