২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গেয়ে রেকর্ড গড়ার উদ্যোগে গত কদিন ধরে ব্লগ আর ফেসবুক বেশ সরগরম৷ ৫০ কোটি টাকা খরচ করে এই রেকর্ড করা যুক্তিসঙ্গত কিনা, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যেমে সে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ৷
বিজ্ঞাপন
সামহয়্যার ইন ব্লগে মারুফ অভিক লিখেছেন, ‘‘একত্রে জাতীয় সংগীত গাইলে কিংবা একত্রে পতাকা বানিয়ে রেকর্ড করে কি আসলেই দেশপ্রেম প্রকাশ পায়??!!'' তিনি তাঁর অফিসের এক বিদেশি সহকর্মীর উদাহরণ দিয়ে বলেন, ঐ কর্মীর দেশের স্কুলে নাকি জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না৷ এই তথ্য উল্লেখ করে অভিকের মন্তব্য, ‘‘...তার মানে কি তাদের মাঝে দেশপ্রেম নেই??!!! উত্তর হচ্ছে ‘আছে'৷ আছে বলেই আজ তারা এত উন্নত!! তারা ২৪ ঘণ্টা দেশপ্রেম দেশপ্রেম করে না বরং কাজের মাধ্যমে সেটা করে দেখায়৷''
একই ব্লগে সাইফ হাসনাত লিখেছেন, রেকর্ডের জন্য অর্থ খরচ না করে সেটা দিয়ে এমন কাজ করা উচিত যাতে দেশের চেহারা পাল্টে যায়৷ তাঁর কথা, ‘‘জাতীয় সংগীত রেকর্ড গড়ার বস্তু না৷ কোটি বাংলাদেশির হৃদয়ে প্রতি মুহূর্তে জাতীয় সংগীত বাজে৷''
উল্লেখ্য, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক প্রতিবেদনে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের একটি মন্তব্য ছাপা হয়েছে৷ তিনি বলেছেন, প্রায় তিন লাখ লোক একসঙ্গে জাতীয় সংগীত গাওয়ার জন্য ৫০ কোটি টাকা খরচ হবে৷
ভিন্ন মাত্রায় বিজয় উদযাপন
বাঙালির কাছে এবার বিজয় দিবস নতুন রূপে ধরা দিয়েছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির তিনদিন পর এই বিজয় উৎসব জাতিকে ভিন্ন মাত্রায় উজ্জীবিত করেছে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
অনেক ত্যাগ আর তিতিক্ষার বিনিময়ে পৃথিবীর বুকে জন্ম নিয়েছিলো ‘বাংলাদেশ’ নামে একটি নতুন রাষ্ট্র, পেয়েছে নতুন মানচিত্র৷ আজ ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪২ বছর পূর্তি৷ সেই উপলক্ষ্যে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিরোধী নেতার শ্রদ্ধা
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া৷
বড়দের সঙ্গে এসেছিল শিশুরাও৷ বুঝে হোক, কিংবা না বুঝে, বড়দের সাথে সাথে তারাও শ্রদ্ধা জানিয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের৷
ছবি: DW/M. Mamun
"বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব পতাকা"
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির হাজার প্রাণের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী৷ তাদের পরাজয়ে উদিত হয় একটি নতুন দেশের সূর্য৷ সূচিত হয় নতুন ইতিহাস, নতুন পতাকা৷ স্বাধীনতার ৪২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব পতাকা তৈরি করেন প্রায় ত্রিশ হাজার সেনা সদস্য, স্কুল শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
নতুন রূপে বিজয় দিবস
এবারের বিজয় দিবস বাঙালির কাছে নতুন রূপে ধরা দিয়েছে৷ বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির তিনদিন পর এই বিজয় দিবস জাতিকে ভিন্ন মাত্রায় উজ্জীবিত করেছে, দিয়েছে নতুন সাহস৷ ৪২ বছর ধরে জাতি যা চেয়েছে, তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
নয় মাসের আত্মত্যাগ
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বাঙালি নিধন শুরু করেছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী৷ তার জবাব দেয়া হয় স্বাধীনতা ঘোষণা আর মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে৷ যুদ্ধকালীন ৯ মাসের চরম আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন হয় বাংলাদেশ৷ স্বাধীনতার জন্য জীবন দেন ৩০ লাখ মানুষ৷
ছবি: AP
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার
স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামসসহ স্বাধীনতা বিরোধীরা ব্যাপক গণহত্যা চালিয়েছিল৷ হত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা৷ এই সব রাজাকারদের বিচারের আওতায় আনতে কয়েক দশক সময় লেগে যায়৷
ছবি: Reuters
মুক্তি আন্দোলনের সূত্রপাত
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য আন্দোলনরত ছাত্রদের বুকে গুলি চালানো হয়৷ রফিক, সালাম, বরকতসহ অনেকে শহিদ হন৷ সেই সময়ই রচিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি৷
ছবি: DW/M. Mamun
লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করেছিল সেই জায়গায় লাখো কণ্ঠে একসঙ্গে উচ্চারিত হলো ‘‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি৷'' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই গানটিই একাত্তরের রণাঙ্গণে বাঙালি জাতিকে প্রেরণা যুগিয়েছিল, শক্তি দিয়েছিল –যা পরে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসাবে গ্রহণ করা হয়৷ ‘বিজয় ২০১৩' মঞ্চে বিকাল ৪টা ৩১ মিনিটে এই গানে কণ্ঠ মেলান উপস্থিত লাখো জনতা৷
ছবি: Mustafiz Mamun
10 ছবি1 | 10
এ প্রসঙ্গে ‘‘শাহবাগ থেকে হেফাজত: রাজসাক্ষীর জবানবন্দী'' বইয়ের লেখক জিয়া হাসান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘আমার প্রথম থেকেই একটা খটকা ছিল যে, জাতীয় সংগীত গেয়ে বিশ্ব রেকর্ড করার এই অনুষ্ঠান করতে ৫০ কোটি টাকা লাগবে কেন৷ প্রধানমন্ত্রী যদি ঘোষণা দেন, তাহলে ঢাকা শহরের চার পাঁচ লক্ষ লোক ২৬ মার্চের অনুষ্ঠানে এমনিতেই যাবে৷ এমনকি স্কুলের স্টুডেন্টদেরকে দিয়েও এইটা করানো যায়, সরকার যদি চায়৷'' এরপর তিনি তাঁর এক বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানান, এই পুরো কাজের বড় একটা অংশের কন্ট্রাক্ট দেয়া হয়েছে ‘এশিয়াটিক'-কে ৷ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে এই কোম্পানির অন্যতম মালিক হিসেবে উল্লেখ করে জিয়া হাসান প্রশ্ন করেন, ‘‘মন্ত্রী এবং এমপিদের সরকারের সাথে ব্যবসা করা আইনত নিষিদ্ধ৷ তাহলে এইটা একটা প্রত্যক্ষ দুর্নীতি হইলো না?''