জাপানের আশা ‘ফায়ার আইস’ বা তুষারাগ্নি
১২ মার্চ ২০১৩সমুদ্রগর্ভে ড্রিল করে এই ফসিল ফুয়েল বা প্রস্তরীভূত জ্বালানিটি পাওয়া যায়৷ দেখতে ঠিক বরফের মতো, কিন্তু আসলে তা ঘনীভূত মিথেন গ্যাস, পানির মলিকিউল দিয়ে ঢাকা৷ সাগরের প্রায় এক কিলোমিটার গভীরতায় এই তুষারাগ্নি খুঁজে পেয়েছে একটি জাপানি কনসর্টিয়াম৷
কনসর্টিয়ামটির নেতৃত্বে রয়েছে জাপানের তেল, গ্যাস ও ধাতু সংক্রান্ত জাতীয় কর্পোরেশন৷ ফায়ার আইস খোঁজার কাজ শুরু হয় এক বছর আগে৷ গত মঙ্গলবার থেকে পরীক্ষামূকভাবে দু'সপ্তাহের জন্য উৎপাদনের কাজ চালানো হবে, বলে জানিয়েছেন অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা৷
এটা হবে বিশ্বে মিথেন হাইড্রেট থেকে গ্যাস তৈরি করার প্রথম অফশোর এক্সপেরিমেন্ট, এএফপি সংস্থাকে বলেছেন কর্মকর্তাটি৷ মিথেন হল প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল উপাদান৷ ক্ল্যাথরেট গোত্রীয় আধা-জমাট কম্পাউন্ডটি থেকে গ্যাস বার করার জন্য সমুদ্রগর্ভে পানির চাপকে ব্যবহার করা হয়৷
ফায়ার আইস নামধারী সাদা পদার্থটি জ্বলে ম্লান দ্যুতিতে, এবং জ্বলার পর পানি ছাড়া আর কিছু পড়ে থাকে না৷ এক ঘনমিটার ফায়ার আইস থেকে যে পরিমাণ মিথেন পাওয়া যায় তা এক ঘনমিটার মিথেন গ্যাসের চেয়ে বহুগুণ বেশি৷
পশ্চিম জাপানের শিকোকু দ্বীপের উপকূলে সমুদ্রগর্ভে এক ট্রিলিয়ন ঘনমিটারের বেশি মিথেন হাইড্রেটের একটি স্তর আছে, বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা৷ তা থেকে যে পরিমাণ গ্যাস উৎপাদন করা সম্ভব, তা'তে ১১ বছর ধরে জাপানের সামগ্রিক গ্যাসের চাহিদা মেটানো যাবে৷
২০১৮-১৯ সালের মধ্যেই মিথেন হাইড্রেট থেকে গ্যাস উৎপাদনের প্রযুক্তি ব্যবহারিক প্রয়োগের উপযোগী হয়ে উঠবে, বলে কর্মকর্তাদের ধারণা৷ এবং তাঁরা বিশেষভাবে খুশি কেননা ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর প্রায় সব ক'টি আণবিক চুল্লি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে জাপানকে অনেক বেশি মূল্যে ফসিল ফুয়েল বা খনিজ জ্বালানি কিনতে হচ্ছিল৷ এবার যদি ঘরের দোরগোড়াতেই তুষারাগ্নি উৎপাদন করা সম্ভব হয়, তাহলে জাপানকে আর পায় কে!
এসি / এসবি (এএফপি)