1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাপানের ভূকম্পবিদদের অন্ধ বিশ্বাস

১৪ এপ্রিল ২০১১

ভূমিকম্পের বিপদ সংক্রান্ত মান্ধাতার আমলের আইনকানুনের ফলেই নাকি তারা ১১ই মার্চের বিধ্বংসী ভূমিকম্পের কোনো আঁচই পাননি, বলেছেন এক মার্কিন ভূকম্পবিদ৷

ছবি: dapd

রবার্ট গেলার মার্কিনি হলেও, পড়ান টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ প্রখ্যাত ‘সায়েন্স' জার্নালে তিনি লিখেছেন, জাপানের সরকারি ভূকম্পবিদরা নাকি জাপানের দক্ষিণের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে ভূমিকম্পের বিপদ নিয়েই চিন্তা-ভাবনা করতে অভ্যস্ত৷ উত্তর-পূর্ব জাপানে যে ৯ শক্তির একটা ভূমিকম্প ঘটতে পারে, এটা তাদের কল্পনাতেও আসেনি৷ অথচ ১১ই মার্চের সেই ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট সুনামির ফলেই জাপানে ২৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান অথবা নিখোঁজ হন, ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র এক নতুন চেরনোবিলে পরিণত হয়৷

বহু দশক ধরে জাপানের ভূকম্পবিদদের ধারণা যে, জাপানে যদি কোনো বড় ভূমিকম্প হয়, তা'হলে তা ঘটবে হনশু এবং শিকোকু উপকূলের মাঝামাঝি, যেখানে দু'টি মহাদেশীয় প্লেট বা স্তর পরষ্পরের সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে৷ কাজেই টোকাই, টোনানকাই এবং নানকাই এলাকাগুলির নানা ধরণের ‘হ্যাজার্ড ম্যাপ' বা বিপর্যয় মানচিত্র সরকারের তরফ থেকেই জনসাধারণের জ্ঞান তথা প্রস্তুতি বা কল্যাণের জন্য ছাপা হয়ে এসেছে৷ তা' নিয়ে বিপদ সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা অভিযান চলেছে৷ এবং বিজ্ঞানীরাও যেহেতু মানুষ, সেহেতু তারাও নিজোদের প্রচারণার সেই কুহক জালে নিজেরাই জড়িয়ে বসে আছেন৷ বিজ্ঞানীদেরও দৃঢ় প্রতীতী জন্মে গেছে: ভূমিকম্প যদি কোথাও হয় তো এখানে৷

ছবি: AP

গেলারের বক্তব্য হল, যে ‘চরিত্রগত ভূমিকম্প' এবং ‘ সাইসমিক গ্যাপ' তত্ত্বগুলির উপর নির্ভর করে এই সব তথাকথিত ‘ভূমিকম্প প্রবণ এলাকাগুলির' কল্পনা, সেই তত্ত্বগুলিই যাট এবং সত্তরের দশকের, এবং কোনোদিনই সেগুলির কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ কাজেই জনতার ধারণা ছিল যে, ঘড়ির কাঁটা ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে এবং একদিন না একদিন টোকাই জেলায় একটা বড় রকমের ভূমিকম্প হানা দেবেই৷অথচ ১১৯৭৫ সাল যাবৎ সরকারি বিজ্ঞানীদের ঘোষিত তিনটি ভূমিকম্প এলাকায় কোনো বড় ভূমিকম্পই ঘটেনি৷ বরং ১৯৭৯ যাবৎ জাপানে যে সব ভূমিকম্পে মোট দশ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, সে সব ভূমিকম্পের ঘটনাস্থল ছিল এমন সব জায়গা, যেখানে ভূমিকম্প ঘটার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম বলেই বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করেছিলেন৷ ইতিহাস ঘেঁটে দেখলেই দেখা যেতো যে, বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে ভূমিকম্প সৃষ্ট সুনামি বারংবার উত্তর-পূর্ব জাপানেই আঘাত হেনেছে৷ ফুকুশিমা দাইচি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের সময়েই আরো বেশি সাবধান হওয়া উচিৎ ছিল৷

সবশেষে আসছে এলইসিএ নামধারী ১৯৭৮ সালের একটি জাপানি আইন, যার উপজীব্য হল টোকাই'এ একটি ভূমিকম্পের পূর্ব-সতর্কতা দেওয়ার একটি প্রণালী৷ অথচ জাপানের জনগণকে স্পষ্ট বলা উচিৎ, ভূকম্পবিদ্যার বর্তমান পর্যায়ে কোনো ভূমিকম্পের ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়, বলছেন গেলার৷

কথাটা বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষদেরও অনুধাবনযোগ্য৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: সাগর সরওয়ার

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ