গত পয়লা এপ্রিলের পরিসংখ্যান৷ এ দিন জাপানে ১৫ বছরের কমবয়সি ছেলেমেয়েদের সংখ্যা ছিল আনুমানিক এক কোটি ৬৩ লক্ষ ৩০ হাজার৷ যা কিনা এক বছর আগের তুলনায় এক লাখ ষাট হাজার কম৷
১৯৫০ সালে জনসংখ্যাগত এই সব তথ্য সংগ্রহ করা শুরু হয়৷ বিগত ৩৩ বছর ধরে জাপানে শিশুদের সংখ্যা এ ভাবে প্রতি বছর কমে আসছে৷ স্বরাষ্ট্র এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এই পরিসংখ্যান রেখে থাকে৷
বছরের পর বছর ভারতে হাজারো শিশু নিখোঁজ হওয়ার খবর শোনা যায়, যাদের অনেকেরই আর কোনো খোঁজই পাওয়া যায় না৷ এদের কেউ নিজেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়, আবার কাউকে অপহরণ করে নানা রকম কাজ করতে বাধ্য করা হয়৷
ছবি: DW/B. Dasভারতে ‘শিশু বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের একটি সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে যে, ভারতে প্রতি ঘণ্টায় ১১ জন শিশু নিখোঁজ হয়ে থাকে৷ এদের মধ্যে কমপক্ষে চারজনকে আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায় না৷
ছবি: DW/B. Dasদিল্লির একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের ১৬ বছর বয়সি মেয়ে পিংকিকে খুঁজে পাওয়া গেছে অপরিচিত একটি বাড়িতে৷ সেখানে ওকে জোর করে ঘরের কাজ করানো হচ্ছে এবং বলা বাহুল্য, কোনো বেতন ছাড়াই৷
ছবি: DW/B. Dasছবিটিতে এক বাবার হাতে তাঁর হারিয়ে যাওয়া ছেলের ছবি আর তাঁর অন্য হাতে একটি বাক্স৷ সে বাক্সে রয়েছে মানুষের সাহায্য করা অর্থ, যে অর্থ দিয়ে এই বাবা তাঁর ছেলেকে খুঁজে বের করতে সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাবেন বলে ঠিক করেছেন৷
ছবি: DW/B. Dasযেসব শিশুরা বাড়ি থেকে নিজের ইচ্ছায় চলে যায় বা পালিয়ে যায়, ওরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে কাজের ছেলে-মেয়ে হিসেবে বা এ ধরণেরই কোনো কাজ করে থাকে৷ যেমন চায়ের দোকান, পেট্রোল পাম্প বা কার্পেট তৈরি কারখানায়৷ ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লির একটি পেট্রোল পাম্প থেকে এমনই কিছু শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ৷
ছবি: DW/B. Dasছেলেটির হাতে ছয় বছর আগে ওর হারিয়ে যাওয়া বোনদের ছবি৷ ওদের খুঁজে পাবে এই আশায় এখনো বুক বেধে আছে ছেলেটির পুরো পরিবার৷ নিখোঁজ বোনদের ফিরে পাওয়ার জন্য পরিবার থেকে মাঝে মাঝেই বোনদের ছবি এবং নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তিসহ প্রচারপত্র বিলি করা হয়৷
ছবি: DW/B. Dasনিখোঁজ হয়ে যাওয়া এই শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া গেছে অবশেষে৷ শিশুটি ওর বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য ঠিক এ জায়গাতেই অপেক্ষা করছে গত প্রায় এক বছর যাবত৷ কবে শেষ হবে এই অপেক্ষার পালা?
ছবি: DW/B. Dasনিখোঁজ হয়ে যাওয়া অর্জুন আবারো মায়ের কোলে ফিরে এসে অত্যন্ত আনন্দিত, ভীষণ খুশি৷ অর্জুন ওর মাকে তার কষ্টের কথা জানিয়েছে৷ বলেছে, গত দু’বছর ওকে বেধে রাখা হয়েছিল এবং কাজ করতে বাধ্যও করা হয়েছিল৷ তবে ওর মা কিন্তু অর্জুনকে ফিরে পাবার আশা কখনো ছেড়ে দেয়নি৷
ছবি: DW/B. Dasএই মা তাঁর কয়েকজন শিশুর মধ্যে একজনকে হারিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘আর কখনো আমি আমার শিশুদের চোখের আড়াল হতে দেব না৷ উল্লেখ্য, ‘শিশু বাঁচাও আন্দোলন’ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে www.bba.org.in ঠিকানায়৷
ছবি: DW/B. Das
বর্তমানে জাপানের জনসংখ্যায় শিশুদের অনুপাত মাত্র ১২ দশমিক আট শতাংশ৷ সে তুলনায় ৬৫ বছর অথবা তার বেশি বয়সের মানুষদের অনুপাত ২৬ দশমিক ছয় শতাংশ, যা কিনা একটা রেকর্ড৷ অন্তত চার কোটি জনসংখ্যার দেশগুলির মধ্যে জাপানেই শিশুদের অনুপাত সবচেয়ে কম৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিশুদের অনুপাত হল ১৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ; চীনে ১৬ দশমিক চার শতাংশ৷
অপরদিকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে এখন ১২ কোটি ৭২ লক্ষ ৯৮ হাজার মানুষের বাস: এর মধ্যে যারা দীর্ঘকাল জাপানে বাস করছেন, এমন বিদেশিদেরও ধরা হয়ে থাকে৷ ২০১৩ সালের পয়লা অক্টোবরের তুলনায় জাপানের জনসংখ্যা শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ কমেছে৷
বাকি থাকে ভবিষ্যতের বিভীষিকা: এভাবে চলতে থাকলে ২০৬০ সালে জাপানের জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের বেশি মানুষের বয়স হবে ৬৫ বছর কিংবা তার বেশি৷ এটা খোদ জাপান সরকারের ভবিষ্যদ্বাণী৷
এসি/এসবি (এএফপি)