1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামায়াতকে ত্যাগ করুন!

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৬ জানুয়ারি ২০১৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরদিন এক সংবাদ সম্মেলনে জঙ্গি ও যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকে ত্যাগ করে বিএনপিকে আলোচনায় আসার আহ্বান জানান৷ তবে আলোচনা আগামী বা মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে কিনা – তা তিনি জানাননি৷

Bangladesch Wahlen 04. Januar 2014
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images

তাঁর দল এবং তাঁকে পুনরায় নির্বাচন করে আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশ পরিচালনার সুযোগ করে দেয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ বলেন, তাদের প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগ বাস্তবায়ন করবে৷ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ৷

শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে৷ কিন্তু তারা নির্বাচনে না এসে সন্ত্রাস, অবরোধ আর হরতালের পথ বেছে নিয়েছে৷ তারা নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে৷ নির্বাচন প্রতিহতের নামে হত্যা ও সন্ত্রাস করেছে৷ এই করে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া একুল-ওকুল দু'কুলই হারিয়েছেন৷

সন্ত্রাস, সংঘাতের রাজনীতি কি শেষ হবে বাংলাদেশে?ছবি: Reuters

তাই তিনি এবার বিএনপিকে জঙ্গি ও যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করে আলোচনা ও সমঝোতায় আসার আহ্বান জানান৷ তবে এই আলোচনা কি নিয়ে তা তিনি স্পষ্ট করেননি৷ এই আলোচনা আগামী নির্বাচন বা মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে কিনা – সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচন যখন আসবে তখন আলোচনা হবে৷ তবে তখন বিএনপি তো আর বিরোধী দল থাকবে না, জানান প্রধানমন্ত্রী৷

শেখ হাসিনা গণভবনে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তাঁর সরকারের প্রথম কাজ হলো দেশের মানুষের নিরপত্তা নিশ্চিত করা৷ তিনি সন্ত্রাস ও জঙ্গি তত্‍পরতার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স'-এর কথা বলেন৷ তিনি জানান, দেশের কেউ যাতে আর সন্ত্রাসের শিকার না হন, সে জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ তিনি জানান, এ পর্যন্ত যারা বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় নিহত হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে৷ সুচিকিত্‍সার ব্যবস্থা করা হবে আহতদের৷ যেসব স্কুল পোড়ানো হয়েছে, তা নতুন করে আবার নির্মাণ করা হবে৷ আর যাঁদের সম্পদের ক্ষতি হয়েছে তাঁদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে৷

নাকি গৃহযুদ্ধে পর্যবশিত হবে দেশ?ছবি: DW

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো জায়গা নেই৷ যুদ্ধাপরাধীদের যে বিচার চলছে তা অব্যাহত থাকবে৷ তিনি বলেন, জামায়াত একটি সন্ত্রাসী দল৷ দলটি নিবন্ধন হারিয়েছে৷ আদালতে জামায়াত নিষিদ্ধ করার একটি মামলা চলছে৷ এখন আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে জামায়াত পুরোপুরি নিষিদ্ধকরণের ব্যাপারে৷

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রবিরোধী তাঁরাই এবারের নির্বাচন বর্জন করেছে৷ নির্বাচন প্রতিহত করতে মানুষ হত্যা করেছে, পুড়িয়ে মেরেছে৷ হরতাল অবরোধের নামে সম্পদের ক্ষতি করেছে৷ তাদের হাত থেকে গাছ ও নিরীহ গরুও রেহাই পায়নি৷ তাদের অপরাধের শাস্তি পেতে হবে৷ তাই অবশ্যই তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে৷

নির্বাচন সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হয়েছে কিনা – এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত প্রতিকূলতার মধ্যেও এই নির্বাচনে তিনি সন্তুষ্ট৷ জনগণ যতটুকু ভোট দিতে পেরেছে, তাতেই তিনি খুশি৷ এই নির্বাচনে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে বলেই তিনি মন্তব্য করেন৷

নির্বাচন প্রশ্নে বাংলাদেশ বিদেশি রাষ্ট্রের কোনো ধরণের নিষেধাজ্ঞা বা অরোধের মুখে পড়তে পারে কিনা – এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে এমন কিছু হয়নি যে বিদেশিরা নিষেধাজ্ঞা দেবে৷ এর চেয়েও অনেক খারাপ নির্বাচন বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে৷ সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ সহযোগিতার সম্পর্ক আরো বাড়াতে চায়৷

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনীতি আরো বেগবান করা হবে৷ শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের পথে সব বাধা দূর করা হবে৷ ব্যবসা-বাণিজ্যের আর ক্ষতি করতে দেয়া হবে না৷

নতুন সরকার সব দল নিয়ে হবে কী? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাতে তাঁর আপত্তি নেই৷ তিনি চান সবাইকে নিয়েই সরকার চালাতে৷ তবে বিরোধী দলও থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী৷

উল্লেখ্য, রবিবারে একতরফা ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন হয়েছে ১৪৭টি আসনে৷ কারণ ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনের প্রার্থীরা নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন৷ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২৩২টি আসন নিয়ে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে৷ জাতীয় পার্টি ৩৩টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে৷ ২৪শে জানুয়ারি চলতি সংসদের মেয়াদ শেষে আওয়ামী লীগ নতুন সরকার গঠন করবে৷ রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি বিরোধী দলে বসছে বলে শোনা যাচ্ছে৷ প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী ১৮ দল এই নির্বাচন বর্জনের পর, এখন নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে৷

প্রসঙ্গত, এই নির্বাচনে ৩১.১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ৷ এদিকে স্থগিত হয়ে যাওয়া ৮টি আসনের নির্বাচন হবে আগামী ১৬ই জানুয়ারি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ