ভোটের হিসাব বিবেচনা করে ক্ষমতাশীন দল আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীকে নিজেদের কাছে রাখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল৷
বিজ্ঞাপন
সেই সাথে তার দল বিএনপিও জামায়াতে ইসলামীকে পেতে চায় বলে জানান তিনি৷
‘‘ভোট ব্যাংকের হিসেবে কখনো আওয়ামী লীগ তাদেরকে (জামায়াতে ইসলামীকে) বগলের নিচে রাখতে চায়, আমরাও তাদেরকে বন্ধু হিসেবে পেতে চাই৷ এই বৈশিষ্ট্যটি দুই দলের পক্ষ থেকেই সুন্দরভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷''
ডয়চে ভেলের সাপ্তাহিক ইউটিউব টক-শো খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়-এ এ মন্তব্য করেন তিনি৷
আওয়ামী লীগ জামায়াতে ইসলামীকে নিজেদের কাছে রাখতে চায় এ মন্তব্যের পক্ষে সুনির্দিষ্ট কী তথ্য আছে জানতে চাইলে বিএনপির এ রাজনীতিবিদ বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ একসাথে ১৬ জনকে (জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী) আওয়ামী লীগে যোগদান করিয়েছেন৷’’
তিনি জামায়াতে ইসলামী ‘উভচর' অর্থাৎ জলে, স্থলে দুই জায়গাতেই সুযোগ বুঝে বিচরণ করে বলেও মন্তব্য করেন৷
চলতি সপ্তাহের আয়োজনে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভাবনা ও সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে৷
রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কী চায়, কিংবা দলটি যে-কোনো বিরোধী মতকে দমন করতে চায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ ড. হাবিবে মিল্লাত বলেন, জনগণের দল হিসেবে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের উন্নয়ন চায়৷
তিনি বলেন, আওয়ামি লীগ জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনগণের উন্নয়ন চায়৷ দেশের ইতিহাস সঠিকভাবে সংরক্ষিত হোক এবং অতীত-বর্তমান নিয়ে সত্য ঘটনাগুলো প্রকাশিত হোক সেটিই আওয়ামী লীগ চায়৷
আশির দশক ও নব্বইয়ের দশকের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেই সময় স্বাধীনতার বীরত্বগাঁথা সঠিকভাবে জানা যায়নি৷ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেটিও রেডিও-টেলিভিশনে প্রচারিত হয়নি৷
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে ধীরে ধীরে এ বিষয়গুলো মানুষ জানতে পারে, বলেন তিনি৷
সম্প্রতি সরকারি দলের নেতৃবৃন্দের মাঝে সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর বিষয়টি কেন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মিল্লাত বলেন, ‘‘দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন এটি এখনই সমাধান করতে হবে না৷''
তবে এটিকে সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে ড. মিল্লাত বলেন, ‘‘শুধু একটি কবরের কথাই যে বলা হচ্ছে তা কিন্তু নয়৷ এখানে আরো সাতটি থেকে আটটি কবর রযেছে৷ তার মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের স্বাধীনতার সময় বিতর্কিত অবস্থান ছিল৷''
স্থপতি লুই আই কানের মূল নকশায় সংসদ ভবনকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনেই বিষয়টি নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি৷
আরআর/এসিবি
খালেদার বিরুদ্ধে হাসিনার যত কথা
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন সময় তীর্ষক মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা৷ চরম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিয়ে কী কী বলেছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, দেখুন গ্যালারিতে৷
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
পাগল-ছাগল
পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্য প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘সেতু তো বিভিন্ন পার্ট (অংশ) তৈরি করে করে নির্মাণ হয়৷ এক্ষেত্রে তো জোড়া দিয়েই সেতু করা হয়৷ জোড়া না দিলে তো সেতু হয় না৷ কিন্তু উনি জোড়াতালি দিয়ে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা আমার বোধগম্য নয়৷ বাংলাদেশে তো একটা প্রচলিত কথা রয়েছে পাগলে কি না কয়, ছাগলে কি না খায়৷’’
ছবি: AP/DW
ছোটলোক
এক অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “আর যাই হোক আমি প্রধানমন্ত্রী৷ তার ছেলে যখন মারা গেল, আমি তার বাড়িতে গেলাম৷ কিন্তু আমাকে ঢুকতে দেওয়া হল না৷ এই ধরনের ছোটলোকিপনা যারা করে; তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন কোন মুখে?” বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
ঘিলু নেই
পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার মন্তব্যের জের ধরে হাসিনা বলেন, একটা জিনিস তৈরি করতে হলে কিভাবে কোন পদ্ধতিতে করা হয়, যার মাখায় ওইটুকু ঘিলু নেই, তিনি কি করে এটি বুঝবেন? তার মাথায় শুধু ঘিলু আছে চুরি করার, টাকা বানানোর আর এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার, মানুষ পোড়ানোর, মানুষ হত্যার৷
ছবি: Bdnews24.com
জঘন্য মনোবৃত্তি
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উনি (খালেদা) বলেছেন, ওখানে (ভোটকেন্দ্রে) নাকি পুলিশ ছিল আর কুকুর ছিল৷... এটা কোন ধরনের কথা যে ভোটারদের উনি কুকুর বললেন৷ এই যে ৪৩ ভাগ মানুষ ভোট দিল৷ ওনার দৃষ্টিতে সবাই কুকুর?... কত বড় জঘন্য মনোবৃত্তি৷ মানবসন্তান ও ভোটারদের উনি কুকুর হিসেবে ডাকলেন৷ এই জাতীয় নোংরা কথা, এই জাতীয় গালি এটা তাঁর মুখে সাজে৷
ছবি: PID
দুপুর পর্যন্ত ঘুম!
বিএনপির সাংসদ রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে সংসদে শেখ হাসিনা পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, তার নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো বেলা ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালেই তিনি খুশি হতেন কি না? রাত ১০টার পর শুরু হওয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের খবর জানতে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় গণমাধ্যমকর্মীদের৷ বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বরণডালা নয়
২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিকে আনতে খালদো জিয়াকে বরণডালা পাঠাতে হবে কি না সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেছিলেন, কার সঙ্গে আলোচনা? কিসের প্রস্তাব! একবার প্রস্তাব দিয়ে যে ঝাড়িটা খেলাম… তাকে আর প্রস্তাব দেওয়ার দরকার আছে বলে মনে করি না৷ বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷
ছবি: government's press department
শোক বার্তাও তৈরি ছিল
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় মৃত্যু হলে শোক জানানোর জন্য খালেদা জিয়া বার্তাও তৈরি করে রেখেছিলেন বলে ভয়াবহ ওই হামলার ১৫ বছর পূর্তিতে গত ২১ আগস্ট এক আলোচনা সভায় দাবি করেন শেখ হাসিনা৷ বিস্তারিত জানতে প্লাস চিহ্নে ক্লিক করুন৷