জামায়াতের সঙ্গে টানাপোড়েন
১৬ এপ্রিল ২০১৪ গত ৫ই জানুয়ারির এক তরফা নির্বাচনের পর থেকে বিএনপি ১৮ দলীয় জোটভূক্ত ইসলামী দল, বিশেষ করে জামায়াতের সঙ্গে এক ধরণের দূরত্ব বাজায় রাখছে৷ তাই নির্বাচনের পর জামায়াতের সঙ্গে প্রকাশ্য কোনো সাংগঠনিক বৈঠকও হয়নি বিএনপির৷ বিএনপি কর্মসূচি দিয়েছে এককভাবে৷ নির্বাচনের আগে সহিংস সরকার বিরোধী কর্মসূচি এবং মৌলবাদকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যাপক সমালোচনা করায় বিএনপির এই নিরাপদ দূরত্ব৷
উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই দূরত্ব আরো বেড়েছে৷ কারণ জামায়াত অনেক জায়গায় বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা উপেক্ষা করে প্রার্থী দিয়েছে৷ চেয়ারম্যান পদে তো বটেই, ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতের প্রার্থী দেয়ার প্রবণতা ছিল সবচেয়ে বেশি৷ যা জামায়াতকে উপজেলা নির্বাচনে সাফল্যও এনে দিয়েছে৷ এ নিয়ে নির্বাচন চলাকালে জামায়াতকে সমঝোতার কথা মনে করিয়ে দিলেও, তা আমলে নেয়নি জামায়াত৷ ফলে রুষ্ট হয়েছে বিএনপির হাইকমান্ড৷
বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান ডয়চে ভেলের কাছে জামায়াতের সঙ্গে দূরত্বের কথা স্বীকার করেছেন৷ তাঁর কথায়, এই দূরত্ব জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে৷ তবে তারা জোটে আছেন এবং সাংগঠনিকভাবে সম্পর্ক ঠিকই আছে৷'' তিনি বলেন, ‘‘ ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর জোটের কোনো বৈঠক হয়নি৷ সে কারণে জামায়াতের সঙ্গেও কোনো বৈঠক হয়নি৷''
এদিকে জোটের অন্য ইসলামিক দলগুলোও এখন নিষ্ক্রিয়৷ হেফাজতে ইসলাম নেতা মাওলানা আহমেদ শফির অনুসারী যেসব দল ১৮ দলীয় জোটে আছে, তারও নিষ্ক্রিয়৷ এছাড়া গত সপ্তাহে আহমেদ শফি প্রকাশ্যেই বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ আমাদের শত্রু নয়, বন্ধু৷
উপজেলা নির্বাচনের পর সরকারবিরোধী কঠোর আন্দোলনের কথা বলা হলেও, এ অবস্থায় বিএনপি আপাতত সরকারবিরোধী বড় কোনো আন্দোলনে যাচ্ছে না৷ খালেদা জিয়ার কথাতেও তা স্পষ্ট৷ আহমেদ আজম খান বলেন, ‘‘দল শক্তিশালী না হলে বড় কোনো আন্দোলন সফল হয় না৷ তাই দলকে গোছানোর ওপরই খালেদা জিয়া এখন জোর দিচ্ছেন৷ বিশেষ করে জেলা-উপজেলা এবং বিভাগীয় পর্যায়ে দল গোছানোর কাজ শুরু হয়েছে৷'' তিনি জানান, ‘‘জুনের পরে জাতীয় কাউন্সিল হতে পারে৷ এরপরই হয়ত কঠোর আন্দোলনে যাবে বিএনপি৷''
ওদিকে জামায়াতও আপাতত সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলনের কথা ভাবছে না বলে জানা গেছে৷ তারা যদি নতুন করে চরম কোনো বিপর্যয়ের মুখে না পড়ে, তাহলে আপাতত চুপচাপই থাকতে চায় তারা৷