1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রুপোলি পর্দা

২৮ অক্টোবর ২০১২

মুম্বই’এর চলচ্চিত্র শিল্প, এক কথায় হিন্দি ফিল্ম, এক কথায় বলিউড, ১০০ বছর অতিক্রম করছে৷ এই সুদীর্ঘ ইতিহাসের সূচনাতেই জার্মান চিত্রপরিচালক ফ্রানৎস অস্টেন ভারতীয় প্রযোজক হিমাংশু রায়ের সহযোগিতায় একটি জার্মান-ভারতীয় ছবি করেন৷

Title - Germans Bollywood Beschreibung: Deutschen bei dem Bollywood Film festival Copyright: Isha Bhatia, DW, Feste Mitarbeiterin Schlagwort: Stuttgart, bollywood, film, festival
ছবি: DW/I.Bhatia

ছবিটির নাম ছিল ‘‘শিকশালস্ভুর্ফেল'' বা ‘ভাগ্যের পাশা খেলা'৷ সেটা ছিল একটি সাইলেন্ট মুভি বা নির্বাক চিত্র৷ জার্মানি এবং ভারত, দু'টি দেশেই ছবিটি বিপুল সাফল্য পেয়েছিল৷ এবার বলিউডের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ফ্রানৎস অস্টেন'এর ছবিটি আবার প্রদর্শিত হচ্ছে৷ এবং সাইলেন্ট মুভির ঐতিহ্য অনুযায়ী ছবি দেখানোর সময় অর্কেস্ট্রা বাজবে৷ জার্মান সংগীত গোষ্ঠী ‘‘টুটেন উন্ড ব্লাজেন'' ২০০৯ সালেই অস্টেনের ছবিটি প্রদর্শনীর সময় বাজিয়েছিল৷ বিগত বিশ বছর ধরে তারা নীরব চিত্রের সঙ্গে বাজাচ্ছে৷ এবার তাদের মুম্বই'তেও ডাক পড়েছে৷

ড্রামস, স্যাক্সোফোন, ট্রাম্পেট বাজছে, পেছনে রুপোলি পর্দায় চলেছে ‘‘শিকশালস্ভুর্ফেল'' বা ‘ভাগ্যের পাশা খেলা'৷ ১৯২৯ সালে ছবিটি জার্মান দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করেছিল, বক্স অফিস হিট হয়েছিল৷ পরিচালক ফ্রানৎস অস্টেন পুরো ছবিটি তুলেছিলেন ভারতে৷ আজ সেই ছবির সঙ্গে বাজানোর সময় টুটেন উন্ড ব্লাজেন'এর দলনেতা আক্সেল হেনিস'এর মনে হয়:

‘‘ছবিটার মজা হল তার বিভিন্ন দৃশ্য৷ বার বার নতুন, অচেনা প্রকৃতি, শহর, অসংখ্য মানুষের জনতা৷ এর সঙ্গে বাজানোর সময় বড় অর্কেস্ট্রারাও মজা পায়৷''

পরিচালক ফ্রানৎস অস্টেন তাঁর ছবিতে দশ হাজার পার্শ্ব-অভিনেতা, এক হাজার ঘোড়া এবং ৫০টি হাতি ব্যবহার করেছিলেন৷ রাজা রঞ্জিতের ছিল পাশা খেলার নেশা, সেই করেই তিনি তাঁর হবু রানি সুনিতাকে হারিয়েছিলেন খলনায়কের কাছে৷ টুটেন উন্ড ব্লাজেন গোষ্ঠীর স্যাক্সোফোন বাদিকা গিয়র্গিয়া হপে বলেন:

‘‘বলতেই হয়, ছবিটা একটা রত্ন৷ ছবিটা যে এখানে ভারতে তৈরি হয়েছে, ভারতীয় চিত্রনির্মাতাদের সাহায্যে, সেটা জার্মান দৃষ্টিকোণ থেকে একটা আশ্চর্যের ব্যাপার৷''

ছবি: DW

জার্মান পরিচালক ফ্রানৎস অস্টেন ভারতীয় প্রযোজক হিমাংশু রায়ের সঙ্গে বিশের দশকে তিনটি নির্বাক ছবি তৈরি করেন, তিনটিই বড় আকারের৷ তাদের মধ্যে তৃতীয় ছবিটি ছিল ‘‘শিকশালস্ভুর্ফেল'' বা ‘ভাগ্যের পাশা খেলা'৷ এ'বিষয়ে হালের জার্মান চিত্র প্রযোজক স্টেফান অটেনব্রুখের মন্তব্য:

‘‘হিমাংশু রায় মহারাষ্ট্র এবং ভারতের দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন৷ তাঁর কল্যাণে বহু পার্শ্বচরিত্রের জন্য ভারতীয় এক্সট্রা, সত্যিকারের হাতি কিংবা রাজপ্রাসাদ পাওয়া গিয়েছে৷ বাস্তবিক দৃশ্যপটে শুটিং করা সম্ভব হয়েছে৷''

অটেনব্রুখ নিজে অস্টেনের উত্তরসুরি এই হিসেবে যে, তিনি নিজেও ফিল্মের ক্ষেত্রে জার্মান-ভারতীয় সহযোগিতাকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন৷ অস্টেনের মতো তাঁর উদ্দেশ্য হল, এমন ছবি তৈরি করা, যা জার্মানি এবং ভারত, উভয় দেশেই প্রদর্শন করা চলবে৷ কিন্তু গত শতাব্দির বিশের দশক আর একবিংশ শতাব্দির দ্বিতীয় দশকের মধ্যে ফারাক অনেক৷ জার্মানির মানুষ এখন শুধু বাঁধাগতের বলিউড ফিল্মকেই চেনে:

‘‘সমস্যা হল, ভারতীয় সিনেমা অনেক বদলে গেছে৷ পুরনো আমলের মেলোড্রামা আর নেই৷ ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবি বাজার মাত করছে৷ আমার সেটা দারুণ লাগে, কিন্তু জার্মানিতে মানুষ সেটাকে প্রায় চেনে না৷''

২০১০ সালে অটেনব্রুখ মুম্বই চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক শ্রীনিবাসন নারায়ণের সঙ্গে মিলিত হন৷ এর কিছু পরেই জার্মান এবং ভারতীয় চিত্রনাট্য রচয়িতাদের নিয়ে একটি যুগ্ম ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা হয়৷ অপরদিকে ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এখন তুঙ্গে, সিনে প্রযুক্তির দৃষ্টিকোণ থেকেও তারা সর্বাধুনিক পর্যায়ে৷ কাজেই জার্মানি ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে বলে অটেনব্রুখের ধারণা৷

সব মিলিয়ে অটেনব্রুখের লক্ষ্য হল, ‘‘শিকশালস্ভুর্ফেল'' বা ‘ভাগ্যের পাশা খেলা'-র মতো ছবি তৈরি করা, যা জার্মানদের রোমাঞ্চিত করবে, আবার ভারতীয়দেরও ‘‘নাড়া দেবে''৷ মজার কথা, ‘‘শিকশালস্ভুর্ফেল'' বা ‘ভাগ্যের পাশা খেলা'-তে যে তিনটি চুম্বনের দৃশ্য ছিল, তা'তে কিন্তু সুদূর ১৯২৯ সালে ভারতে কোনো ঊষ্মার সঞ্চার হয়নি৷

প্রতিবেদন: নিকোল শেরশুন, লায়লা ক্নুপেল / এসি
সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ