জার্মানরা শরণার্থী ও অভিবাসীদের ব্যাপারে নরম হচ্ছে
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২
জার্মানির ব্যার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের গবেষণায় দেখা গেছে, শরণার্থী ও অভিবাসীদের গ্রহণ করতে জার্মানরা ২০১৫ সালের তুলনায় একটু নমনীয় হয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
গবেষণার অন্যতম লেখক উলরিকে ভিলান্ড বলছেন, ‘‘আমাদের জরিপ বলছে, অভিবাসনের ব্যাপারে জার্মানদের মধ্যে এখনও অনেক সংশয় আছে৷ তবে সাম্প্রতিক সময়ে সেটা ক্রমেই কমছে৷'' তিনি বলেন, অর্থনীতিতে যে অভিবাসীদের অবদান আছে সেটা এখন অনেকেই স্বীকার করেন৷
জরিপে পাওয়া তথ্য
জরিপে অংশ নেয়া প্রতি তিনজনের দুইজন মনে করেন, জার্মানির বয়স্ক সমাজে ভারসাম্য আনতে অভিবাসন সহায়তা করছে৷
অর্ধেকের বেশি মানুষ মনে করেন, জার্মানিতে এখন যে দক্ষ শ্রমিকের সংকট দেখা যাচ্ছে সেটা অভিবাসন দিয়ে পূরণ হতে পারে৷
অর্ধেক উত্তরদাতা প্রত্যাশা করেন, অভিবাসীরা জার্মানির বিমা তহবিলে অতিরিক্ত রাজস্ব যোগ করবে৷
৩৬ শতাংশ উত্তরদাতা আর শরণার্থী নেয়ার পক্ষে নন৷ ২০১৭ সালে সংখ্যাটি এর চেয়ে বেশি ছিল - ৫৪ শতাংশ৷
৬৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, অভিবাসীরা কল্যাণ রাষ্ট্রের উপর অতিরিক্ত বোঝা চাপাচ্ছে৷
জার্মানিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা সন্তান ও অভিবাসীদের সন্তানদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন ৬৬ শতাংশ উত্তরদাতা৷
জরিপে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে৷ ৭১ শতাংশ উত্তরদাতার কাছে দক্ষ অভিবাসীদের চাকরি বা লেখাপড়ার সুযোগ খোঁজার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য৷ আর নিরাপত্তার সুযোগ খোঁজা শরণার্থীদের বিষয়টি গ্রহণযোগ্য ৫৯ শতাংশ উত্তরদাতার কাছে৷
জার্মান ভাষা জানলে ও চলার মতো পর্যাপ্ত আয় থাকলে প্রত্যাখ্যাত হওয়া আশ্রয়প্রার্থীদের জার্মানিতে আজীবন থাকার অনুমতি দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার৷
সব শরণার্থীকে তাদের দেশ থেকে পরিবার আনার সুযোগ দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷
নাগরিকত্ব পাওয়া আরও সহজ করার পরিকল্পনা করছে৷
বসনিয়ার লিপা ক্যাম্পে যেমন আছেন অভিবাসীরা
বসনিয়ার লিপায় নতুন অভিবাসী কেন্দ্র চালু হয়েছে গত নভেম্বরে৷ সেখানে নানা দেশের অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশিরাও৷ বসনিয়ার লিপা ক্যাম্প ঘুরে জানাচ্ছেন ডয়চে ভেলে বাংলার প্রতিবেদকেরা। এক্সক্লুসিভ ছবি দেখুন ছবিঘরে..
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
আগুন আর মানবেতর জীবনধারণ
২০২০ সালে ডিসেম্বরে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল বসনিয়ার লিপা অভিবাসী কেন্দ্র৷এরপর একটি অস্থায়ী শিবির তৈরি করা হয়, যেখানে ছিল না জীবনধারণের ন্যূনতম ব্যবস্থাও৷ অবশেষে গত নভেম্বরে চালু হয়েছে নতুন ক্যাম্প৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
শীতে বরফে ঢাকা ক্যাম্পের আশপাশ
দূর পাহাড়ের গায়ে ক্যাম্পগুলি দেখা যাচ্ছে৷ এখানেই অভিবাসীরা রয়েছেন৷ মূল সড়ক থেকে দুই তিন দূরে অবস্থিত এই কেন্দ্রটি৷ শীতের সময় প্রায়ই বরফে ঢাকা থাকে৷ তবে ক্যাম্পের অভিবাসীদের জন্য গরম পোশাক এবং হিটার ইত্যাদির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
‘অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক’দের বিশেষ ব্যবস্থা
লিপা মাইগ্রান্ট ক্যাম্পে ‘অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক’ দের জন্য আলাদা জোন রয়েছে৷ সেখানে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ-সহ বিভিন্ন সংস্থা শিশুদের জন্য বই খেলাধূলার সামগ্রী থেকে নানা সরঞ্জাম সরবরাহ করে৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
গেম শপ
লিপা ক্যাম্পের বাইরে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু দোকান৷ সেখানে গেমে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিক্রি করা হয়৷ অনিয়মিত পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার চেষ্টাকে গেম নামে অভিহিত করে থাকেন অভিবাসীরা৷ এই গেম শপ চালান স্থানীয় বাসিন্দারা৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
লিপা ক্যাম্পে বাংলায় সাইনবোর্ড
লিপা ক্যাম্পের এই জোনে ক্যাম্পে আসা নতুন অভিবাসীদের আলাদা করে রাখা হয়৷ করোনা-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাদের পাঠানো হয় ক্যাম্পের অন্য জোনে৷ বিভিন্ন ভাষাভাষীর বোঝার সুবিধার জন্য একাধিক ভাষায় লেখা রয়েছে সাইনবোর্ড৷ এর মধ্যে রয়েছে বাংলা ভাষাও৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
লিপা ক্যাম্পে সেলুন
পাকিস্তান থেকে আসা এক অভিবাসী নিজের উদ্যোগে ক্যাম্পে তার ঘরের বাইরে চুল, দাড়ি কাটার সেলুন খুলেছেন৷ ক্যাম্পে আনুষ্ঠানিক সেলুন থাকলেও অভিবাসীদের অনেকেই তার কাছে আসেন৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
ক্যাম্পে অভিবাসনপ্রত্যাশী
বসনিয়ার লিপা ক্যাম্পে ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান-সহ বিভিন্ন দেশের প্রায় তিনশ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী রয়েছেন৷
ছবি: Anupam Deb Kanunjna/DW
ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা
লিপা ক্যাম্প পরিচালনা করে বসনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ অভিবাসীদের ব্যবস্থাপনার জন্য আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম ) সহায়তা করে৷ ক্যাম্পটি জার্মানি-সহ ইউরোপের চারটি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে তৈরি করা হয়েছে৷