যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনা তাকেও কষ্ট দিয়েছে৷ ঘটনার অগ্রগতির দিকে কৌতুহল নিয়েই চোখ রাখছেন জেরম বোয়াটেং৷ ডয়চে ভেলের জোনাথন হার্ডিংকে দেয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্র ও সারা বিশ্বের বর্ণবাদ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গ যখন যুক্তরাষ্ট্রে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা, তখন তো পুরো বিষয়টি কেমন লাগছে- এমন একটা প্রশ্ন ওঠেই৷ জার্মান জাতীয় দলের ডিফেন্ডার জানালেন, ‘‘খুব খারাপ লাগছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা কিছু বিষয় ভীষণ নির্মম ছিল৷ তবে যা-ই হোক, জর্জ ফ্লয়েডের ঘটনাটা আমাদের বুঝিয়ে দিলো কালোদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদ যুক্তরাষ্ট্রে কতটা বিস্তৃতি পেয়েছে৷’’
২০০৭ সালে হ্যার্থা বার্লিনের হয়ে বুন্ডেস লিগায় ক্লাব ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করা ঘানাইয়ান বংশোদ্ভুত ফুটবলার আরো জানিয়েছেন ঘটনাটা যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে বলে বেশি খারাপ লাগছে তার, ‘‘আমার বেশি খারাপ লাগছে, কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে আমি প্রায়ই যাই এবং ওই দেশ, ওই দেশের সংস্কৃতিকে অনেক পছন্দ করি৷’’
এমনিতে বর্ণবাদ দেখে তিনি অবাক নন, কারণ, ‘‘বর্ণবাদ নতুন নয়, সব জায়গাতেই তা আছে, যুক্তরাষ্ট্রে তা হয়ত একটু বেশি মাত্রায় আছে৷’’
সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মম হত্যার প্রতিবাদ
বারবার ‘‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’’ বলেও পুলিশি নির্যাতন থামাতে পারেননি জর্জ ফ্লয়েড৷তার মৃত্যুর পর থেকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলছে যুক্তরাষ্ট্রে৷ সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
আমস্টারডাম
জর্জ ফ্রয়েড হত্যার প্রতিবাদে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডামে হাজারো মানুষের সমাবেশ৷ পহেলা জুনের ছবি৷
ছবি: Reuters/E. Plevier
বার্লিন
গত ৩১ মে জার্মানির রাজধানী বার্লিনের ব্রাণ্ডেনবুর্গ গেটের সামনেও হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ তরুণ জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদ৷ মেগাফোন হাতে স্লোগান দিচ্ছেন এক নারী৷ তার টি-শার্টে লেখা ‘‘আমাদের শ্বাস নিতে দাও৷’’ পুলিশি নির্যাতনের সময় জর্জ ফ্লয়েড বারবার বলছিলেন, ‘‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না৷’’ তার ঘাড়ের ওপর চেপে ধরা পুলিশের হাঁটু তারপরও সরেনি!
ছবি: Reuters/C. Mang
লন্ডন
ব্রিটেনে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের সামনে হাঁটু গেড়ে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন একজন৷
ছবি: Reuters/J. Sibley
প্যারিস
ফ্রান্সের রাজধানীতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে ‘‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ৷
ছবি: Reuters/C. Hartmann
কোপেনহেগেন
ডেনমার্কের রাজধানীতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে শত মানুষের বিক্ষোভ৷ ব্যানারে লেখা, ‘‘কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনও একটা ব্যাপার৷’’
ছবি: Reuters/R. Scanpix
ব্রাসেলস
বেলজিয়ামের রাজধানীতে প্রতিবাদ৷ এক নারীর দুই হাতে উঁচু করে ধরা কাগজে লেখা, ‘‘গতকাল একজন মানুষকে মেরে ফেলেছে পুলিশ৷’’
ছবি: Reuters/F. Lenoir
টরন্টো
বিক্ষোভ মিছিলে একজনের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘প্রিয় কালো মানুষেরা, তোমাদের জানিয়ে রাখতে চাই যে, কান্না ঠিক আছে৷ আরো জানাতে চাই, ভালোবাসি তোমাকে৷ - আরেকজন ভাই৷’’
ছবি: Reuters/C. Osorio
এথেন্স
গ্রিসের রাজধানীতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে কমিউনিস্ট পার্টির বিক্ষোভ সমাবেশ৷
ছবি: Reuters/A. Konstantinidis
বার্লিন
জর্জ ফ্লয়েড হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে একজনের হাতের প্ল্যাকার্ডে যা লেখা তার মর্মার্থ একটাই- সুবিচার ছাড়া শান্তি আসে না৷
ছবি: Reuters/C. Mang
লন্ডন
যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভরতদের একজনের তুলে ধরা প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘শুধু মৃত্যুর পরেই আমি গুরুত্বপূর্ণ? #জর্জ ফ্লয়েড’’
ছবি: Reuters/J. Sibley
প্যাডারবর্ন
৩১ ডিসেম্বর বুন্ডেসলিগায় প্যাডারবর্নের বিপক্ষে গোল করার পর গেঞ্জিতে ‘‘জাস্টিস ফর জর্জ ফ্লয়েড’’ লেখা দেখাচ্ছেন বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডের জেডন সাঞ্চো৷
ছবি: Reuters/L. Baron
বার্সেলোনা
স্পেনের বার্সেলোনা শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে৷ বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক নারীর মাস্কে লেখা, ‘‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না৷’’
ছবি: Reuters/N. Doce
12 ছবি1 | 12
জানতে চাওয়া হয়েছিল জার্মানিতে বর্ণবাদ আছে কিনা৷ জার্মান মা এবং ঘানাইয়ান বাবার ঘরে বার্লিনে জন্ম নেয়া বোয়াটেং বললেন, ‘‘জার্মানিতেও বর্ণবাদ আছে৷ সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বিদেশি এবং বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর হামলা হতে দেখেছি৷ বার্লিনে ছোটবেলায়ও আমি বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছি৷ তবে ফুটবল মাঠের বিপরীত অভিজ্ঞতার কথাও বলতে হবে, সেখানে কে কোন জায়গা থেকে এসেছে, কে কোন ধর্মের - এসব কোনো বিষয় না৷ আমাদের কেউ ইরানি, কেউ আফ্রিকান, কেউ তুর্কি, কেউ জার্মান৷ কিন্তু তা নিয়ে আমরা কখনো ভাবিনি, বা কথা বলিনি৷’’
৩২ বছর বয়সি বোয়াটেং মনে করেন, মানুষের মনন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শৈশবের শিক্ষাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, ‘‘শৈশবের লেখাপড়ার সময় থেকেই বিষয়টা শুরু হয়৷ ওই সময়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ কোনো শিশুই বর্ণবাদী হয়ে জন্মায় না৷ বাবা-মায়েরা সন্তানদের কী বলেন তার ওপরই ব্যাপারটা নির্ভর করে৷’’