1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভিনব ফটো সাফারি

ফ্রিডেরিকে ম্যুলার/এমএ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩

সৌখিন আলোকচিত্র শিল্পীরা বন্ধ হয়ে যাওয়া হাসপাতাল, পরিত্যক্ত সামরিক ভূখণ্ড এবং কলকারখানায় তথাকথিত ‘হারিয়ে যাওয়া অঞ্চল’-এ তাঁদের ছবির মোটিফ খুঁজে বেড়ান৷ তবে তা আইনসম্মত হতে হবে এবং একমাত্র গাইডসহ টুরের মাধ্যমেই তা সম্ভব৷

ছবি: Lars Wendt

‘স্টপ! প্রবেশ নিষেধ! নতুবা বিপাক'৷ শহুর এলাকা এবার্সভাল্ড-এ বেড়া দেয়া একটি প্রায় ধসে পড়া পরিত্যক্ত কারখানার বাইরে ঝুলছে একটি কাঠের সাইনবোর্ড৷ মোটা অক্ষরে এই লেখার পাশেই শোভা পাচ্ছে সযত্নে আঁকা কালো একটি বোমা এবং একজোড়া অন্ধকারাচ্ছন্ন চোখ৷ ভিতর থেকে ভেসে আসছে মৃদু ‘ক্লিক', ‘ক্লিক' শব্দ৷ না, কোনো অস্ত্র নয়, ক্যামেরায় ছবি তোলার শব্দ৷ টুর গাইড থিলো ভিবারসের নেতৃত্বে অপেশাদার আলোকচিত্র শিল্পীর একটি দল এই জরাজীর্ণ কারখানার বিভিন্ন দিক শৈল্পিকভাবে নথিভুক্ত করছেন তাঁদের ক্যামেরায়৷ কিন্তু এতে বিপদের ঝুঁকি রয়েছে প্রচুর, রয়েছে নিরাপত্তার অভাব, এমনকি এমন নির্জন অঞ্চলে ছবি তোলার সময় আক্রমণেরও শিকার হয়েছেন কেউ কেউ৷

সৌখিন আলোকচিত্র শিল্পীরা পরিত্যক্ত ভবনে তাঁদের ছবির মোটিফ খুঁজে বেড়ানছবি: Lars Wendt

বার্লিনের একটি প্রতিষ্ঠান ‘গো টু নো' এ ধরনের নিরাপদ দলগত টুরের ব্যবস্থা করে নির্ধারিত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে৷ সরকারি অনুমোদন-পত্রও থাকে সেই সাথে৷ এই প্রতিষ্ঠানের টুর গাইড ভিবারস, সাতজন মহিলা ও ১৩ জন পুরুষের একটি দলকে নিয়ে এসেছেন ১০০ বছরের পুরোনো একটি পেপার মিলে৷ ১৯৯৪ সালে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায় এই মিল৷ তারপর থেকেই এখানে সাধারণের প্রবেশ নিষেধ৷ এই দলে রয়েছেন জার্মানির বিভিন্ন শহর থেকে আগত সৌখিন ফটোগ্রাফাররা৷ সেই সাথে আরো কয়েকজন এসেছেন নেদারল্যান্ডস ও গ্রিস থেকে৷ ক্যামেরা, ট্রাইপড আর টর্চলাইটে সজ্জিত তাঁরা৷

ছবি: Lars Wendt

এই ভবনের সেলার থেকেই শুরু হয় তাঁদের পরিদর্শন৷ স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার পরিবেশ৷ নীচ থেকে ভেসে আসছে একটি ছোট্ট নদীর স্রোতধ্বনি৷ এই স্রোতই এককালে ঘুরিয়েছে বড় বড় মিল৷ উপরে বিরাট হল-রুমের প্রায়ই পুরোটাই ভেঙে পড়েছে৷ জানালার ভাঙা কাঁচ ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে এখান সেখানে৷উপরে ভাঙা ছাদ৷ তার ভিতর দিয়ে পানি ঢুকে মেঝেতে সৃষ্টি হয়েছে শেওলাযুক্ত একটি ছোট্ট হ্রদ৷ এই হ্রদের কিছুটা উপরে ছাদ থেকে ঝুলে রয়েছে একটি লম্বা কাঠ৷ তাতে এখনো যুক্ত আছে একটি অক্ষত বাল্ব৷ এতদিনেও বাল্বটি ভেঙে যায়নি৷ দেখলে মনে হয় ‘সুইচ' টিপলেই বুঝি আলো জ্বলে উঠবে৷ ক্লিক, ক্লিক৷ এ দৃশ্য ছবির একটা দারুণ মোটিফ তো বটেই! চারদিক ঘুরে দেখলে বোঝা যায় যে এখানে অনুমোদন ছাড়া অনেকেরই পদধূলি পড়েছে৷ বিশেষ করে বিগত কয়েক বছরে ছাপ রেখে গেছেন বহু শিল্পী৷ দেয়ালে গ্র্যাফিটি৷ তাতে বিভিন্ন নামের সারি, দেয়াল-চিত্র আর রুম ইনস্টলেশনের অংশবিশেষ দেখা যাচ্ছে৷

ছবি: Lars Wendt

সৌখিন ফটোগ্রাফাররা বিগত কয়েক বছর যাবৎ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এরকম পরিত্যক্ত বা সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ এলাকায় গিয়ে নান্দনিকভাবে ‘মোরবিড মোটিফ' আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন৷ এ ধরণের আলোকচিত্র শিল্পকে বলা হয় ‘আর্বান এক্সপ্লোরিং'৷ তাদের সূবর্ণ মটো: ‘ছবি তোলো, পেছনে রেখে যাও শুধু পদচিহ্ন'৷ এ সমস্ত ‘হারিয়ে যাওয়া অঞ্চল'-এর ছবি তাঁরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে একে অপরের সাথে আদান-প্রদান করেন৷ এমনকি নিজেদের মধ্যে ছবির প্রতিযোগিতাও হয়৷

তবে এই সব পরিত্যক্ত এলাকার আশেপাশের প্রতিবেশীরা এই ‘নিষিদ্ধ' এলাকায় আগন্তুকের আনাগোনা খুব একটা ভালো চোখে দেখেন না৷ তাছাড়া মালিকের অনুমতি ছাড়া প্রবেশ মানেই যে অনধিকার প্রবেশ! এই পেপার মিলের প্রতিবেশীরাও তাই এ ব্যাপারে সজাগ৷ প্রতিবাদ জানালে টুর গাইড থিলো ভিবারস তাঁদের জানান, এই দলের প্রবেশের অনুমতি-পত্র রয়েছে৷ তারপর আর কী? একথা শুনে শান্ত মনেই ফিরে যান প্রতিবেশীরা৷ আর চলতে থাকে ছবি তোলা – ক্লিক, ক্লিক৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ