1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে অশনি সংকেত

৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

জার্মানির সবচেয়ে জনবিরল রাজ্য৷ অথচ সেই রাজ্যের সরকার নির্বাচন আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ প্রশ্ন উঠছে, ইউরোপের অন্য অনেক দেশের মতো জার্মানির মানুষও কি চরম দক্ষিণপন্থি শিবিরের দিকে ঝুঁকে পড়ছে?

ছবি: picture-alliance/dpa/K.-D. Gabbert

জার্মানির উত্তর-পূর্বের রাজ্য মেকলেনবুর্গ ফোয়রপমার্ন৷ যে দুই বড় দলের মহাজোট সরকার জার্মানি শাসন করছে, সেই সামাজিক গণতন্ত্রী ও খ্রীষ্টান গণতন্ত্রীরাই সেই রাজ্যে ক্ষমতার শীর্ষে ছিল৷ মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত জনপ্রিয়৷ গত কয়েক বছরে অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ইত্যাদির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে৷ মানুষ তাতে বেশ সন্তুষ্ট৷ অথচ রবিবার রাজ্য সরকার বাছাইয়ের সময় ভোটারদের একটা বড় অংশ তাঁদের ক্ষোভ উগরে দিলেন৷ সেই ক্ষোভের বলি হলো সরকার-বিরোধী মিলিয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দল৷ তারা সবাই উল্লেখযোগ্য মাত্রায় সমর্থন হারিয়েছে৷ ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান শরিক এসপিডি সবচেয়ে বেশি ভোট পেলেও অন্য শরিক সিডিইউ দল তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে দুর্বল হয়ে পড়েছে৷ বিরোধী শিবিরও ছারখার৷ উদারপন্থি ও সবুজ দল সংসদে প্রবেশ করতে পারেনি৷ চরম দক্ষিণপন্থি এনপিডি দলও পারেনি৷ এমনকি বামপন্থি দলও বিপুল সমর্থন হারিয়েছে৷

এমন ঘটনা গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ঘটতেই পারে৷ কিন্তু মূল স্রোতের সব দলের ভরাডুবি ঘটিয়ে যে দল দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে, তার নাম এএফডি – অর্থাৎ ‘জার্মানির জন্য বিকল্প'৷ রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি মানুষের প্রতিবাদের ফায়দা তুলতে সক্ষম হয়েছে নতুন এই দলটি৷ কাগজে-কলমে চরম দক্ষিণপন্থি না হলেও কথাবার্তা ও কাজেকর্মে তারা বিদেশি ও ইসলাম বিদ্বেষের নানা দৃষ্টান্ত দেখিয়ে আসছে৷

এই ক্ষোভের লক্ষ্য বার্লিন৷ আরও স্পষ্টভাবে বলতে গেলে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের শরণার্থী নীতি৷ নির্বাচনের দিনটিও কম প্রতীকী ছিল না৷ ঠিক এক বছর আগে ম্যার্কেল শরণার্থীদের জন্য উদার নীতি ঘোষণা করেছিলেন৷ বলেছিলেন, ‘ভিয়ার শাফেন ডাস৷' অর্থাৎ আমরা অবশ্যই সামলাতে পারবো৷ প্রথম ধাক্কায় বিশাল সংখ্যক শরণার্থী জার্মানিতে প্রবেশ করলেও নানা পদক্ষেপ ও কড়া আইনের মাধ্যমে জার্মানির দ্বার পেরোনো আর সহজ নয়৷

তা সত্ত্বেও জনমানসে ম্যার্কেলের উদার নীতি আতঙ্কের কারণ রয়ে গেছে৷ এতটাই যে অতি নগণ্য সংখ্যক শরণার্থী এবং গোটা দেশে সবচেয়ে কম অনুপাতে বিদেশি বা বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষ থাকা সত্ত্বেও মেকলেনবুর্গ ফোয়রপমার্ন-এর ভোটাররা বোরখার উপর নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয় নিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন৷ অথচ সেই রাজ্যে কাউকে বোরখা পরতে দেখা যায়নি৷

তাহলে কি রবিবার এএফডি-র সাফল্য বিচ্ছিন্ন ঘটনা? তেমনটা বলা যাচ্ছে না৷ কারণ, এই নিয়ে পর পর ৯টি রাজ্যে ভালো ফল করে বিরোধী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এএফডি, অর্থাৎ ‘জার্মানির জন্য বিকল্প' দল৷

তা ছাড়া শুধু প্রান্তিক দক্ষিণপন্থি মানুষ নয় – মূল স্রোতের সব দলের ভোটার টানতে সক্ষম হচ্ছে এই দলটি৷ এমনকি দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ক্রমাগত কোন্দলের ফলে সংগঠনে অরাজকতা সত্ত্বেও সমর্থন হারাচ্ছে না তারা৷

জার্মানিতে সংসদ নির্বাচনের মাত্র এক বছর বাকি৷ জনমত সমীক্ষায় চ্যান্সেলর ম্যার্কেল সমর্থন হারাচ্ছেন৷ অন্য অনেক ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য ঢেকে দিচ্ছে শরণার্থী ও বিদেশি বিষয়ক নীতি৷ নিজের দলের একাংশ এবং বাভেরিয়ায় তাঁর সহযোগী সিএসইউ দলও তাঁর শরণার্থী নীতির সমালোচনা করে চলেছে৷ ঘরে-বাইরে এই বিপুল ক্ষোভের ধাক্কা সামলানো আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ