1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে অসহায় মূল ধারার রাজনীতি ও সংবাদ মাধ্যম

Bildgalerie Bengali-Redaktion Sanjiv Burman
সঞ্জীব বর্মন
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রাজনৈতিক দল ও সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে ‘স্বাস্থ্যকর' দূরত্ব সত্ত্বেও সোশাল মিডিয়ার যুগে জার্মানি সংকটের মুখে পড়েছে৷ মানুষের নিরাপত্তাহীনতার ফায়দা তুলছে চরম দক্ষিণপন্থি শক্তি৷ সংবাদ মাধ্যমের প্রতি আস্থাও কমছে৷

ছবি: Matthias Röder/dpa/picture alliance

জার্মানিতে রোববার সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলে৷ বাংলাদেশ বা ভারতের সঙ্গে সেই দিনের পরিবেশের কোনো তুলনাই চলে না৷ চারিদিকে রাজনৈতিক দল তথা প্রার্থীদের কিছু হোর্ডিং বা পোস্টার ছাড়া বাইরে থেকে আসা কোনো মানুষের পক্ষে বোঝাই দায়, যে সে দিন দেশের আগামী সরকার গড়ার ভিত্তি স্থাপন করা হচ্ছে৷ নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে সরকার গড়া পর্যন্ত সময়ও রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থী ও নেতাদের কার্যকলাপ অনেকের কাছে ম্রিয়মান লাগতে পারে৷ টিকে থাকার তাগিদ থাকলেও ক্ষমতাসীন সরকার কার্যত কোনো বাড়তি সুবিধাই পায় না৷

হিটলারের নাৎসি জমানার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফেডারেল জার্মানির রাজনৈতিক কাঠামো ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণের পাঠ্যবই হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, এমনটা বলা অত্যুক্তি হবে না৷ কনরাড আডেনাউয়ার, ভিলি ব্রান্ট, হেলমুট কোল বা আঙ্গেলা ম্যার্কেল চ্যান্সেলর হিসেবে দেশে-বিদেশে যথেষ্ট খ্যাতি ও প্রভাব রাখলেও তাঁদের হাতে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার কোনো অবলম্বন ছিল না৷ প্রায় একটানা জোট সরকারের প্রয়োজনীয়তাও কোনো দলের হাতে ক্ষমতা অপব্যবহারের বিশেষ সুযোগ তুলে দেয় নি৷

এমন পরিবেশে জার্মানির সংবাদ মাধ্যমও দলীয় রাজনীতির চাপ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে মোটামুটি সক্ষম হয়েছে৷ এমনকি রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে চালিত ‘পাবলিক মিডিয়া' হিসেবে পরিচিত রেডিও ও টেলিভিশন কেন্দ্রগুলিরও রক্ষাকবচ রয়েছে৷ জোট সরকারের শরিক দলের নেতাদের ‘মাউথপিস' হয়ে ওঠে নি এআরডি, ডেডডিএফ বা ডয়চে ভেলের মতো সংবাদ মাধ্যম৷ বেসরকারি সংবাদপত্র, পত্রিকা বা টেলিভিশন চ্যানেলগুলির মধ্যে কয়েকটি রক্ষণশীল, বামপন্থি, উদারপন্থি বা পপুলিস্ট ভাবধারার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হলেও তাদের সেই চরিত্র পাঠক বা দর্শকদের কাছে অজানা নয়৷ ফলে নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও চ্যান্সেলরসহ মন্ত্রিদের তুলোধোনা করতে কেউই পিছপা হয় না৷ বিরোধী নেতারাও সমালোচনার সম্মুখীন হন৷ শীর্ষ নেতাদেরও সেই চাপ মেনে আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়৷

সঞ্জীব বর্মন, ডয়চে ভেলেছবি: Philipp Böll/DW

সোশাল মিডিয়ার রমরমা অবশ্য বর্তমানে জার্মানির এই ঈর্ষণীয় কাঠামোর ভিত্তি নাড়িয়ে দিচ্ছে৷ করোনা মহামারি থেকে শুরু করে শরণার্থী সংকট অনেক মানুষের কাছে মূল স্রোতের ‘দায়িত্বশীল' সংবাদ মাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে৷ ‘ফেক নিউজ' ও ‘কনস্পিরাসি থিওরি' আঁকড়ে ধরে তারা প্রতিষ্ঠিত সংবাদ মাধ্যমকে আর বিশ্বাস করছে না৷ এমন মানুষের মনে নিরাপত্তাহীনতার অভাবের ফায়দা তুলতে এগিয়ে আসছে চরম দক্ষিণপন্থি শিবির৷ জনমত সমীক্ষায় এএফডি দল জাতীয় স্তরে দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হয়ে উঠেছে৷ জার্মানির পূবের অনেক রাজ্যে এই দল এমনকি সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠার পথে এগোচ্ছে৷ যুক্তি, তর্ক, তথ্য-পরিসংখ্যানের বদলে অনেক মানুষ অন্ধ বিশ্বাস, বদ্ধমূল ধারণা, বুকে জমে থাকা ক্রোধ ও ভিত্তিহীন সংশয়কে আঁকড়ে ধরছেন৷

বিশ্বের অনেক প্রান্তের মতো জার্মানিও গণতান্ত্রিক সমাজের ‘শিক্ষিত' মানুষের বোধবুদ্ধির এমন সংকটের মুখে রয়েছে৷ সব জেনেশুনেও সে সব দেশের ভোটারদের একটা বড় অংশ প্রতিবাদী, চরমপন্থি, বিভাজনমূলক, জনমোহিনী রাজনৈতিক শক্তির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছেন৷ এর পরিণতি সম্পর্কে সংশয় থাকার কথা নয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ