1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশুখাদ্য

৩০ জুন ২০১২

জার্মানিতে ইদানিং শিশুদের খাদ্যদ্রব্যে অনেক বেশি পরিমাণে তৈলাক্ত পদার্থ, লবণ ও চিনি লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ শিশু চিকিত্সক ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণকারী সংগঠনগুলি এই বিষয়টি নিয়ে বেশ সোচ্চার৷

Teenager-Mädchen auf dem Sofa © runzelkorn #21153202 10-20; 10s; abhängen; ausruhen; bewegungsmangel; blond; bücher; bücherregal; chillen; chips; cola; couch; entspannt; fastfood; faul; fernsehen; fernseher; frau; freizeit; freizeitkleidung; gammeln; getränk; jugendlich; jugendliche; jugendzimmer; jung; kartoffelchips; langeweile; langhaarig; liegen; lümmeln; mädchen; schülerin; sofa; soft-drink; studentin; teenager; teeny; trinken; tv; ungesund; unordnung; weiblich; wohnzimmer
Symbolbild Couchpotato Teenager Fernsehen ungesundছবি: Fotolia/runzelkorn

ইউরোকাপ উপলক্ষ্যে খাদ্যপ্রস্তুতকারীরা মুনাফা পাওয়ার লোভে শিশুদের আকৃষ্ট করে নানা রকম খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করছেন৷ চিকিত্সক ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণকারীদের এই সমালোচনার সাথে সুর মিলিয়েছেন সবুজ দলের রাজনীতিকরাও৷ তাঁরা মনে করেন এই সব ব্যবসায়ী দায়িত্ববোধের পরিচয় না দিয়ে বাচ্চাদের অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকৃষ্ট করছেন৷ পটসডাম শহরের শিশু ক্লিনিকের প্রধান চিকিত্সক মিশাইল রাডকে ইউরোকাপ উপলক্ষে যে সব খাদ্যদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে, তার কিছু নমুনা পরীক্ষা করাতে দেন৷ ফলাফল রীতিমত উদ্বেগজনক৷ দেখা গেছে, এসব ভোজ্যপণ্যের তিন ভাগের এক ভাগই মিষ্টি জাতীয় খাবার ও পানীয় এবং নানা ধরনের স্ন্যাকস৷ ১০ শতাংশ অ্যালকোহল জাতীয় পানীয়৷ পরীক্ষিত খাদ্যদ্রব্যের অর্ধেকই প্রচুর ক্যালোরি সমৃদ্ধ৷ প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ৫০০ ক্যালোরি৷ ইউরোকাপের নানা ধরনের ছবি, স্টিকার ইত্যাদিসহ শিশুদের জন্য মুখরোচক খাবারের প্যাকেটগুলি তৈরি হচ্ছে৷


ব্যবহৃত উপাদানগুলি স্পষ্ট নয়

শিশু চিকিত্সক মিশাইল রাডকে এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাচ্চাদের মিষ্টি জাতীয় খাদ্যদ্রব্যে কী কী পদার্থ রয়েছে তা স্পষ্টভাবে লেখা থাকে না৷ নাতি নাতনিদের জন্য কিছু কিনতে গেলে দাদা দাদিদের বিশাল অনুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এসব লেখা উদ্ধার করা সম্ভব হয় না৷ আর যদি কোনো রকমে তা পড়াও যায়, এসবের অর্থ বোঝা সহজ নয়৷''

ফাস্টফুড কালচার এখন জার্মানির সব জায়গাতেছবি: picture-alliance/dpa

ফুডওয়াচ প্রতিষ্ঠানটি এই বছরের গোড়ার দিকে ১,৫০০ শিশুখাদ্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে৷ ফলাফলে জানা গেছে, প্রায় চার ভাগের তিন ভাগ পণ্যই মিষ্টি জাতীয় পদার্থ ও তৈলাক্ত স্ন্যাকস৷ জার্মানির খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এই সব খাবার অত্যন্ত সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত৷ আসল কথা হল, কারখানা থেকে যে সব শিশুখাদ্য বের হয়ে আসছে, তা থেকে সুষম খাদ্য পাওয়া সম্ভব নয়৷

খাদ্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফুডওয়াচের মতে, ‘‘অস্বাস্থ্যকর ভোজ্যপণ্যের এই রকম ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারণা করার মূল কারণ হল আর্থিক মুনাফা৷ ফলমূল ও শাকসবজির মাধ্যমে ব্যবসায় লাভের পরিমাণ কম হয়৷ কোমল পানীয় ও জাঙ্কফুডের মাধ্যমে লাভ হয় অনেক বেশি৷ অন্য কথায় ফলমূল ও শাকসবজিতে যেখানে ৫ শতাংশেরও কম লাভ হয়, সেখানে জাঙ্কফুড বিক্রি করে হয় ১৫ শতাংশেরও বেশি লাভ৷''


স্বাস্থ্যের জন্য সংকেত

ডা. রাডকে এক্ষেত্রে এক ধরনের ‘স্বাস্থ্য-সংকেতের' ওপর জোর দেন৷ এই দাবি করে আসছেন ভোক্তা অধিকার রক্ষাকারীরা বহুদিন ধরেই৷ অর্থাৎ সবুজ বাতি ভাল, লাল বাতি মন্দ৷ তার মানে কম পরিমাণে তেল ও লবণ খাওয়া উচিত৷ সবাই জানে, অতিরিক্ত লবণাক্ত খাবার খাওয়া বাচ্চাদের জন্য ভাল নয়৷ সেজন্য আলুর চিপসকে দেয়া হবে লাল সিগন্যাল৷ এই ধরনের সহজ নিয়মকানুনগুলির বাস্তবায়ন এখনও সম্ভব হচ্ছে না৷

ডা. রাডকে জানান, চিনি, লবণ ও তেল বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয় হলেও নির্ভর করে পরিমাণের ওপর৷ এক্ষেত্রে ভোক্তাদের প্রায়ই ভুল পথে চালানো হচ্ছে৷

ইউরোকাপের সময় বাড়াবাড়িটা আরো চোখে পড়ে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘যেমন দেখা যায় খ্যাতিমান এক ফুটবল খেলোয়াড় নাস্তার জন্য কোনো এক কোম্পানির কর্নফ্লেক্সের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন৷ প্যাকেটের ওপর লেখাগুলি ভাল করে পড়লে বোঝা যাবে এই কর্নফ্ল্যাক্সে চিনির পরিমাণ কম নয়৷ স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশের বদলে মুখরোচক মিষ্টান্নই বলা যায় এই কর্নফ্লেক্সকে৷''

ভোজ্যপণ্য প্রস্তুতকারীরা অল্পবয়সীদের আকৃষ্ট করার জন্য তাদের আইডলকে এই ভাবেই বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেন৷ আর্থিক দিয়ে দিয়ে এটা বোধগম্য হলেও নৈতিক দিয়ে তা দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক৷ জার্মানদের অর্ধেকেরও বেশি স্থূলতাজনিত সমস্যায় ভুগছেন৷ এর ফলে দেখা দিচ্ছে ডায়বেটিস, হার্টের অসুখ ইত্যাদি৷ ডা. রাডকের মতে, ‘‘সাধারণত খেলোয়াড়দের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী বলে মনে করা হয়৷ তরুণদের আদর্শও তাঁরা৷ এই সব ব্যক্তিই যখন ছোটদের জন্য অস্বাস্থ্যকর খাবারের বিজ্ঞাপনে এগিয়ে আসেন, তখন জনগণের স্বাস্থ্যের হানিটা হয় আরো বেশি৷''

নির্দিষ্ট আইন কানুন নেই

চিনি ও ফ্যাটের পরিমাণ খাদ্যদ্রব্যে কতটা থাকবে, সে সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট আইন কানুন নেই৷ এক্ষেত্রে নাগরিকদের নিজেদেরই দায়িত্ব নিতে হবে৷ খাদ্য উত্পাদন প্রতিষ্ঠানগুলির উচিত হবে, ভোজ্যপণ্যে কী কী পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা৷ এছাড়া লক্ষ্য রাখতে হবে, এসব যেন সাধারণ মানুষও বুঝতে পারে৷ সুপার মার্কেটগুলিও এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে৷ ডা. রাডকে বলেন, ‘‘যতদিন পর্যন্ত রঙ বেরঙের নানা ধরনের চকলেটের বারগুলি ছোটদের হাতের নাগালে ক্যাশের সামনে থরে থরে সাজানো থাকবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের সমস্যা দূর হবে না৷''


প্রতিবেদন: গুন্টার বির্কেনস্টক / আরবি

সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ