ধর্মীয় কারণে নারীর গর্ভপাত করতে অস্বীকার করেছেন জার্মানির একটি হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক৷ তাঁর এই অস্বীকৃতি এক পুরনো বিতর্ককে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে: গর্ভপাত কি অবৈধ?
বিজ্ঞাপন
থমাস ব্যর্নার একজন ধর্মপ্রাণ খ্রিষ্টান এবং ২৬ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন গাইনোকোলোজিস্ট৷ ২০১০ সাল থেকে তিনি জার্মানির ডানেনব্যার্গের কোপিও এলবে-ইটজেল ক্লিনিকে কাজ করছেন, যেখানে শুধু ২০১৬ সালেই ৩১ নারীর গর্ভপাত করা হয়েছে৷
তবে সেসব গর্ভপাতের কোনোটিই ব্যর্নার করেননি৷ বরং গত বছরের ডিসেম্বরে যখন তাঁকে প্রধান চিকিৎসক হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হয়, তখন তিনি পুরো হাসপাতালেই গর্ভপাত নিষিদ্ধ করেন৷ তিনি মনে করেন, ধর্মে আছে যে, যে কোনো পরিস্থিতিতে একটি জীবনকে রক্ষা করতে হবে৷ তাই ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে তিনি একক সিদ্ধান্তে হাসপাতালটিতে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করেছেন৷ জার্মানিতে একজন চিকিৎসকের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় এমন সিদ্ধান্ত এটাই প্রথম৷
গর্ভপাত৷ অনাকাঙ্খিত সন্তান না নিতে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই চলছে ভ্রুণ হত্যা৷ আর্জেন্টিনায় গর্ভপাত নিষিদ্ধ৷ তারপরও গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন, অনেকে আর কোনোদিন মা হতে পারছেন না৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
স্বাধীনতা...
‘শরীরটা আমার নিজের’ – আর্জেন্টিনার মেয়েরা এখনো স্বাধীনভাবে এ কথা ভাবতে পারেন না৷ গর্ভপাত সেখানে নিষিদ্ধ৷ তা সত্ত্বেও গর্ভপাত চলছে৷ ২৭ বছর বয়সি ক্যামিলাও গর্ভপাত ঘটিয়েছেন, তারপর নিজের ঘাড়ে এঁকেছেন উল্কি, সেখানে লেখা, ‘স্বাধীনতা’৷ তাঁর এ ছবি ‘১১ সপ্তাহ, ২৩ ঘণ্টা, ৫৯ মিনিট – আর্জেন্টিনায় অবৈধ গর্ভপাত’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে দেখানো হচ্ছে৷
ছবি: Goméz Verdi, Franz, Meurice
নববর্ষের প্রাক্কালে...
এ ছবিতে মারা নামের একটি মেয়ের জীবনের গল্প বলার চেষ্টা করা হয়েছে৷ ২১ বছর বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে মারাকে তাঁর বয়ফ্রেন্ডের পরিবার, ‘গর্ভপাত ঘটালে আমরা অভিযোগ দায়ের করবো’ – বলে শাসিয়েছিল৷ হুমকি দিলেও ছেলেবন্ধুর সটকে পড়া কিন্তু তাঁরা ঠেকাননি৷ সঙ্গী চলে যাওয়ার ১২ সপ্তাহ পর বাধ্য হয়ে মারা ব্যাপারটি খুলে বলেন মাকে৷ তারপর ২০০২ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটিয়ে আবার নতুন জীবন শুরু করেন মারা৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
পুরুষেরও ভোগান্তি
গর্ভপাত অনেক সময় পুরুষদেরও বিপদে ফেলে৷ ফোটোগ্রাফার লিসা ফ্রানৎস, গুয়াদালুপে গোমেজ এবং লেয়া মরিসের কাজগুলো তেমন গল্পগুলোই তুলে ধরছে৷ পেদ্রো নামের এই তরুণ গর্ভপাতের ব্যাপারে তাঁর গার্লফ্রেন্ডকে শুধু সমর্থনই করেননি, তাঁকে ক্লিনিকেও নিয়ে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু গর্ভপাত ঘটানোর পর বিষয়টি নিয়ে তিনি বন্ধুদের সঙ্গে কথাও বলতে পারেননি৷ সবার আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল, পেদ্রো যেন খুব বড় কোনো অপরাধ করে ফেলেছেন!
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
বাড়িতেই গর্ভপাত
অন্তঃসত্ত্বার পেটে ঘুষি মেরে ভ্রুণ হত্যা, তারপর কাপড়ের হ্যাঙার আর কাপড় সেলাই করার সুঁচ ব্যবহার করে ‘জঞ্জাল’ সাফ করে দেওায়া – আর্জেন্টিনার অনেক অঞ্চলে এভাবেই ঘরে ঘরে হয় গর্ভপাত৷ কোনো ডাক্তার বা নার্স নয়, ঘরের মেয়েরাই এভাবে কাজ সারেন৷ ফলে অকালে ঝরে যায় অনেক নারীর প্রাণ৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
বছরে অন্তত একশ জন...
গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে আর্জেন্টিনায় প্রতিবছর ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজারের মতো নারী জটিল সমস্যায় পড়ে হাসপাতালে ভর্তি হন৷ তাঁদের মধ্যে কমপক্ষে একশ জন সন্তানের আগমন রুখতে গিয়ে নিজেদেরই মৃত্যু ডেকে আনেন৷ আর্জেন্টিনার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করে, বিশেষত দরিদ্র অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে নিজেদের জীবনও বিপন্ন করছেন মেয়েরা৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
১৫০০ ইউরোয় মুশকিল আসান
গর্ভপাত আইনত দণ্ডনীয় হলেও আর্জেন্টিনায় টাকা দিলে এ কাজ সহজেই হয়৷ টাকাটা অবশ্য বেশিই লাগে, কোনো কোনো ডাক্তার এ জন্য ১০ হাজার পেসো বা ১৫০০ ইউরোও নিয়ে থাকেন গর্ভপাত ঘটাতে ইচ্ছুক নারীদের কাছ থেকে৷ জার্মান কারদোসো একজন সার্জন৷ তবে আর্জেন্টাইন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য হয়েও তিনি লড়ছেন গর্ভপাতের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার দাবির পক্ষে৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
নারীর পাশে নারী
‘ডিম্বাশয় থেকে তোমার গোলাপরেণু সরিয়ে নাও’ – এভাবেই গর্ভপাতকে আইনসিদ্ধ করানোর আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার আর্জেন্টিনার নারী অধিকার সংগঠন ‘লা রেভুয়েলতা’৷ ক্যাথলিক খ্রিষ্টান প্রধান দেশ আর্জেন্টিনায় বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন এ দাবির পক্ষে৷ ‘লা রেভুয়েলতা’ শুধু দাবি আদায়ে সোচ্চার নয়, গর্ভপাতে ইচ্ছুক নারীদের উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে গর্ভপাতে সহায়তাও করে তারা৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
দিকনির্দেশনার অভাব
এলুনের বয়স এখন ২১৷ ‘লা রেভুয়েলতা’-র সহায়তায় তিনি গর্ভপাত ঘটিয়েছেন৷ ‘কখন মা হবো, এ সিদ্ধান্ত আমিই নেবো’ – এলুনে এমন কথা বলেছেন ঠিকই, তবে এতদিনে তিনি জেনে গেছেন যে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে গর্ভপাত ঘটানোও তাঁর দেশে খুব একটা নিরাপদ নয়৷ ডাক্তাররা ওষুধ কখন, কিভাবে খেতে হবে তা না বলেই বিক্রি করে দেন৷ ফলে অজ্ঞতার ঝুঁকি থেকেই যায়, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সহায়তা নিতে চেয়েও মৃত্যু এড়াতে পারেন না অনেক নারী৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
জেলখানায় গর্ভপাত
সোনিয়া সানচেজ ছিলেন পতিতা৷ অবৈধভাবে পতিতাবৃত্তির অভিযোগে জেল খেটেছেন অনেকবার৷ কারাবন্দি অবস্থায় গর্ভপাতও ঘটিয়েছেন৷ এক খদ্দের তাঁর মা হতে চাওয়া, না চাওয়ার স্বাধীনতাকেও কিনে নিয়েছিলেন৷ পতিতালয়ের মালিককে বাড়তি টাকা দেয়ায় কনডম ছাড়াই তিনি মিলিত হতেন৷ ফলশ্রুতিতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন সোনিয়া৷ এই তরুণী এখন নেমেছেন গর্ভপাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে৷ ইতিমধ্যে সাফল্যের দেখাও পেয়েছেন৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
আর নীরবতা নয়...
ছবিতে দেখা যাচ্ছে মনিকা নামের এক নারীর শরীরের অনাবৃত একটি অংশ৷ লিসা ফ্রানৎস, গুয়াদালুপে গোমেজ এবং লেয়া মরিসের তোলা ছবি নিয়ে ‘১১ সপ্তাহ, ২৩ ঘণ্টা, ৫৯ মিনিট – আর্জেন্টিনায় অবৈধ গর্ভপাত’ শীর্ষক যে প্রদর্শনী চলছে, সেখানে এ ছবিটিও দেখানো হচ্ছে৷ নিজের এমন একটা ছবি দেখানোর অনুমতি দেয়া মনিকা গর্ভপাতের পক্ষে নিজ বক্তব্য তুলতে গিয়ে শুধু বলেছেন, ‘এটা আমার দেহ’৷
ছবি: Lisa Franz, Guadalupe Gómez Verdi, Léa Meurice
10 ছবি1 | 10
গর্ভপাত নিষিদ্ধে বিতর্কের মুখে পড়া হাসপাতালটি কাপিও গ্রুপের৷ ইউরোপের অন্যতম বড় স্বাস্থ্যসেবাদাতা এই প্রতিষ্ঠানটি শুরুতে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত সমর্থনও করেছে, কেননা, তারা মনে করে, গর্ভপাতে আগ্রহী নারীরা চাইলেই অন্য হাসপাতালে যেতে পারেন৷ কিন্তু চিকিৎসকের এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে গোটা জার্মানিতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে৷
আইনি পরিস্থিতি
জার্মান আইন অনুযায়ী, আঠারো বছরের বেশি বয়সে যে কোনো নারী গর্ভধারণের বারো সপ্তাহের মধ্যে গর্ভপাত ঘটাতে পারেন৷ তবে সেজন্য তাঁকে অবশ্যই গর্ভপাতের আগে একটি কাউন্সেলিংয়ে অংশ নিতে হবে৷ ধর্ষণের শিকার নারীদের ক্ষেত্রে অবশ্য গর্ভপাতের সময় এই শর্ত প্রযোজ্য নয়৷ চিকিৎসকের অনুমতি থাকলে তাঁরা কোনো রকমের কাউন্সেলিং ছাড়াই গর্ভপাত করাতে পারেন৷ তবে আঠারো বছরের কম বয়সি মেয়েদের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত তাঁর পরিবার বা অভিভাবককে নিতে হবে৷ আর বারো সপ্তাহের পরে গর্ভপাত ঘটালে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ এক্ষেত্রে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে৷
জার্মানির সব হাসপাতাল গর্ভপাতের সুযোগ রাখতে বাধ্য নয়৷ তবে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হয় যে কোনো নারী যদি গর্ভপাত ঘটাতে চান, তিনি যেন সেটা করতে পারেন৷
অভিবাসীদের যৌন শিক্ষা দিচ্ছে জার্মানি
যৌন শিক্ষা বিষয়ক এক ওয়েবসাইট নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে জার্মানিতে৷ মূলত অভিবাসীদের জন্য তৈরি এই সাইটটিতে যৌনাঙ্গ থেকে শুরু করে গর্ভধারণ, হস্তমৈথুন, যৌন সুখের মতো বিষয়গুলি চিত্রলিপিতে দেখানো হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Stratenschulte
যৌনতা এক ‘নিষিদ্ধ’ বিষয়
আরবি, তুর্কি, ইংরেজি, জার্মানসহ মোট ১২টি ভাষায় যৌনতা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য এবং চিত্রলিপি প্রকাশ করেছে জার্মান সরকার৷ অভিবাসীদের নারী, পুরুষের দেহ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দিতেই এই উদ্যোগ৷ কেননা, সরকার মনে করছে, তারা এমন অনেক দেশ থেকে এসেছে, যেখানে যৌনতা নিষিদ্ধ এক বিষয়৷ চলুন দেখে নেই সাইটটিতে ঠিক কী আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Wuestenhagen
বিভিন্ন যৌন সমস্যার সমাধান
মোট ছয়টি বিভাগে যৌনতা, যৌন মিলন, সম্ভোগের রকমফের, যৌনতা বিষয়ক অধিকারের কথা তুলে ধরা হয়েছে সাইটটিতে৷ তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে ‘সেক্স’ বিভাগটি নিয়ে৷ এতে প্রথমবার সেক্স, কুমারিত্ব, যৌনাসন এবং বিভিন্ন যৌন সমস্যার সমাধান চিত্রলিপির মাধ্যমে ব্যাখা করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/blickwinkel
আকার গুরুত্বপূর্ণ নয়, যৌনাঙ্গচ্ছেদ নিষিদ্ধ
ওয়েবসাইটটির ‘বডি’ অংশে নারী-পুরুষের দেহের ধরন, যৌনাঙ্গ, বীর্য ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হয়েছে৷ পুরুষাঙ্গের আকার বা গড়ন যে যৌন সুখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, তা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এই বিভাগে৷ রয়েছে নারীর যৌনাঙ্গচ্ছেদ যে ইউরোপে পুরোপুরি নিষিদ্ধ, সেই কথাও৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গর্ভধারণ ও যৌন মিলন
সন্তান জন্মদানের পুরো প্রক্রিয়া এই বিভাগে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে৷ সাথে গর্ভধারণের পর কতদিন এবং কিভাবে যৌন সম্পর্ক অব্যাহত রাখা যায়, তা-ও জানানো হয়েছে৷ বলা হয়েছে, কেউ যদি ভুল করে গর্ভধারণ করেন, তাহলে চাইলে গর্ভপাত না করে বাচ্চাটি জন্মের পর দত্তক দেয়া যেতে পারে৷ তবে গর্ভপাতে কোনো বাধা নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Stratenschulte
কনডম যেভাবে পরবেন
কখনো জানতে চেয়েছেন কনডম কী? ওয়েবসাইটটির এই বিভাগে কনডম ব্যবহারের উপায় চিত্রলিপিতে পরিষ্কারভাবে দেখানো হয়েছে৷ পাশাপাশি অনিরাপদ যৌন জীবনের ফলে নারী ও পুরুষের কী কী রোগ হতে পারে এবং কী করলে তা থেকে মুক্তি সম্ভব, সে কথাও জানানো হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/chromorange
সঙ্গীকে দোষ না দিয়ে কথা বলুন
হোক সে যৌন জীবন কিংবা যৌথ সম্পর্কের অন্য কোনো দিক, যে কোনো বিষয়ে সঙ্গীর সঙ্গে সময় নিয়ে খোলামেলা আলোচনার পরামর্শ দেয়া হয়েছে ওয়েবসাইটে৷ তবে আলোচনায় একে-অপরকে দোষ না দিয়ে বরং কার কী প্রত্যাশা সেদিকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে৷ প্রয়োজনে সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়ার উপায়ও জানানো হয়েছে সাইটটিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যৌনসম্মতির বয়স ১৮ বছর
জার্মানিতে ১৪ বা ১৫ বছরের একটি ছেলে বা মেয়ে একই বয়সের সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করতে পারে৷ কিন্তু সেই বয়সের একটি ছেলে বা মেয়ের সঙ্গে ১৬ বা তার বেশি বয়সের কেউ যৌন সম্পর্কে জড়ালে সেটা অপরাধ৷ এমনকি কম বয়সি সঙ্গী সম্মতি দিলেও৷ যৌন মিলনের জন্য নিরাপদ বয়স কমপক্ষে আঠারো৷
ছবি: picture-alliance/Beyond
অভিবাসীদের কি যৌন শিক্ষার দরকার আছে?
এই প্রশ্নটা অনেকেই করছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে৷ এর মানে কি অভিবাসীরা যৌন মিলন সম্পর্কে অজ্ঞাত? এ সব প্রশ্নের জবাবে নির্মাতার জানিয়েছেন, বিশ্বের অনেক দেশে যৌনতা নিয়ে আলোচনা এক ‘নিষিদ্ধ বিষয়’৷ তাই দরকার এমন একটা সাইট৷ বাংলা ভাষাতেও এ রকম একটি সাইটের দরকার বলে ফেসবুকে লিখেছেন একাধিক বাংলা ব্লগার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চিত্রলিপির ‘কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ, শেতাঙ্গ নারী’
ওয়েবসাইটটিতে প্রদর্শিত যৌন মিলনের কিছু চিত্রলিপিতে পুরুষকে কৃষ্ণবর্ণে এবং নারীকে শ্বেতবর্ণে দেখানো হয়েছে৷ আর এটা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আপত্তি করেছেন অনেকে৷ কারো কারো মতে, শরণার্থী বা অভিবাসীদের যৌনশিক্ষা, যেমন কনডম পরানো শেখানোর মাধ্যমে আসলে বোঝানো হয়েছে যে, তারা কিছুই জানে না, যা একধরনের ‘বৈষম্যমূলক মনোভাব’৷
ছবি: Andreas Wolf/Fotolia
যারা তৈরি করেছেন
বেলজিয়ামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতা নিয়ে জার্মানির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যশিক্ষা কেন্দ্র ‘জানজু ডটডিই’ ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছে৷ এ জন্য সময় লেগেছে তিন বছর৷ মূলত অভিবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্ন এবং প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে সাইটটি তৈরি করা হয়৷ তিন সপ্তাহ আগে প্রকাশের পর থেকে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার মানুষ এটি ‘ভিজিট’ করছেন৷
ছবি: zanzu.de
10 ছবি1 | 10
ডানেনব্যার্গের পরিস্থিতি ভিন্ন
তবে ডানেনব্যার্গের ক্লিনিকের পরিস্থিতি ভিন্ন৷ সেই অঞ্চলে এটিই একমাত্র হাসপাতাল যেটির গাইনোকোলজিক্যাল বিভাগ রয়েছে৷ নিয়ম অনুযায়ী, কোনো চিকিৎসক গর্ভপাতে সহায়তা করতে বাধ্য নন৷ কোনো কারণ ছাড়াই তারা সেটা করতে অস্বীকার করতে পারেন৷ আর গির্জা পরিচালিত হাসপাতালগুলোতেও গর্ভপাত নিষিদ্ধ৷ তবে জরুরি পরিস্থিতিতে, যেখানে একজন নারীর জীবন হুমকির মুখে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকরা গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য৷
আবার জার্মানির সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালতের রুল অনুযায়ী, একজন চিকিৎসককে প্রধান চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার ক্ষেত্রে বৈধ গর্ভপাতে তার সায় থাকার বিষয়টি একটি পূর্বশর্ত৷
ফলে ডানেনব্যার্গের পরিস্থিতি বেশ জটিল৷ কেননা, সেখানে একজন চিকিৎসক তাঁর ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ভিত্তিতে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করেছেন যদিও হাসপাতালটি গির্জা পরিচালিত নয়৷ তবে রক্ষণশীল রাজনীতিবিদরা ব্যর্নারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন৷ আর ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় হাসপাতালটির মালিকপক্ষও সুর পাল্টাতে শুরু করেছে৷ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইপিডি সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, তাঁরা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন, কিন্তু একটি বিভাগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব সরকারের৷
ডাক্তার ব্যর্নার অবশ্য নিজের নীতিতে অটল থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ এজন্য ভবিষ্যতে তাঁর ক্যারিয়ারে যেকোনো পরিণতি মেনে নিতে প্রস্তুত তিনি৷