1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ইকোলাই আতঙ্ক

৪ জুন ২০১১

ব্যাকটেরিয়াজনিত এই রোগটি যে জার্মানিতে অজানা, এমন নয়৷ কিন্তু ‘এহেক’ বা ইকোলাই তো এক ধরনের নয়৷ ৭০ ধরনের এহেক ইতিমধ্যেই পরিচিত৷ দৃশ্যত তারই দুটি স্ট্রেইন বা প্রজাতির সংকর এই নতুন ইকোলাই৷

Eine Mitarbeiterin des Veterinärinstitut Hannover hält am Mittwoch (01.06.2011) in Hannover eine Agar-Schale mit E.coli Bakterien. Die Zahl der EHEC-Infektionen in Niedersachsen steigt wieder rapide an. Bisher haben sich vermutlich 344 Menschen mit dem gefährlichen Darmbakterium infiziert. Foto: Caroline Seidel dpa/lni (zu lni 0851 vom 01.06.2011) +++(c) dpa - Bildfunk+++
ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়াছবি: picture-alliance/dpa

নতুন ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া কিডনি বা মূত্রগ্রন্থিতে যে মারাত্মক রোগটির অবতারণা ঘটায় তার নাম হল হেমোলিটিক উরেমিক সিনড্রোম বা ‘হুস'৷ খুনি ব্যাকটেরিয়া পাকস্থলীর দেয়াল ফুটো করে রক্তে ঢুকে রক্তকোষ এবং রক্তের প্লেটলেটগুলিকে ধ্বংস করে৷ সেগুলির টুকরো কিডনি বা মূত্রগ্রন্থিতে ঢুকে সেটির রক্ত পরিশোধনের ক্ষমতা ক্ষুণ্ণ অথবা পুরোপুরি বিনষ্ট করে৷ তখন বস্তুত রোগীকে ডায়ালিসিসের মাধ্যমে রক্ত পরিশোধন করে অথবা প্লাজমা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না৷

এখন ভেবে দেখুন, জার্মানির মতো একটি উন্নত দেশে, হামবুর্গের মতো একটি বিশ্বখ্যাত শহরের হাসপাতাল যখন মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে এতো হুস রোগীতে ভরে যায় যে, নাগরিকদের প্রতি রক্তদানের আবেদন জানাতে হয় - তখন সেই ব্যাকটেরিয়া ঠিক কী পরিমাণে আগ্রাসী৷ বলতে কি, এই ব্যাকটেরিয়া স্নায়ুজনিত প্রতিবন্ধিতারও সৃষ্টি করতে পারে - হাঁটতে-চলতে কিংবা কথা বলতে অসুবিধা৷ এবং এ'সব স্থায়ী ক্ষতি৷

সেই রোগ যে হঠাৎ উত্তর জার্মানিতে শুরু হয়ে এমনভাবে জার্মানি এবং তার উত্তরের প্রতিবেশী দেশগুলির গণ্ডি ছাড়িয়ে খোদ মার্কিন মুলুকে ছড়িয়ে পড়ল কি ভাবে, তার উত্তর হল: এই ব্যাকটেরিয়া অতি সহজে ছোঁয়া থেকে হাত থেকে মুখ থেকে পেটে সংক্রমিত হয়৷ দ্বিতীয়ত, এই ব্যাকটেরিয়া দৃশ্যত নানা ধরনের পদার্থের উপর বেঁচে থাকতে পারে৷ অবশ্য ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি গরম করলে কোনো ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ারই বেঁচে থাকার কথা নয়৷

ছবি: picture-alliance/dpa

গোড়ায় স্পেন থেকে আসা কিছু শসার ওপর যে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছিল, পরে দেখা যায়, তার স্ট্রেইন বা প্রজাতি এই মারাত্মক প্রজাতিটির সঙ্গে মেলে না৷ আপাতত জার্মান এবং চীনা পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে খুনি ইকোলাই ব্যাকটেরিয়াটির প্রজাতি নির্ধারিত হয়েছে, এমনকি তার জেনোমও বিশ্লেষণ করা হয়েছে৷ কিন্তু তার সৃষ্ট রোগটির চিকিৎসার পন্থা এখনও কারো জানা নেই৷

অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এই ব্যাকটেরিয়াকে সায়েস্তা করা যায় না, কেননা অ্যান্টিবায়োটিক দিলে শিগা-টক্সিন বলে এক ধরনের বিষ বেরোয়, যা রক্তকোষ এবং ছোট ছোট শিরা বা ধমনিগুলোকে ধ্বংস করে৷ অন্যদিকে পেট ছাড়া বন্ধ করার ওষুধ দেওয়াও খারাপ, কেননা ঐ পেট ছাড়ার মাধ্যমেই শরীর থেকে ব্যাকটেরিয়া এবং তার বিষ বেরিয়ে যায়৷ কাজেই যে রোগীর পেট ছাড়ার সঙ্গে রক্ত বেরোচ্ছে, এবং মূত্রগ্রন্থি কাজ করছে না, তাকে রক্ত দাও, ডায়ালিসিস করো, অবস্থা আরো খারপ হলে প্লাজমা বদলাও৷

এ' রোগের হাত থেকে বাঁচতে গেলে কি করা উচিৎ? লেটুস, টমাটো, শসা ইত্যাদি যে সব সবজি কাঁচা খাওয়া হয়, সেগুলো আপাতত না খাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা৷ আর বলছেন খাবার আগে, পরে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার সময়, বার বার হাত ধুতে, ভালো করে, সাবান দিয়ে, অন্তত আধ মিনিট ধরে৷ অবশ্য ডাক্তাররা কেন, কেউই জানে না এই খুনি ইকোলাই ঠিক কি ধরনের খাদ্যে ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে৷ গরু-বাছুরের পেটে যার উৎপত্তি, সে তো নানা রকমের পথ ধরে ছড়িয়ে পড়তে পারে, কাঁচা দুধ হিসেবে, গোবরের সার হিসেবে৷

কাজেই এখন সেই খুনির গোপন আস্তানার খোঁজ চলেছে৷

প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী

সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ