ইবোলা৷ আজকের এই বিশ্বায়নের যুগে এই রোগ শুধু আফ্রিকায় সীমাবদ্ধ নেই৷ বিচ্ছিন্নভাবে হলেও তা বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও মাথাচাড়া দিচ্ছে৷ ইবোলার মোকাবিলায় জার্মানি ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ উদ্দেশ্য, এই রোগকে মূলেই বিনাশ করা৷
বিজ্ঞাপন
অনেক মানুষ মারা গেছেন৷ আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলে ইবোলা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান, আগামী কয়েক মাসে আরও হাজার দশেক মানুষের মৃত্যু ঘটবে৷
নাইজেরিয়া আক্রান্ত হবার ফলে জার্মানিতেও ঝুঁকি বাড়েছে৷ কারণ সে দেশের সঙ্গে সরাসরি বিমান যোগাযোগ রয়েছে৷ প্রতিদিন লুফৎহানসা বিমান সংস্থার ফ্লাইট নাইজেরিয়া যায়৷ ফলে ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরে এবোলায় আক্রান্ত রোগীদের আগমনের ঝুঁকি রয়েছে৷
ফ্রাংকফুর্ট শহরের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান তাই নিজে নিয়মিত এয়ারপোর্টে গিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন৷ কোনো বিমানযাত্রীর শরীরে ইবোলার লক্ষণ দেখা দিলে তার জন্য বিশেষ এমার্জেন্সি প্ল্যান প্রস্তুত রয়েছে৷ ফ্রাংকফুর্ট শহরের স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রধান অধ্যাপক রেনে গটশালক বলেন, ‘‘পাইলট বিমানবন্দরকে এমন সন্দেহের কথা জানান৷ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তখন আমাদের খবর দেয়৷ বিমান অবতরণের আগেই সব রকম প্রস্তুতি হয়ে যায়৷ সন্দেহের সঠিক কারণ থাকলে রোগীর দায়িত্ব নেয়া হয়৷''
ইবোলা ভাইরাসের আতঙ্ক সারা বিশ্বে
পশ্চিম আফ্রিকায় ইতিমধ্যে ৪,০০০ মানুষ ইবোলা সংক্রমণে মারা গেছে৷ ইউরোপ এবং অ্যামেরিকায় ইবোলার প্রথম সংক্রমণের পর মহামারির রূপ নিতে পারে এমন আতঙ্ক বাড়ছে৷ দেখুন ইবোলার বিস্তার এবং আতঙ্ক নিয়ে আজকের ছবিঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ডালাস, অ্যামেরিকা
টেক্সাসের এক হাসপাতালের একজন নার্স ইবোলা ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ায় তাঁর বাড়িতে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ৷ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদেও একজন ইবোলায় সংক্রমিত হয়েছেন৷ আক্রান্ত হওায়ার আগে ইবোলায় আক্রান্ত রোগীর সেবা করেছিলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/Jaime R. Carrero
মিলান্ডু, গিনি
গিনির গ্রাম মিলান্ডুতে গত বছর ইবোলার সূত্রপাত হয়৷ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ৬ ডিসেম্বর দু’বছরের এক শিশু মারা যায়৷ সম্ভবত ওই শিশুটিই ছিল সাম্প্রতিক কালে মহামারির রূপ নেয়া ইবোলার প্রথম শিকার৷ তারপরই এই ভাইরাসে মারা যায় শিশুটির বোন, মা এবং নানি৷ এ বছরের মার্চ মাসে গিনির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ডাব্লিউএইচও-কে ইবোলার প্রাদুর্ভাবের কথা জানায়৷
মনরোভিয়া, লাইবেরিয়া
গিনির পর ইবোলা আঘাত হানে পার্শ্ববর্তী দেশ সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়ায়৷ লাইবেরিয়ায় নার্সদের ধর্মঘটে ইবোলা রোগীদের সংকট কিছুটা বেড়ে যায়৷ তবে আশার কথা, সেনেগাল এবং নাইরেজিয়ায় এরই মধ্যে ইবোলা সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে৷
জেনেভা, সুইজারল্যান্ড
ইবোলা একটি সংক্রামক রোগ৷ রক্ত, বীর্য, যোনিরস, লালা বা দেহ নির্গত অন্য পদার্থ যেমন মলমূত্র বা বমির সংস্পর্শে এ রোগ ছড়ায়৷ আক্রান্ত রোগীদের পরিবারের সদস্য, ডাক্তার ও সেবাকর্মীদের এ রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি৷ তবে সংক্রমণ নিরোধক পোশাক এবং জীবাণুনাশক ব্যবহার করলে ইবোলায় সংক্রমিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, মনে করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: Getty Images/P. Guyot
লাইপসিশ, জার্মানি
গত মঙ্গলবার জার্মানিতে আসা জাতিসংঘের দু’জন কর্মীর মধ্যে একজন লাইপসিশে মারা গেছেন, যিনি লাইবেরিয়াতেই ইবোলা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন৷ আর একজনকে বিশেষ ব্যবস্থায় ফ্রাংকফুর্ট শহরে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রী হ্যারমান গ্যোহে অবশ্য আশার কথা শুনিয়েছেন৷ তাঁর মতে, ‘‘জার্মানিতে ইবোলা সংক্রমণের আশঙ্কা খুবই কম৷’’
ছবি: Reuters/R. Orlowski
5 ছবি1 | 5
বিমানটিকে অনেক দূরে পার্ক করতে হয়৷ বিমানবন্দর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা বিমানে উঠে ছোঁয়াচে রোগীর শরীরে এক লাল পয়েন্ট বসিয়ে দেন৷ অধ্যাপক গটশালক বলেন, ‘‘রোগীর আশাপাশের যাত্রীদের হলুদ রং দেওয়া হয়৷ তাদের সংখ্যা বেশি নয়৷ বিমানের বাইরে এক হলুদ রংয়ের বাস তাঁদের তুলে নেয়৷ তাঁদের একটি বিশেষ জায়গায় নিয়ে গিয়ে ভালো করে পরীক্ষা করা হয়৷''
সন্দেহের কারণ ঘটলে তাঁদের ‘কোয়ারেনটাইন' করে রাখা হয়৷ বাকি সব বিমানযাত্রীরা সবুজ রং পান এবং তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়৷ এর মধ্যে বিশেষ যন্ত্রপাতি বসানো অ্যামবুলেন্সে করে রোগীকে নিয়ে যাবার প্রস্তুতি চলতে থাকে৷ কাজ শেষ হলে এই সব দামি যন্ত্রপাতি ফর্মালিন দিয়ে ডিস-ইনফেক্ট করে সেগুলি ধ্বংস করে ফেলতে হয়৷ এক বিশেষ ফিল্টার প্লান্ট গাড়ির নীচে ধারাবাহিক চাপ সৃষ্টি করে৷ ফলে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস বাইরের বাতাসের সঙ্গে মিশে যেতে পারে না৷ বিমান নামার আগেই এই বিশেষ যান প্রস্তুত থাকে৷ অধ্যাপক গটশালক বলেন, ‘‘রোগীকে বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ আলাদা আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগীকে রাখা হয়৷''
ডাক্তার বা চিকিৎসা কর্মী ওয়ার্ডের বাইরে নির্দিষ্ট জায়গায় প্রায় মহাকাশচারীর মতো বিশেষ পোশাক পরে নেন৷ এতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে৷ এই পোশাক পুরোপুরি এয়ার ও ওয়াটার টাইট এবং সংক্রমণও ঢুকতে দেয় না৷ ফ্রাংকফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পেটার ফ্লেকেনস্টাইন বলেন, ‘‘স্যুটের মধ্যে বাতাস ঢোকানো হয়, ফলে সেখানে চাপ সৃষ্টি হয়৷ কোনো জীবাণু যাতে ঢুকতে না পারে, এই এক্সেস প্রেসার তা নিশ্চিত করে৷''
মহামারি ইবোলা ভাইরাস
ইবোলা বা এবোলা ভাইরাসকে চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভাইরাস হিসেবে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ এতে আক্রান্ত হলে ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুর অবধারিত৷ তাই বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি অবস্থা জারি করেছে সংস্থাটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি অবস্থা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান মার্গারেট চান এবোলাকে মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি অন্যতম ঘাতক জ্বর হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন যে, আফ্রিকায় মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে রক্তপ্রদাহজনিত এই জ্বর৷ তাই বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যবিষয়ক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন তিনি৷
ছবি: picture alliance/dpa
পশ্চিম আফ্রিকায় মহামারি
মারাত্মক এবোলা ভাইরাসের আক্রমণে পশ্চিম আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১,০০০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৭১১৷ গিনিতে গত মার্চে প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে এবোলা ভাইরাসের প্রকোপ কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লাইবেরিয়ায় জরুরি অবস্থা
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হিসেবে বিশ্বে এই ভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে অন্যতম দেশ লাইবেরিয়ায় বৃহস্পতিবার জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে৷ এতে সরকার বিভিন্ন কঠোর ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হবে৷ প্রাণঘাতী এবোলা ভাইরাস এখন আফ্রিকা থেকে বিশ্বের অন্যান্য মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
আক্রান্ত অন্যান্য দেশের নাগরিক
স্পেনের একজন প্রবীণ ক্যাথলিক ধর্মপ্রচারক মারাত্মক অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য আফ্রিকা থেকে দেশে ফিরে গেছেন৷ তিনি এবোলায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ সৌদি আরবে একজন রোগীর মৃত্যুর কারণও এবোলা বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা৷ নাইজেরিয়াতেও একজন নার্স এবোলার সংক্রমণে মারা গেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এবোলা সংক্রমণের লক্ষণ
এবোলায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মারাত্মক জ্বর এবং কারও কারও অবিরত রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে৷ সঙ্গে থাকে মাথা, পেশী এবং তলপেটে তীব্র ব্যথা৷ রোগীর একদিকে ক্ষুধা কমে যায়, অন্যদিকে শুরু হয় পাতলা পায়খানা৷ সাধারণত শরীর থেকে নিঃসৃত বিভিন্ন তরল পদার্থের মাধ্যমে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আক্রান্ত চিকিৎসক
বলা বাহুল্য, আক্রান্ত ব্যক্তির পরিচর্যাকারীর মধ্যে ভাইরাসটি সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি৷ লাইবেরিয়াতে যেমন এবোলা রোগীদের পরিচর্যাকারী দুই মার্কিন স্বাস্থ্যকর্মী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর, তাঁদের চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সংক্রমণের আশঙ্কা
মূলত কোনো প্রাণী বা মানুষের রক্ত, বীর্য, যোনিরস বা দেহ নির্গত অন্য কোনো তরলের সংস্পর্শে এ রোগ ছড়ায়৷ বলা বাহুল্য, অনিয়ন্ত্রিত এবং অনিরাপদ যৌন মিলনেও এ রোগের সংক্রমণ হয়ে থাকে৷ অর্থাৎ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এইডস রোগের সঙ্গে এবোলার মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
উড়ন্ত খ্যাঁকশিয়াল
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পশ্চিম আফ্রিকায় এবোলা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার প্রধান কারণ উড়ন্ত খ্যাঁকশিয়াল৷ এই প্রাণীটি ভাইরাসটি বহন করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে দিচ্ছে৷ এমনকি সংক্রমিত প্রাণীটি যখন ফলমূল ও অন্যান্য প্রাণী খাচ্ছে, তখন সেসব খাদ্যের অবশিষ্ট অংশ থেকেও ছড়িয়ে পড়ছে এবোলা৷
ছবি: imago
সংক্রমণের ঝুঁকি
তার মানে শুধু মানুষ থেকে মানুষে নয়, মানুষ যখন এবোলায় আক্রান্ত প্রাণীর রক্ত বা মাংসের সংস্পর্শে আসে, তখনও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে৷ বরং সেক্ষেত্রে ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি বলে জানান চিকিৎসকরা৷ তাই খ্যাঁকশিয়াল থেকে অন্য প্রাণী বা ফলমূল হয়ে সহজেই মানুষের মধ্যে এবোলা ভাইরাস তার বংশবৃদ্ধি করে৷
ছবি: DW
৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যু
এবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুর অবধারিত৷ সেজন্যই তো একে মহামারি বলে আখ্যা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷
ছবি: Reuters
বড় সমস্যা
বলা বাহুল্য, আফ্রিকায় বন্য প্রাণী খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে৷ সব বাজারেই এ সব মাংস পাওয়া যায়৷ গবেষকদের ধারণা, এ ধরনের বন্য প্রাণীর মাংস থেকে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এবোলা৷ তার সঙ্গে অনিরাপদ যৌন মিলন তো রয়েছেই!
ছবি: picture-alliance/dpa
পরীক্ষামূলক ওষুধ এখনই নয়
এবোলা সংক্রমণ নিরাময়ের উপায় এখনো আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি৷ যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি একটি ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করার সময় এখনো আসেনি বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ কারণ মার্কিন দুই স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর ওষুধটি প্রয়োগে তাঁদের উন্নতির ধরণে তারতম্য দেখা গেছে৷
ছবি: LEON NEAL/AFP/Getty Images
12 ছবি1 | 12
হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে শুধু মারাত্মক ছোঁয়াচে ও মারণাত্মক রোগের চিকিৎসা করা হয়৷ এখনো পর্যন্ত দু'বার এটি ব্যবহার করা হয়েছে – সার্স ও লাসা ফিভার-এর ক্ষেত্রে৷ এমন রোগের আবির্ভাব না ঘটলেও ডাক্তার ও চিকিৎসা কর্মীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়৷ কারণ এমন ভারি স্যুট পরে কাজ করা কঠিন, তাই অনুশীলনের প্রয়োজন পড়ে৷ তার উপর হাতে দস্তানা পরা থাকলে আঙুলে কোনো অনুভূতিই বোঝা যায় না৷ সেটা মোটেই সহজ নয়৷ প্রত্যেকটি কাজে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি সময় লাগে৷ প্লাস্টার তৈরি করা বা কিছু খোলা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে৷ স্বাভাবিক দস্তানা পরলে এমনটা হয় না৷
ফ্রাংকুর্টের স্বাস্থ্য দপ্তরে এক এমার্জেন্সি কমিটি প্রতি দু'দিন অন্তর ইবোলা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন৷ বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত যে, আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য তাঁরা পুরোপুরি প্রস্তুত৷ অধ্যাপক গটশালক বলেন, ‘‘জার্মানিতে ইবোলার প্রসারের সম্ভাবনা সত্যি অত্যন্ত ক্ষীণ৷ সন্দেহ দেখা দিলেই অবিলম্বে নির্দিষ্ট জায়গায় চিকিৎসা করতে হবে৷ রোগীর সংস্পর্শে যারা এসেছে, তাদেরও পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে, দেখতে হবে তাদের শরীরেও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কিনা৷ এমনটা করলেই রোগের প্রসারের পথ দ্রুত ও নিরাপদে বন্ধ করা যাবে৷''
এই মারণাত্মক ভাইরাসের কোনো অনুমোদিত চিকিৎসা এখনো নেই৷ প্রতিরোধক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আপদকালীন পরিকল্পনাই একমাত্র পদক্ষেপ, যা কাজে লাগতে পারে৷