জার্মানির মুসলিম কিন্ডারগার্টেন ‘হালিমা' যাত্রা শুরু করে ১৯৯৯ সালে৷ জার্মানির মুসলমানদের এখানকার সমাজে সম্পৃক্ত করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি৷
বিজ্ঞাপন
কিন্ডারগার্টেনে শুক্রবারের এক দৃশ্য: মুসলমানদের কাছে এক পবিত্র দিন শুক্রবার৷ হালিমা কিন্ডারগার্টেনে আজ খাবারের মেন্যুতে রয়েছে ক্যাপসিকাম ও গাজরের স্যুপ৷ সাথে রয়েছে নিজেদের বেক করা রুটি৷ শিক্ষিকা আইসে, সাইমা ও মিরেলা বেশ কয়েকটি বড় বড় হাড়িতে রান্না করছেন এই স্যুপ৷ এজন্য অপেক্ষা করছে ২২টি কচিমুখ৷ নয়টি দেশের তিন থেকে ছয় বছর বয়সি শিশু৷ তাদের কেউ কেউ সবজি কাটায় সাহায্য করছে৷ কেউ কেউ এখানে সেখানে খেলাধুলা করছে৷ অনেকে আবার তুর্কি ক্লাস করছে৷ এজন্য তুরস্কের কনসুলেট থেকে এক শিক্ষিকা আসেন সপ্তাহে একদিন৷ বাচ্চারা আপেল, কলা ইত্যাদি ফলের ছবি দেখে তাঁর কাছে তুর্কি ও জার্মান ভাষায় ওগুলির নাম শিখছে৷
সহজেই দুই ভাষায় কথা বলতে পারে
ছয় বছরের সালেহ সহজেই তুর্কি ও জার্মান ভাষায় কথা বলতে পারে৷ বাবা মেসুত পালানজি তিন বছর বয়স পর্যন্ত তাকে বাসায় তুর্কি ভাষা শিখিয়েছেন৷ যাতে সে মাতৃভাষা ঠিকমত বলতে পারে৷
সব দেশেই শিক্ষার ধরণ আলাদা
বিশ্বের প্রায় সব দেশেই শিক্ষকরা চক দিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডে লেখেন – এ দৃশ্য তাই সবারই জানা৷ কিন্তু তারপরও দেশ ভেদে এর পার্থক্য রয়েছে, বিশেষকরে আজকের এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে৷
ছবি: Getty Images
সব স্কুল কি এক রকম?
সারা বিশ্বের ছাত্ররা একইভাবে পড়ালেখা শেখে? না, তবে প্রায় সব দেশেই শিক্ষকরা চক দিয়ে ব্ল্যাকবোর্ডে লেখেন – এ দৃশ্য তাই সবারই জানা৷ কিন্তু তারপরও দেশ ভেদে এর পার্থক্য রয়েছে৷ কোনো দেশে ছাত্র-ছাত্রীরা খোলা আকাশের নীচে মাটিতে পা মুড়ে বসে লেখাপড়া করে, কোথাও আবার স্কুল বেঞ্চে বসে৷ আবার কোনো কোনো দেশের ছাত্রদের রয়েছে নিজস্ব ল্যাপটপ৷
ছবি: AP
ডিজিটাল স্কুলের বই
দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ডিজিটাল সিস্টেমে চলে৷ প্রতিটি ক্লাস রুমেই রয়েছে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট৷ সরকারের ইচ্ছে সব স্কুল বই পুরোপুরিই ই-বুকে রূপান্তরিত করার৷ ডিজিটাল সিস্টেমে লেখাপড়া করতে কোনো ছেলে-মেয়ের যেন অসুবিধা না হয় এবং ডিজিটাল বইয়ের অভাবে যেন কারো লেখাপড়া বন্ধ না হয়, সেজন্য সরকার বিনা মূল্যে তাদের ট্যাবলেট এবং কম্পিউটার দিয়ে থাকে৷
ছবি: AP
গ্রামের স্কুলে যাওয়ার অসুবিধা
অন্যভাবেও পড়াশোনা চলতে পারে৷ কোনোরকমে ঝুলানো একটি ব্ল্যাকবোর্ড এবং কয়েকটি কাঠের বেঞ্চই আফ্রিকার ঘানার এই স্কুলটির জন্য যথেষ্ট৷ এই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতনে লেখা পড়া করা যায়, যদিও কাগজে কলমে রয়েছে ক্লাস নাইন পর্যন্ত লেখপড়া বাধ্যতামূলক৷ পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি হওয়ায় গ্রামের ছাত্রদের অনেকেরই লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন হয়৷
ছবি: Fotolia/Living Legend
টাচপ্যাডের মাধ্যমে লেখা শেখা
তবে জার্মানির এই স্কুলটি ব্যতিক্রম৷ কাগজ, পেন্সিল ছাড়া ছাত্ররা পুরোপুরি স্মার্টবোর্ড এবং নেটবুকের মাধ্যমে লেখা শেখে৷ ডিজিটাল নেটওয়ার্কিং-এর ছাত্রদের যোগাযোগের কাজে সাহায্য করে এবং কর্মদক্ষতা বাড়ায়৷ জার্মানিতে এখনো দুই মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ লিখতে পড়তে পারেন না, যদিও পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে জার্মানির সবাই লেখাপড়া জানেন৷
ছবি: AP
শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ছোটবেলা থেকেই সুবিধা
শিল্পোন্নত দেশ মানেই সে দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের অন্যদেশের চেয়ে লেখাপড়ায় অনেক বেশি এগিয়ে থাকা৷ এমনকি ছোট বাচ্চাদেরও সেভাবেই তৈরি করা হয়, যেমন অ্যামেরিকার এই স্কুলটিতে৷ শিল্পোন্নত দেশগুলোতে ছোটবেলার শিক্ষাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং ৭০ শতাংশ বাচ্চাই প্রাইমারি স্কুলে যাওয়ার আগে অনেককিছু শিখে ফেলে৷ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ১০ জনের মধ্যে হয়ত তিনজন কিন্ডারগার্টেনে যাওয়ার সুযোগ পায়৷
ছবি: AP
যেখানে শিক্ষা অর্থের জন্য বাঁধাগ্রস্থ
কেনিয়াতে সব ছাত্রই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়তে পারে৷ তারপরও অনেকে তার আগেই স্কুল ছেড়ে দেয়৷ স্কুল ড্রেস, বই, খাতা, জুতো ইত্যাদি জোগাড় করা অনেক বাবা মায়ের জন্য কষ্টকর হয় দাঁড়ায়৷ সেখানে ছাত্রের সংখ্যা অনেক বেশি এবং পড়াশোনার মানও নিম্ন৷ যাঁদের সামর্থ রয়েছে সে রকম অনেক বাবা-মা তাঁদের বাচ্চাদের প্রাইভেট স্কুলে পাঠান৷
ছবি: DW/J.Bruck
স্কুল ড্রেস পরে লেখাপড়া
ইংল্যান্ডে স্কুল ড্রেস ছাড়া কেউ স্কুলে যায় না৷ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কুল ড্রেস পরা বাধ্যতামূলক৷ কারণ স্কুল ড্রেস যার যার স্কুলের পরিচয় বহন করে এবং পড়াশোনার প্রতি উৎসাহী করে৷ দরিদ্র পরিবাররের ছেলে-মেয়েরা স্কুল ড্রেসের জন্য স্কুল থেকে টাকা পেয়ে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/dpaweb
খোলা আকাশের নীচে ক্লাসরুম
একটি পাবলিক পার্কে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে পাকিস্তানের একটি স্কুলে৷ গরিব বাবা-মায়েরা পয়সার অভাবে এমন স্কুলেই তাঁদের সন্তানদের পাঠিয়ে থাকেন৷ পাকিস্তানে শিক্ষা খাতে ব্যয় কমানো হয়েছে, কারণ সরকার শিক্ষার চেয়ে সামরিক খাতে বেশি খরচ করে৷ যা ছাত্ররাও বুঝতে পারছে৷
ছবি: AP
কমপক্ষে মৌলিক শিক্ষা থাকতে হবে
আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ ও নানা সমস্যার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত৷ বিশেষকরে মেয়েদের ক্ষেত্রে একথাটি বেশি প্রযোজ্য৷ প্রতি দশজনের একজন লিখতে পড়তে পারে সেখানে৷ তবে এ হার পুরুষদের ক্ষেত্রে শতকরা ৪০ জন৷ তাছাড়া স্কুলগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট স্কুলও নেই, অভাব রয়েছে শিক্ষক এবং শিক্ষার সরঞ্জামেরও৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত
আফগানিস্তানের মতো প্রায় একই অবস্থা দক্ষিণ সুদানেও৷ এদেশেও মেয়েদের প্রতি পাঁচজনের একজন লিখতে ও পড়তে পারে৷ সেজন্যই বিদেশি সাহায্য সংস্থাগুলো সুদানের মেয়েদের শিক্ষার দিকে বিশেষ নজর দিয়ে থাকে৷ বহু বছরের গৃহযুদ্ধ সে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ঘুণ ধরিয়ে দিয়েছে৷ অনেক স্কুলেই বই-খাতা এবং টেবিল-বেঞ্চও ঠিকমতো নেই৷
ছবি: dapd
কো-এডুকেশন পছন্দ নয়
কো-এডুকেশন? না, ইরানে সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়৷ ছেলে এবং মেয়ে আলাদাভাবে পড়াশোনা করে ইরানে৷ এমন কি এই ইহুদি স্কুলেও ইসলামিক স্কুল ড্রেস পরা বাধ্যতামূলক৷ এখানে মেয়েরা যে ধর্মেরই হোক না কেন সবাইকেই চুল ঢেকে রাখতে হবে, অর্থাৎ হিজাব পরতে হবে৷
ছবি: AP
ধনী-গরিবের পার্থক্য
ব্রাজিলের গ্রামাঞ্চলের ছাত্রদের জন্য লেখাপড়া করা বেশ কঠিন৷ কারণ সেখানকার স্কুলগুলোতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই৷ যেমন মন্টে আলেগ্রের এই স্কুলটির মতো ৷ যদিও ব্রাজিল শিল্পোন্নত দেশগুলোর একটি, তারপরও এদেশে গরিব এবং ধনীদের মধ্যে অনেক পার্থক্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বাংলাদেশের অবস্থা অনেকটা একই রকম
বাংলাদেশের গ্রামের স্কুল এবং রাজধানী ঢাকা শহরের স্কুলের মধ্যে বিশাল পার্থক্য৷ বড় শহরগুলোতে ছাত্ররা কম্পিউটার বা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে৷ আর গ্রামের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটার ব্যবহার করার ইচ্ছা – এখনো স্বপ্ন!
ছবি: Getty Images
13 ছবি1 | 13
৪৪ বছর বয়সি মেসুত পালানজি ‘হালিমা' কিন্ডারগার্টেনের পরিচালনা পরিষদের প্রধান৷ তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ১৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠানটি আলোর মুখ দেখে৷ তখনকার দিনে এক পাইওনিয়ার বলা চলে এটিকে৷ বিশেষ করে, ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে নেতিবাচক ধারণা ও অবিশ্বাস দূর করার ক্ষেত্রে এক সাহসী পদক্ষেপ৷ হালিমার আগে আরো দুটি ইসলামি কিন্ডারগার্টেন স্থাপিত হয়েছিল জার্মানিতে৷ তবে মিউনিখের কিন্ডারগার্টেনটি কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়ে যায়৷
আইডিয়াটা আসে ১৯৯৩ সালে
জার্মানির দক্ষিণ পশ্চিমের শহর কার্লসরুহে শহরে এক ইসলামি কিন্ডার গার্টেন প্রতিষ্ঠা করার আইডিয়াটা উদ্যোক্তাদের মাথায় আসে ১৯৯৩ সালে৷ মুসলমান বাবা-মায়ের আকাঙ্খার দিকে লক্ষ্য রেখেই কাজটা হাতে নেওয়া হয়৷ তারা চেয়েছিলেন বাচ্চারা যেন ইসলাম ধর্মের আচার অনুষ্ঠান যেমন রোজা, ঈদ ইত্যাদি সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা পায়৷ এইসব বাবা মায়ের গতানুগতিক কিন্ডারগার্টেনে খুব ভালো অভিজ্ঞতা হয়নি৷ সেসব কিন্ডারগার্টেনে ইসলামের রীতিনীতি, হারাম হালাল খাবার এসব নিয়ে মাথা ঘামানো হয় না৷
হালিমা কিন্ডারগার্টেনটির পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত বেশ কয়েক বছর গড়িয়ে যায়৷ মেসুত ও তাঁর সহযোগীদের কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে বেগ পেতে হয় যে, এখানে ধর্মের ভূমিকা খুব কমই থাকবে৷ এটা কোরান স্কুল নয়৷ এখানে ধর্ম প্রচার বা সুরা মুখস্ত করানো হবে না৷
বাবা-মারা উৎসাহিত হয়ে ওঠেন
হালিমা কিন্ডারগার্টেনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মুসলিম বাবা-মায়েরা উৎসাহিত হয়ে ওঠেন৷ কিন্ডারগার্টেনে ভর্তির ব্যাপারে অপেক্ষমান তালিকা দীর্ঘ হতে থাকে৷ অনেকে তো বাচ্চা জন্মের পরপরই নাম লেখাতে আসেন৷
তবে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মা-বাবারা তাঁদের সন্তানদের এই কিন্ডারগার্টেনে পাঠাতে তেমন আগ্রহ দেখান না৷ তাই অমুসলিম বাচ্চার সংখ্যা এখানে নিতান্তই নগন্য৷ কিছুটা হতাশার সুরে বলেন মেসুত৷ এর ফলে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মেলামেশাটা সহজ হতো৷ ইসলাম সম্পর্কে ভীতিও দূর হতো৷
ধর্মীয় রীতিনীতি স্পষ্ট ও স্বর্গীয় হতে পারে৷ জার্মানির অন্যতম বহুমূখী সাংস্কৃতিক এলাকা, রুয়র অঞ্চলের বোখুম শহরে বিভিন্ন ধর্মের একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী হচ্ছে, আলোকচিত্র শিল্পী ব্রিগিটে ক্রেমারের৷ এটা জার্মানির হেরনে শহরের অর্থডকস উপাসনালয়ের একটি ছবি৷
২০ শতকের গোড়ার দিকে রুয়র অঞ্চলে ইহুদিদের অনেক উপাসনালয় বা সিনাগগ তৈরি করা হয়েছিল৷ পরে অবশ্য সেগুলো নাৎসিরা ধ্বংস করে ফেলে৷ আসলে হলোকস্ট ঐ এলাকায় নাৎসিদের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে ফেলে৷ এরপরও পূর্ব ইউরোপের বহু ইহুদি আজও এই রুয়র অঞ্চল পরিদর্শনে আসেন৷
আনুমানিক ১৫ লাখ মুসলমান রাইন ও রুয়র অঞ্চলে বসবাস করেন৷ অর্ধশতক আগে যখন মুসলমানরা প্রথম জার্মানিতে আসেন, তখন তাঁরা অস্থায়ীভাবে সাধারণ বাড়িতে নামাজ পড়তেন৷ পরে এই গেলজেন কিয়েরর্শেনের মতো অনেক শহরেই মসজিদ তৈরি করা হয়৷
গেলজেন কিয়ের্শেনের আকসা মসজিদের ইমান শুক্রবার জুম্মা নামাজের পর খুতবা পাঠ করছেন৷ মসজিতে শুধু নামাজই পড়া হয়না, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও আন্তধর্মীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়৷
ক্যাথলিক চার্চে এই ধরণের ফল চাষ দেড় হাজার বছরেরও পুরনো ঐতিহ্য৷ ধর্ম যাজকরা ভালো ফসলের জন্য এখানে প্রার্থনা করতেন৷ কিন্তু এখন তাঁরা প্রার্থনা করেন চাকরি, শান্তি ও ক্ষুধার বিরুদ্ধে৷ এছাড়া, সারা বিশ্বের মানুষের মঙ্গলের জন্যও এখানে প্রার্থনা করা হয়৷
রুয়র অঞ্চলে আনুমানিক ১৫০টি চার্চ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ বিশ্বের বহু অভিবাসী নিজেদের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে জার্মানিতে আসেন এবং এখানেই তাঁদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মের ঠিকানা তৈরি করেন৷ এই ছবিটি হাটিঙেনের একটি হিন্দু মন্দিরের৷
২০০২ সালে হাম শহরে এই মন্দিরটি তৈরি করা হয়৷ এটা ইউরোপের সবচেয়ে বড় দ্রাবির মন্দির৷ এখানে সারা ইউরোপ থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন বাৎসরিক মন্দির উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য৷ জার্মানিতে হিন্দু ধর্মের মানুষের সংখ্যা আনুমানিক এক লাখ আর মন্দিরের সংখ্যা ৪০টি৷
১৮৭৩ সালে বর্তমান পাকিস্তান ও ভারতের পাঞ্জাব অঞ্চলে শিখরা এক ধর্মীয় আন্দোলন শুরু করেন৷ শিখদের উপাসনালয়কে বলা হয় গুরুদ্বার৷ গুরুদ্বার অর্থ গুরুর কাছে প্রবেশের দরজা৷ মোয়ের্স-এর এই গুরুদ্বারটি ধর্মীয় এবং সামাজিক কাজে ব্যবহার করা হয়৷
এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে আনুমানিক এক লাখ তিরিশ হাজার বৌদ্ধ এসেছেন জার্মানিতে৷ আরো এক লাখ কুড়ি হাজার বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের শিকড় জার্মানি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে৷ এখানে তাঁরা মিলিতভাবে নিজেদের বিশ্বাসের প্রতি আনুগত্য দেখান৷ ড্যুসেলডর্ফের ‘একো’ মন্দিরে একজন বৌদ্ধ সন্যাসী ঘণ্টা বাজাচ্ছেন৷ একো – যার অর্থ আলো দান৷
ফটো সাংবাদিক ব্রিগিটে ক্রেমার জার্মানির রুয়র অঞ্চলের উপসনালয় নিয়ে যে চিত্র প্রদর্শনী করেছেন, সেটা চলবে আগামী ৩০শে জুন পর্যন্ত৷ ব্রিগেটে ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন জার্মানির সংবাদ সাময়িকী ‘স্ট্যার্ন’, ‘ডেয়ার স্পিগেল’, এবং সাইট ম্যাগাজিন-এ৷
ছবি: Brigitte Kraemer
10 ছবি1 | 10
তুর্কি বংশোদ্ভূত সাইমা ও বসনিয়ার মিরেলা প্রথম থেকেই এই কিন্ডারগার্টেনের সঙ্গে যুক্ত৷ জার্মান ভাষায় পারদর্শী এই দুই শিক্ষিকা৷ মিরেলা হিজাব না পরলেও সাইমা হিজাব পরেন৷ এতে অবশ্য বাচ্চাদের কিছু যায় আসে না৷ তারা দু'জনকেই পছন্দ করে৷
ইন্টিগ্রেশনে ইতিবাচক পদক্ষেপ
এই প্রতিষ্ঠানটি ইন্টিগ্রেশনের ব্যাপারে আরেকটি ইতিবাচক পদক্ষেপ রাখছে৷ আগে ঐ এলাকার মুসলিম মায়েরা যত দেরিতে সম্ভব সন্তানদের কিন্ডারগার্টেনে পাঠাতেন৷ আর এখন তারা বাচ্চাদের এই কিন্ডারগার্টেন পাঠিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজেদের পেশায় যোগ দেন৷ এ কারণে কার্লসরুহে শহরে দেড় বছরের মধ্যে দ্বিতীয় আরেকটি ‘হালিমা' কিন্ডারগার্টেন খোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ সেখানে বাচ্চারা এক বছর বয়স থেকেই যেতে পারবে৷ আশা করা হচ্ছে খ্রিষ্টান মা-বাবারাও তাদের বাচ্চাদের সেখানে পাঠাবেন৷
এতক্ষণে হালিমা কিন্ডারগার্টেনে দুপুরের খাওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে৷ বাচ্চারা ছুটে আসে৷ বিসমিল্লাহ বলে খাওয়া শুরু করে৷