জার্মানির হালে শহরে ইহুদিদের উপাসনালয়ে হামলায় মর্মাহত দেশটির মুসলিমরা৷ সেখানে বসবাসরত মুসলমানদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল এই ঘটনায় ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছে৷ মুসলিমরা শঙ্কিত তাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও৷
বিজ্ঞাপন
হালে শহরে ইহিদিদের সিনাগগের উপর হামলার ঘটনাটি খুব একটা বিস্ময়কর ছিল না আয়মান মাজাইকের কাছে৷ এমন কিছু ঘটতে পারে তা আন্দাজ করতে পারছিলেন সেখানে বসবাসরত মুসলিমদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের চেয়ারম্যান৷ তাঁর মতে যেই ঘটনাটি ইহুদিদের সাথে ঘটেছে তার শিকার হতে পারত সেখানকার মুসলিমরাও৷ কেননা ইহুদি আর মুসলিম দুই সম্প্রদায়কেই একই নজরে দেখে দৃর্বত্তরা৷ এজন্য তাদের একে অন্যকে সহযোগিতা করা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি৷ মাজাইক নিজে ঘটনার পরে হালের ইহুদিদের সাথে দেখা করেছেন, জানিয়েছেন সহমর্মিতা৷
জার্মানির পূর্বের শহর হালেতে হামলার এই ঘটনাটি ঘটে ৯ই অক্টোবর৷ সিনাগগ বা ইহুদি উপাসনালয়ে তখন প্রার্থনা চলছিল৷ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে, হেলমেটে ক্যামেরা লাগিয়ে হত্যালীলা চালানোর প্রস্তুতিই হয়তো নিয়ে এসেছিল আততায়ী৷ কিন্তু বন্ধ দরজার উপর বিস্ফোরক নিক্ষেপ করেও সফল হতে পারেনি ঐ ব্যক্তি৷ সিনাগগের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীরা সেই হামলা প্রতিহত করে৷ ভিতরে ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে দুই পথচারীকে হত্যা করে সে৷ পালানোর সময় হামলাকারী ধরা পড়ে পুলিশের হাতে৷
জার্মানিতে ইহুদি উপাসনালয়ে যত হামলা
জার্মানির হালে শহরে বুধবার ইহুদিদের একটি উপাসনালয়ে হামলার চেষ্টা হয়েছে৷ তবে সিনাগগে ঢুকতে না পেরে দুইজন পথচারীকে হত্যা করেন এক জার্মান আততায়ী৷ ছবিঘরে কয়েকটি সিনাগগে হামলার ঘটনা তুলে ধরা হলো৷
ছবি: Imago Images/S. Schellhorn
কোলন, ১৯৫৯: স্বস্তিকা ও হেট স্পিচ
১৯৫৯ সালের ডিসেম্বরে ‘ডয়চে রাইশপার্টাই’ নামের একটি চরম ডানপন্থি দলের সদস্যরা কোলনের সিনাগগে স্বস্তিকা এঁকে দিয়েছিল৷ এছাড়া ‘জার্মানদের দাবি: ইহুদিরা চলে যাও’ শব্দগুলোও লিখে দেয় তারা৷ এরপর জার্মানির বিভিন্ন এলাকায়ও ইহুদিবিরোধী গ্রাফিতির দেখা পাওয়া গিয়েছিল৷ ঐ ঘটনায় জড়িতদের ধরা হয়েছিল এবং ভবিষ্যতে কেউ যেন ‘মানুষের উসকানিমূলক’ কিছু করতে না পারে সেজন্য সংসদে আইন পাস হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/Arco Images/Joko
ল্যুবেক, ১৯৯৪: অগ্নিসংযোগ
মার্চ মাসের এই ঘটনা সারা বিশ্বের মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছিল৷ চরম ডানপন্থি চার ব্যক্তি ল্যুবেকের সিনাগগে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল৷ এই ঘটনার এক বছর পর আবারও একই সিনাগগে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Büttner
এসেন, ২০০০: পাথর ছোড়া
লেবানন থেকে আসা ১০০-র বেশি ফিলিস্তিনি ২০০০ সালের অক্টোবরে এসেন শহরের পুরনো সিনাগগে পাথর ছুড়ে মেরেছিল৷ ‘মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত’-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শেষে এই হামলা করা হয়৷ এই ঘটনায় একজন পুলিশ আহত হয়েছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/B. Boensch
ড্যুসেলডর্ফ, ২০০০: অগ্নিসংযোগ ও পাথর নিক্ষেপ
ইহুদি ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’ নিতে ১৯ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিন ও ২০ বছর বয়সি মরক্কোর এক নাগরিক আগুন ও পাথর দিয়ে ড্যুসেলডর্ফের নতুন সিনাগগে হামলা করেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Weihrauch
মাইনৎস, ২০১০: মলটফ ককটেল হামলা
১৯৩৮ সালে নাৎসি বাহিনী মাইনৎসের একটি সিনাগগ পুড়িয়ে দিয়েছিল৷ সেখানে নতুন করে একটি সিনাগগ নির্মাণ করা হয়৷ তবে উদ্বোধনের কিছুক্ষণ পরই সেখানে মলটফ ককটেল হামলা চালানো হয়৷
ছবি: picture-alliance/akg/Bildarchiv Steffens
ভুপার্টাল, ২০১৪: অগ্নিসংযোগ
ফিলিস্তিনি তিন তরুণ ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ভুপার্টালের সিনাগগের প্রবেশ দরজায় দাহ্য পদার্থ ছুড়ে মেরেছিল৷ তবে এই ঘটনায় ইহুদিবিদ্বেষের পক্ষে ‘প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে আদালত রায় দিয়েছিলেন৷ জার্মানির ইহুদি ও বিদেশি গণমাধ্যম এই রায়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/C. Seidel
বার্লিন, ২০১৯: ছুরি নিয়ে হামলা
অক্টোবরের ৪ তারিখ শাবাতের পূর্বে বার্লিনের নতুন সিনাগগে স্থাপন করা একটি বেড়ায় ছুড়ি নিয়ে উঠে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি৷ নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ধরে ফেলেন৷ পরে ছেড়েও দেন৷ ইহুদি নেতারা পুলিশের এই সিদ্ধান্তকে বিচারব্যবস্থার ‘ব্যর্থতা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Avers
হালে, ২০১৯: গুলি
ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের জন্য বছরের সবচেয়ে পবিত্র দিন ‘ইয়ম কিপুর’ উপলক্ষ্যে ৯ অক্টোবর সিনাগগে উপস্থিত হয়েছিলেন ৭০-৮০ জন মানুষ৷ অস্ত্র নিয়ে সেই সিনাগগে ঢোকার চেষ্টা করেছিল ২৭ বছর বয়সি জার্মান আতাতয়ী৷ তবে নিরাপত্তারক্ষীদের বাধার মুখে সিনাগগে ঢুকতে না পেরে রেগে গিয়ে গুলি করে দুইজন পথচারীকে হত্যা করেন তিনি৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার জানিয়েছেন, ইহুদি-বিদ্বেষের কারণেই তিনি হামলা চালিয়েছেন৷
ছবি: Imago Images/S. Schellhorn
8 ছবি1 | 8
এর আগে বিভিন্ন সময়ে উপাসনালয়ে হামলার শিকার হয়েছেন এই শহরের মুসলিমরাও৷ মাজাইক মনে করেন পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে৷ এমন একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে যে, অপরাধীরা এখন আর মুখে কিছু বলে দমে যাচ্ছে না, তারা চায় সরাসরি আক্রমণ করতে৷ ‘‘উগ্র ডানপন্থী কিছু সন্ত্রাসীর আচরণ এখন অনেকটা ক্রাইস্টচার্চের ঘটনার মতো৷ তারা তাদের ম্যানিফেস্টো জানান দিয়েছে, আর সেখান থেকে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হয়ে একই ঘটনার অনুকরণ করছে৷ কাজেই এটা এক ধরনের ঘোষণা দিয়ে আসা বিপর্যয়ই বলতে পারেন৷ যা আসলেই ভয়ংকর,'' বলেন মাজাইক৷
ইসলাম বিদ্বেষী অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে
জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ২০১৮ সালে ৯১০টি ইসলাম বিদ্বেষী হামলার ঘটনা নথিবদ্ধ করেছে৷ সংখ্যাটি ২০১৭ সালের তুলনায় কিছুটা কম৷ সে বছর এই ধরনের ১০৭৫টি অপরাধের ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছিল৷ যদিও মুসলমানদের উপর সরাসরি হামলা আগের চেয়ে ক্রমশ বাড়ছে৷ ২০১৭ সালে যেখানে ৩২ জন আহত হয়েছিল, ২০১৮ সালে তা বেড়ে ৪০ জনে পৌছেছে৷
মুসলিমদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল মনে করে এই সংখ্যা দিয়েও ঠিক বাস্তবতা বোঝা যাবে না৷ কেননা অপরাধের সব ঘটনা পরিসংখ্যানে আসে না৷ হামলার শিকার যারা হয় তাদের একটি বড় অংশই সেগুলো প্রকাশ করেন না৷ আবার পুলিশ এবং তদন্তকারীরা কিছু অপরাধ ভুলভাবে শ্রেণীভুক্ত করে৷ এর ফলেও ইসলাম বিদ্বেষী অনেক ঘটনা বাদ যায়৷ এমনটাই বলা হয়েছে স্থানীয় আঞ্চলিক গণমাধ্যম ‘নয়ে অসনাব্রুকার সাইটুং' এর এক প্রতিবেদনে৷
ইসলামভীতি ছড়িয়ে পড়ছে সমাজের সব স্তরে
এরোফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ইসলাম বিশেষজ্ঞ কাই হাফেজের এক গবেষণায় দেখা গেছে ৫০ ভাগেরও বেশি জার্মান ইসলামভীতি পোষণ করেন৷ থিউরিংগিয়া এবং স্যাক্সোনির মতো কিছু অঞ্চলে এই হার ৭০ ভাগ বা তার চেয়েও বেশি৷ এক সময় প্রবণতাটি সমাজের প্রান্তিক পর্যায়ে থাকলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়ছে বিস্তৃতভাবে৷ জার্মান ‘অ্যান্টি ডিসক্রিমিন্যাশন অ্যাসোসিয়েশন' এর সদস্য বিয়ার্তে ভাইসও বিষয়টি স্বীকার করেন৷ প্রতিদিনই মুসলিমবিদ্বেষী মনোভাব বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি৷
আয়মান মাজাইক ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘থুতু দেয়া বা কড়া দৃষ্টি তেমন ক্ষতিকর অভিজ্ঞতা নয় বরং রাস্তা ঘাটে এখন আমাদেরকে প্রায়ই মৌখিক ও শারীরিক নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়৷ সহনশীলতার মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ক্রমশ, বাড়ছে বর্ণবাদী নিন্দা কিংবা অপমান করার প্রবণতা৷'' মাজাইক বলেন, এই পরিস্থিতির মুখোমুখি এখন মুসলিম আর ইহুদি দুই পক্ষই৷ সংখ্যাগরিষ্ঠের চেয়ে যারাই আলাদা তারাই এমন আচরণের শিকার হচ্ছে৷
মাজাইকের মতে অবস্থা এমন দাড়িয়েছে যে, ‘‘শিশু ও নারীরা এখন মসজিদে আসতে ভয় পায়৷ শুক্রবারের প্রার্থনায় যাওয়ার সময় তারা বিচলিত বোধ করে৷ অনেকে আবার ভয়ে মসজিদে আসাও ছেড়ে দিচ্ছে৷'' তিনি মনে করেন জনগণের স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তার অধিকার রক্ষার জন্য পরিচিত একটি দেশে এমন পরিস্থিতি চলতে পারে না৷ আর সেদিক থেকে হালে শহরে ইহিদিদের সিনাগগের উপর হামলাকে তিনি দেখছেন ‘টার্নিং পয়েন্ট' বা সন্ধিক্ষণ হিসেবে৷
উগ্র ডানপন্থা কীভাবে মোকাবেলা করা যাবে এমন প্রশ্নের জবাবে মাজাইক মুসলিম বিদ্বেষ রোধে একজন কমিশনার নিয়োগের আহবান জানানোর কথা বলেন৷ বিভিন্ন পক্ষের সাথে আলোচনা শুরুর পাশাপাশি নিরাপত্তায় বিনিয়োগের উপরও জোর দেন তিনি৷ বলেন, উগ্র ডানপন্থাকে মোকাবেলা করতে হলে আপনাকে চূড়ান্ত অর্থে মুসলিম বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে৷
কের্স্টেন কিনিপ/এফএস
টাইমলাইন: উগ্র-ডানপন্থিদের সন্ত্রাসী হামলা
গত দশ বছরে উগ্র-ডানপন্থিদের অসংখ্য হামলা করেছে৷ এর মধ্যে কয়েকটি বড় ঘটনার দিকে ফিরে তাকিয়েছে ডয়চে ভেলে৷
ছবি: picture-alliance/empics/PA Wire/D. Lawson
জার্মানি ২০০৯: ড্রেসডেন কোর্টে নারীকে ছুরিকাঘাত
২০০৯ সালের ১ জুলাই, ড্রেসডেনের জেলা জজ আদালতে মারওয়া এল-শেরবিনি নামের নারীকে ছুরির আঘাতে হত্যা করা হয়৷ ঐ নারী ছিলেন একজন ফার্মাসিস্ট৷ স্বামী ও ছেলে সন্তান নিয়ে ড্রেসডেনে থাকতেন৷ ২৮ বছর বয়সি এক রাশিয়ান-জার্মানের বিরুদ্ধে কোর্টে কটূক্তির অভিযোগের সাক্ষ্য দেয়ায়, যুবক হামলা চালান৷ ঐ যুবক মারওয়াকে ‘সন্ত্রাসী’ ও ‘উগ্র মুসলিম’ বলে গাল দিয়েছিলেন৷ মারওয়া জার্মানিতে ইসলামবিদ্বেষের প্রথম হত্যার শিকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Hiekel
নরওয়ে ২০১১: ব্রাইভিকের গণহত্যা
২০১১ সালের ২২ জুলাই অ্যান্ডার্স বেহরিং ব্রাইভিক নামের এক উগ্র ডানপন্থি যুবক একাই দু’টি ঘটনায় ৭৭ জনকে হত্যা করেন৷ তিনি প্রথমে অসলোর সরকারি ভবনে বোমা বিস্ফোরণ করেন এবং এরপর উটোয়া দ্বীপে নিরীহ তরুণদের এক সামার ক্যাম্পে গিয়ে গুলিবর্ষণ করেন৷ হামলার আগে তিনি একটি ইশতাহার প্রকাশ করেন৷ সেখানে তিনি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ‘ইউরোপের ইসলামীকরণ’-এর নিন্দা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Berit
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫: চ্যাপেল হিল শ্যুটিং
২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ৪৬ বছর বয়সি এক ব্যক্তি প্রতিবেশী তিন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করেন৷ নিহতরা হলেন দেয়াহ বারাকাত, তাঁর স্ত্রী ইউসর আবু-সালহা ও তাঁর বোন রাজান আবু-সালহা৷ হামলাকারী হত্যাকাণ্ডের আগে নিজেকে একটি সংঘবদ্ধ ধর্মের বিরোধী বলে উল্লেখ করেন৷ এই হত্যাকাণ্ডে অনলাইনে ব্যাপক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়৷ টুইটারে #MuslimLivesMatter নামে হ্যাশট্যাগ জনপ্রিয় হয়৷
২০১৫ সালের ১৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লেস্টনে এমানুয়েল আফ্রিকান মেথডিস্ট এপিস্কোপাল চার্চে এক শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণপন্থি গুলিবর্ষণ শুরু করেন৷ এটি যুক্তরাষ্ট্রে কালোদের সবচেয়ে পুরোনো চার্চ৷ গুলিতে নয়জন নিরীহ আফ্রিকান-অ্যামেরিকান মারা যান৷ এর মধ্যে একজন যাজকও ছিলেন৷ ২১ বছর বয়সি সেই হত্যাকারীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিদ্বেষমূলক অপরাধে দণ্ডিত করা হয় এবং মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/J. Raedle
জার্মানি ২০১৬: মিউনিখে গুলি
২০১৬ সালের ২২ জুলাই মিউনিখের ১৮ বছর বয়সি এক তরুণ একটি শপিং মলে ঢুকে গুলি করা শুরু করেন৷ এতে ১০ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হন৷ নিহতদের মধ্যে ঐ হামলাকারীও ছিলেন৷ হামলাকারী একজন ইরানি বংশোদ্ভুত জার্মান নাগরিক ছিলেন৷ পুলিশ জানায়, হামলাকারী বর্ণবাদী মন্তব্য করছিলেন৷ তিনি অভিবাসীদের উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছিলেন৷
ছবি: Getty Images/J. Simon
যুক্তরাজ্য ২০১৭: ফিন্সবুরি পার্ক মসজিদে হামলা
২০১৭ সালের ১৯ জুন, ৪৭ বছর বয়সি এক ব্যক্তি উত্তর লন্ডনের ফিন্সবুরি মসজিদের সামনে ভ্যান চালিয়ে দিয়ে একজনকে হত্যা ও ১০ জনকে আহত করেন৷ আক্রান্তরা সবাই মুসলিম ছিলেন এবং রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন৷ ইসলামবিদ্বেষী ওই ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/F. Augstein
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৭: শার্লটসভিলেতে নব্যনাৎসিদের ওপর গাড়ি হামলা
২০১৭ সালের ১২ আগষ্ট ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলেতে এক শ্বেতাঙ্গ নাগরিক বিরোধী শিবিরে হামলা চালান৷ বিরোধী শিবিরটিও সাদাদের ছিল এবং সেখানে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠায় শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী ও নব্য নাৎসিরা জড়ো হন৷ এতে এক নারী নিহত ও অনেকে আহত হন৷
ছবি: Getty Images/AFP/P.J. Richards
ক্যানাডা ২০১৭: কুইবেকে মসজিদে হামলা
২০১৭ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে কুইবেকের ইসলামিক কালচারাল সেন্টারে এক বন্দুকধারী সন্ধ্যার দিকে নামাজ পড়ার সময় হামলা চালান৷ এতে ছয় জন নিহত ও এক ডজনেরও বেশি মানুষ আহত হন৷ ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই হামলাকে জঙ্গি হামলা বলে অভিহিত করেন৷
ছবি: Reuters/M. Belanger
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮: সিনাগগে হামলা
২০১৮ সালের ২৭ অক্টোবর ৪৬ বছর বয়সি এক বন্দুকধারী পিটসবুর্গের ইহুদীদের একটি উপাসনালয়ে হামলা চালান৷ এতে ১১ জন নিহত ও ৭ জন আহত হন৷ হামলাকারী হামলার সময় বারবার ইহুদীবিদ্বেষী মন্তব্য করতে থাকেন৷ মার্কিন ইতিহাসে ইহুদীদের ওপর এটাই সবচেয়ে বড় হামলা৷
ছবি: picture-alliance/AP/M. Rourke
জার্মানি ২০১৯: নববর্ষে বোট্রোপ ও এসেনে হামলা
মধ্যরাতের কিছু পর যখন সবাই নিউইয়ার উদযাপন করছিলেন, তখন ৫০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের দু’টি শহর বোট্রোপ ও এসেনে হামলা চালান৷ তিনি তার গাড়ি উদযাপনরত অভিবাসীদের ওপর চালিয়ে দেন৷ বোট্রোপে গাড়ি উঠিয়ে দেন সিরিয়ান ও আফগান দু’টি পরিবারের সদস্যদের ওপর৷ এতে আট জন আহত হন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kusch
নিউজিল্যান্ড ২০১৯: ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে হামলা
ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে জোড়া হামলায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন৷ একে উগ্র ডানপন্থিদের জঙ্গি হামলা বলে চিহ্নিত করেছে কর্তৃপক্ষ৷ বন্দুকধারী ব্যক্তি তার বর্ণবাদী ও ইসলামবিদ্বেষী ইশতাহার অনলাইনে প্রকাশ করেন এবং হামলার ঘটনা লাইভস্ট্রিম করেন৷ কিউই প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন ঘটনাকে নিউজিল্যান্ডের ‘একটি অন্ধকারতম দিন’ বলে মন্তব্য করেন৷