জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৫০৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট, যা একটি রেকর্ড৷ মারা গেছেন ১৬৬ জন৷ সবমিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১১ হাজার ০৯৬ জন৷
বিজ্ঞাপন
এদিকে, সংক্রমণ বাড়ছে ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও৷
ইউরোপে করোনা সংক্রমণের হার মারাত্মক আকার ধারণ করছে৷ মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপের সামনে কঠিন সময় আসবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপের পরিচালক হান্স ক্লুগে৷ তিনি সবাইকে এক সাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন৷
ব্রিটেন: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইংল্যান্ডে সংক্রমণের হার কমাতে দ্বিতীয় লকডাউনের পাশাপাশি সকলকে একসাথে করোনা মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছেন৷ বাড়িতে থাকা এবং পুনরায় দোকানপাট চার সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার কথা বলেছেন৷
সুইডেন: প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোভেন স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে আছেন৷ তিনি নিজের ফেসবুকে সুইডেনে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা ছয় হাজারের বেশি, এই তথ্য জানিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন৷
গ্রিস: এ সপ্তাহে সংক্রমণের হার ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে তিন সপ্তাহের জন্য দেশব্যাপী আবারো লকডাউন দেওয়া হয়েছে৷
ডেনমার্ক: ১২ জন করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে যাদের সংক্রমণের উৎস মিংক জন্তু৷ যে কারণে ডেনমার্ক উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন উত্তর জটল্যান্ডের সাতটি অঞ্চলের মানুষকে করোনা পরীক্ষা করাতে এবং বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেছেন এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন৷
নরওয়ে: ইউরোপের সর্বনিম্ন সংক্রমণের দেশ হলেও সেখানে গত সপ্তাহে সংক্রমণের হার অনেক বেড়ে গেছে৷ ফলে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এর্না সলবার্গ জনগণকে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ এড়াতে এবং বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেছেন৷
শ্রীলঙ্কা: কারফিউ তুলে নেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ তবে বলা হয়েছে করোনার বিস্তার রোধে সবাইকে নিজে থেকেই সতর্ক ও সাবধান থাকতে হবে৷
ভারত: গত বৃহস্পতিবার ৫০ হাজারের বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং রাজধানী দিল্লিতেও সংক্রমণের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭০৪ জনের প্রাণহানির খবর জানিয়েছে৷ ফলে ভারতের মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৪,৩১৫-তে৷
যুক্তরাষ্ট্র: অ্যামেরিকায় বৃহস্পতিবার নতুন সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড করেছে৷ বিশ্বব্যাপী করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটি৷ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪,৮৮,২৭৬৷ মারা গেছেন ২,৩৩,৭৩৪ জন৷
এনএস/জেড এইচ (এএফপি, এপি, রয়টার্স)
করোনা বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের বিস্তার রোধে নেয়া সব ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে৷ সপ্তাহান্তে রাজধানী বার্লিনের বিক্ষোভ সমাবেশে ছিলেন ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ৷ ছবিঘরে বিস্তারিত...
ছবি: Reuters/A. Schmidt
বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে মরিচের গুঁড়া
বিক্ষোভে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে পুলিশ একসময় খুব কাছ থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর পানিতে মেশানো মরিচের গুঁড়া স্প্রে করতে শুরু করে৷
ছবি: Reuters/C. Mang
অভিনব প্রতিবাদ
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে যেসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সবার প্রতিবাদ দৃষ্টিকটু ছিল না৷ ছবির এই বিক্ষোভকারীর মতো কেউ কেউ ফুল হাতেও নেমেছিলেন বিক্ষোভে৷
ছবি: Reuters/C. Mang
মুখোমুখি
বার্লিনের বিক্ষোভ একসময় রাইশটাগ পর্যন্ত পৌঁছে যায়৷ পুলিশের বাধার মুখে কারো পক্ষেই অবশ্য ভবনে ঢোকা সম্ভব হয়নি৷
ছবি: Reuters/C. Mang
কোথায় সামাজিক দূরত্ব?
বিক্ষোভে স্বাস্থবিধি অগ্রাহ্য করতে সম্ভব সব কিছুই করেছেন বিক্ষোভকারীরা৷ অনেকে তো রাস্তা দখল করে হাতে হাত ধরে রীতিমতো নাচ শুরু করে দেন!
ছবি: Reuters/A. Schmidt
তিন শতাধিক গ্রেপ্তার
বিক্ষোভ মিছিল থেকে তিনশ’রও বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ছবিতে এক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারের আগে মাটিতে চেপে ধরেছে পুলিশ৷
ছবি: Reuters/C. Mang
দেশজুড়ে বিক্ষোভ
শনিবার রাজধানীতে হলেও তার আগে জার্মানির অনেক শহরেই হয়েছে স্বাস্থ্যবিধিবিরোধী বিক্ষোভ৷ একজনের হাতের প্ল্যাকার্ডে তারই বিবরণ৷
ছবি: Reuters/A. Schmidt
সব ষড়যন্ত্র!
বিক্ষোভকারীদের অনেকেরই বিশ্বাস স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা আসলে এক ষড়যন্ত্রের অংশ৷ এক বিক্ষোভকারীর হাতের প্ল্যাকার্ডে তাই লেখা, ‘‘ বড় ভাইয়েরা আপনাকে মুখোশ পরিয়ে দিচ্ছে৷’’
ছবি: Reuters/A. Schmidt
মুখোশ যখন অন্তর্বাস
স্বাস্থ্যবিধিকে কটাক্ষ করতে এক বিক্ষোভকারী এসেছিলে অন্তর্বাসে নাক-মুখ ঢেকে৷
ছবি: Reuters/A. Schmidt
ম্যার্কেলবিরোধিতা
বিক্ষোভকারীরা মনে করেন, করোনা সংক্রমণের ভয় দেখানো এক ধরনের মিথ্যাচার৷ম্যার্কেল সরকার এর মাধ্যমে মানুষকে ঘরে বসে থাকতে বাধ্য করছে বলেও মনে করেন তারা৷ এই মিথ্যাচার বন্ধ করে ম্যার্কেলকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতেও বলেছেন বিক্ষোভকারীদের অনেকে৷
ছবি: Reuters/A. Schmidt
ম্যার্কেল অপরাধী!
‘করোনার নামে’ মানুষের চলাফেরা, কাজকর্মে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করায় জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলসহ অনেকের শাস্তি দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা৷
ছবি: Reuters/A. Schmidt
গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা
বিক্ষোভ সমাবেশে ভারতকে অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশশাসনমুক্ত করা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়৷ তার এক বিশাল পোস্টারে লেখা ছিল ‘স্বাধীনতা + আন্তনিয়ন্ত্রণ৷’
ছবি: Reuters/A. Schmidt
সংবাদ মাধ্যমকে ধিক্কার
করোনাকালে জার্মানির সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন অনেকে৷ এক বিক্ষোভকারীর হাতের প্ল্যকার্ডে লেখা, ‘‘ প্রেস, ছি লজ্জা!’’