২০১৮ সালে জার্মানিতে প্রচণ্ড খরা দেখা দিয়েছিল৷ সেই সময় মাটির যে ক্ষতি হয়েছিল তা এখনো কাটিয়ে ওঠা যায়নি৷ এবারও খরার আশঙ্কা করছেন জার্মান কৃষকরা৷
বিজ্ঞাপন
ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের কৃষক টিম ডেটার তার খেতের মাটি পরীক্ষা করে দেখেছেন, গত কয়েক বছরের খরার কারণে মাটি অনেকখানি শুকিয়ে গেছে৷ এবছরও খরার আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ কারণ এ বছর খুব কম বৃষ্টি হচ্ছে৷ ফসলের উপর তার প্রভাব পড়ছে৷ পানির অভাবে মাটি থেকে পর্যাপ্ত পুষ্টি পাওয়া যাচ্ছে না৷ ফলে তাদের বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে, এমনকি মারাও যাচ্ছে৷
মাটির গভীরেও পানি কম পাওয়া যাচ্ছে, যা কৃষকদের জন্য এক সমস্যা৷
টিম ডেটার বলেন, ‘‘বিক্রি করার মতো পর্যাপ্ত ফসল পাওয়া যাচ্ছে না৷ ফলে টাকা কম পাচ্ছি৷ আবার ফসল কম হওয়ায় কিনতেও হচ্ছে বেশি৷’’
খরায় জার্মানির কৃষকদের ভরসা স্বয়ংক্রিয় সেচ
04:11
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জেট স্ট্রিম নামে পরিচিত বায়ুপ্রবাহের চলার ধরন বদলে যাচ্ছে৷ এটি সাধারণত সরল পথে চলে৷ কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, উত্তর মেরুতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে জেট স্ট্রিমের চলার পথে ঢেউ তৈরি হচ্ছে৷ এই পরিবর্তনই উত্তর অ্যামেরিকা ও ইউরোপের চরম আবহাওয়ার জন্য দায়ী৷
হেল্মহলৎস সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের লুই সামানিগো-ইগুইগুরেন বলছেন, ‘‘এই পরিবর্তন আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চল ও গ্রীষ্মমন্ডলীয় এলাকা থেকে আসা গরম হাওয়ার পরিমাণকে প্রভাবিত করে৷ এই দুটি ফ্রন্ট যেখানে মুখোমুখি হয় সেখানে ঢেউ তৈরি হয়৷ সবকিছু ঠিক থাকলে জেট স্ট্রিম স্থিতিশীল থাকে৷ ফলে আপনি স্বাভাবিক আবহাওয়া আশা করতে পারেন৷ কিন্তু যদি কিছু প্রবাহ বেশি উত্তর বা বেশি দক্ষিণে সরে যায়, তাহলে তাপপ্রবাহ বাড়তে পারে৷’’
তিনি বলেন, ‘‘গরম হাওয়া উত্তর দিকে সরে আসার মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ২০০৩ সালে ১০ দিনের মতো দেখা যেত, আর এখন দেখা যাচ্ছে প্রায় ৩০ দিন৷ এর আগে এত সময় ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়নি৷’’
টিম ডেটার ভাগ্যবান কৃষক৷ কারণ তার স্বয়ংক্রিয় সেচের ব্যবস্থা আছে, যা বিশ্বের অনেক দেশেই নেই৷ এমন ব্যবস্থার কারণে জরুরি অবস্থায়ও তিনি সেচ দিতে পারেন৷ এবং সর্বোচ্চ খারাপ পরিস্থিতিটা এড়াতে পারেন৷ তবে তার আশঙ্কা, ভবিষ্যতে হয়ত এই পদ্ধতি আর কাজ নাও করতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘বন্যা আর খরার মতো চরম আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার পরিকল্পনা করা খুব কঠিন৷ এর একটা আর্থিক প্রভাবও আছে৷ এই অবস্থায় টিকে থাকতে কী করা উচিত তা আপনাকে ভাবতে হবে৷’’
এখন পর্যন্ত টিম ডেটার স্বাভাবিক কাজ করে যেতে পারছেন৷ তবে তিনি এখনও জানেন না, এ বছরটা কেমন যাবে৷ অন্য কৃষকদের মতো তার আশা, এবার যেন একটু বেশি বৃষ্টি হয়৷
লুইস অসবর্ন/জেডএইচ
২০১৯ সালের ছবিঘর দেখুন...
ছবিতে এ বছরের প্রাকৃতিক দুর্যোগ
এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে৷ বাদ পড়েনি আমাজনও, কিংবা প্রশান্ত মহাসগরের মানবহীন দ্বীপ৷ বিভিন্ন স্থানে ঘটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিশেষ কিছু মুহূর্ত ধরা পড়েছে সাংবাদিকদের ক্যামেরায়৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: REUTERS
জ্বলছে আমাজন
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আগুন লেগেছিল পৃথিবীর ফুসফুস আমাজনে৷ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে হাজার একর বন আর অসংখ্য প্রাণী৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে পুড়ছে সবুজ গাছ৷
ছবি: REUTERS
একমুঠো খাবারের জন্য
সাইক্লোন ইডাইয়ের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছিল মোজাম্বিক ও জিম্বাবুয়ে৷ তীব্র খাদ্য আর চিকিৎসা সঙ্কটে পড়েছিল হাজার হাজার মানুষ৷ হেলিকপ্টারে করে ত্রাণ সহায়তা পাঠায় বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা৷ এ সময় একমুঠো খাবারের জন্য এভাবেই ছুটছিল মানুষ৷
ছবি: Reuters/S. Sibeko
ভুলি নাই প্রভু
থাইল্যান্ডে দেখা দিয়েছিল তীব্র খরা৷ খরায় শুকিয়ে যাওয়া এটি ড্যামের পাশেই বসানো ছিল মস্তকবিহীন বুদ্ধের মুর্তি৷ খাদ্য সঙ্কটে পড়া এ অঞ্চলের বাসিন্দারা কিন্তু ভুলেননি বুদ্ধকে৷ ছবিতে দেখা যাচ্ছে বুদ্ধের সামনে প্রার্থনারত একটি পরিবার৷
দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রাফ-রাইনেট অঞ্চলের ছবি এটি৷ অনাবৃষ্টিতে চৌচির মাঠ-ঘাট৷ আকাশে মেঘের দেখা মিলেছে বলে এক ফোঁটা বৃষ্টির প্রতীক্ষা করছে সবাই৷
ছবি: REUTERS
গনগনে লাভা
ইটালির স্ট্রাম্বলি দ্বীপের স্টাম্বলি আগ্নেয়গিরি গর্জে উঠেছিল এবছর৷ বাড়ি-ঘর ছাড়া হয়েছিল শতশত মানুষ৷ আগ্নেয়গিরির গনগনে এ লাভা দেখে কিছুটা হলেও অনুমান করা যাবে এর ভয়াবহতা৷
ছবি: Reuters/A. Parrinello
সমুদ্রে নয়, রাস্তায় নৌকা
আগ্নেয়গিরি উদগীরণ আর ভয়াবহ বন্যা মিলিয়ে এ বছর দুর্যোগের অনেক ধকল সয়েছে ইটালিবাসী৷ দেশটির ভেনিস শহরে রেকর্ড মাত্রার বন্যা হয়েছে এ বছর৷ বন্যার পানি নগরীর বন্দরে নোঙ্গর করে রাখা অনেক জলযানকে নিয়ে এসেছে বাসা বাড়ির আঙ্গিনায়৷
ছবি: Reuters/M. Silvestri
দুর্যোগ দেখা মহাকাশ থেকে
উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরের কুরিল দ্বীপের একটি আগ্নেয়গিরির ছবি এটি৷ ধোয়ায় ঘুর্ণিপাকের এ ছবিটি তোলা হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্র থেকে৷
ছবি: Reuters/NASA/Expedition 59 Crew
দাবানলের শিখা
দাবানলে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়া৷ দাবানল থেকে এ বছর রেহাই পায়নি যুক্তরাষ্ট্রও৷ পশ্চিম লস এন্জেলেসের একটি হাইওয়ে গত অক্টোবের নেওয়া এ ছবিটি দেখাচ্ছে শহরটিকে কীভাবে আক্রান্ত করেছে দাবানল৷
ছবি: Reuters/G. Blevins
ক্লান্ত মেষপালক
দক্ষিণ ভারতের চেন্নাইয়ের ছবি এটি৷ খরায় সৃষ্ট দুর্যোগের ফলে দিশেহারা মেষপালকেরা৷
ছবি: Reuters/P. Ravikuma
শুধুই ধ্বংসস্তুপ!
বাহামার আবাকো আইল্যান্ডে সেপ্টেম্বর মাসে আঘাত হানে হারিকেন ডোরিয়ান৷ বসতবাড়িকে ধ্বংসস্তুপ বানিয়ে ফেলা এ হারিকেনের অঘাতের পর এমনি দেখা যাচ্ছিল বসতবাড়িগুলোকে৷