1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে আবার ‘বৃহৎ জোট'?

১৪ ডিসেম্বর ২০১৭

সিডিইউ-সিএসইউ দল ইতিমধ্যেই আলাপ-আলোচনা শুরু করতে চায়, কিন্তু এসপিডি দল এখনও নিশ্চিত নয়৷ তিন দলের সভাপতি এই প্রথম একটি বৈঠকে বসবার পর একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি ছাড়া আর কিছু দেননি ৷

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: picture alliance/dpa/M. Gambarini

তিন দলের তিন বিধাতার বৈঠকটি যে কোথায় হবে, তাও গোপন রাখা হয়েছিল: চ্যান্সেলরের দপ্তরে? নাকি বুন্ডেসটাগে? নাকি কোনো ইটালিয়ান রেস্টুরেন্টে? কোথায় যাবেন আলোকচিত্রীরা? শেষমেষ দেখা গেল, বুন্ডেসটাগ, অর্থাৎ জার্মান সংসদ ভবনেই মিটিং বসছে, সিডিইউ-সিএসইউ দলের সংসদীয় গোষ্ঠীর প্রধান ফল্কার কাউডার-এর অফিসে৷ সন্ধ্যে ছ'টা নাগাদ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল (সিডিইউ), হর্স্ট সেহোফার (সিএসইউ) ও সিএসইউ সংসদীয় গোষ্ঠীর প্রধান আলেক্সান্ডার ডোব্রিন্টকে বুন্ডেসটাগে যেতে দেখা যায়৷ তার কিছু পরেই এসপিডি সভাপতি মার্টিন শুলৎস ও দলের সংসদীয় গোষ্ঠীর প্রধান আন্ড্রেয়া নালেস এসে উপস্থিত হন৷ বৈঠক চলে আড়াই ঘণ্টা ধরে৷

বৈঠকের পরে কোনো নেতাই কোনো মৌখিক বিবৃতি দেননি, শুধু একটি সংক্ষিপ্ত লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আলাপ-আলোচনা ‘‘মুক্ত ও আস্থাপূর্ণ'' ছিল৷ আলাপ-আলোচনায় সিডিইউ-সিএসইউ দল একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা শুরু করার সপক্ষে মতপ্রকাশ করেছে৷ এসপিডি দল বলেছে, তারা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আরো কিছু সময় চায়৷ সামাজিক গণতন্ত্রীরা দৃশ্যত জোট সরকার গঠন সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা শুরু করার ব্যাপারে শুক্রবার কথাবার্তা বলবে ও সিদ্ধান্ত নেবে৷

প্রথমে লুকোছাপা, তারপর এই সংক্ষিপ্ত বিবৃতি – কিন্তু কেন? ইতিপূর্বে মুক্ত গণতন্ত্রী ও সবুজদের সঙ্গে ইউনিয়ন দলগুলির ‘জামাইকা জোট' গঠন সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা ক্যামেরা, টুইট আর সাক্ষাৎকারের বন্যায় প্রায় ভেসে গিয়েছিল, কিন্তু শেষমেষ কোনো ফললাভ হয়নি৷ তাই দলীয় প্রধানরা এবার সাবধানে এগোতে চান৷ প্রাথমিক সংলাপে তাঁরা ছ'জনে মিলে ‘বৃহৎ জোটের' নতুন সংস্করণ বাজারে ছাড়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা কতটা, সেটা যাচাই করতে চেয়েছেন৷ দু'পক্ষের আস্থা আপাতত এতই ক্ষণভঙ্গুর যে, একটি অসাবধানী মন্তব্য বা টুইটেই তা গুঁড়িয়ে যেতে পারে৷

জামাইকা জোটের নতুনত্ব, প্রত্যাশা ও আশাবাদিতা এবার একেবারে অনুপস্থিত না হলেও, অন্তঃসলিলা – কাজেই সংসদীয় সমিতির বারান্দা থেকে দলীয় প্রতিনিধিরা প্রথমে পূর্ণ আস্থা নিয়ে, পরে গোমড়া মুখ করে কিভাবে হাত নাড়ছেন, সে ধরণের ফটো অপ এবার দেখা যাবে না৷

সংযত, কিন্তু দ্বিধাগ্রস্ত নয়

জামাইকা উচ্ছ্বাসের পর যে দু'পক্ষ এবার পুরোপুরি নীরব, তা নয়৷ বৈঠক শুরু হবার আগেই দু'পক্ষের রাজনীতিকরা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে নানা ধরণের দাবির কথা উল্লেখ করেছেন – এবং সঙ্গে সঙ্গে অপর পক্ষ থেকে তার জবাবও এসেছে৷ কাজেই এবারের বৈঠকে পরিবেশ যে একেবারে উত্তেজনাবিহীন ছিল না, তা অনুমান করা যায়৷ নির্বাচনের পর পরই এসপিডি দলনেতা শুলৎস ‘বৃহৎ জোটের' পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা নাকচ করেন, অপরদিকে সবুজ আর মুক্ত গণতন্ত্রীরা তাদের সব পুরনো কাজিয়া ভুলে জামাইকা জোটে সামিল হবার প্রস্তুতি নেয়৷ সে স্বপ্নভঙ্গ হবার পর আবার কেঁচে গণ্ডূষ করে ‘বৃহৎ জোট'? ফেডারাল জার্মান প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে সরকার গঠন এর চাইতে সমস্যাকর ও জটিল আগে কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না৷ 

বিশেষ করে চাপে পড়েছে সামাজিক গণতন্ত্রীরা৷ গত সংসদীয় নির্বাচনে এসপিডি দল তাদের চিরকালের সর্বনিকৃষ্ট ফলাফল করে৷ জনতা বৃহৎ জোট চায় না, এই সিদ্ধান্তে আসেন সামাজিক গণতন্ত্রীরা৷ তাহলে নতুন করে বৃহৎ জোট গঠন করে কি কোনো লাভ আছে? তাতে কি এসপিডি-র শুধু ক্ষতিই হবে না? অপরদিকে দলপ্রধান মার্টিন শুলৎস জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ারের যুক্তিও ফেলতে পারেননি৷ ‘‘রাজনৈতিক দায়িত্ব পাবার জন্য নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর, সেই দায়িত্ব হাতে এলে, তা অস্বীকার করা সম্ভব নয়,'' বলেছিলেন স্টাইনমায়ার৷ কাজেই শুলৎসকে দলের আপামর সদস্যদের কাছ থেকে নতুন সনদ নিয়ে ইউনিয়নের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় নামতে হয় – তবে তাঁর শর্ত ছিল, আলাপ-আলোচনার ফলাফল আগে থেকে ঠিক করলে চলবে না৷

‘সহযোগিতা জোট' না ‘বৃহৎ জোট'?

এক কথায়, সরকার গঠনের অন্যান্য মডেল নিয়েও আলোচনা করতে চায় এসপিডি৷ যেমন দলের বামঘেঁষা সদস্যরা বৃহৎ জোটের পরিবর্তে একটি ‘সহযোগিতা জোটের' ধুয়ো তুলেছেন৷ এর অর্থ, জোট সহযোগীরা কয়েকটি বিষয়ে তাদের যৌথ লক্ষ্য সম্পর্কে একমত হলেও, অপরাপর বিতর্কিত বিষয়গুলি খোলা থাকবে, অর্থাৎ অনির্ধারিত থাকবে৷ নেতৃস্থানীয় সিডিইউ-সিএসইউ রাজনীতিকরা সঙ্গে-সঙ্গে এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন; তাদের মতে, হয় পুরোপুরি এক জোটে, নয়তো আদৌ নয়৷ সিএসইউ প্রধান সেহোফার বলেছেন, ‘‘শিশুসুলভ'' প্রস্তাব৷

এসপিডি দল জোটের বাইরে থেকে একটি সংখ্যালঘু সিডিইউ-সিএসইউ সরকারকে সমর্থন করবে, এই প্রস্তাবেও ইউনিয়ন দলগুলি সুখি নয়৷ তারা চান জার্মানির জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার – ম্যার্কেলযেমন একাধিকবার বলেছেন৷ বৃহৎ জোটের সপক্ষে ইউনিয়ন দলগুলির যুক্তি হল, নতুন বৃহৎ জোটকে যে পুরনো বৃহৎ জোটের নকল হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই, বরং তা একটা নবসূচনা হতে পারে৷ সেই নবসূচনা নির্ভর করবে দু'পক্ষের আলাপ-আলোচনার উপর৷

ম্যার্কেল চান ‘তৃতীয় বৃহৎ জোট'

সেই বৃহৎ জোটের নীতি কি হবে, তা নিয়েও ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে৷ যেমন এসপিডি দল চায় সকলের জন্য একটি সমান ও সাধারণ স্বাস্থ্য বীমা; এছাড়া এসপিডি চায় যে, উদ্বাস্তুদের পুনরায় তাদের পরিবারবর্গকে জার্মানিতে নিয়ে আসার সুযোগ দেওয়া হোক৷ ইউনিয়ন দলগুলি উভয়েরই বিরোধী৷ তবে আঙ্গেলা ম্যার্কেল স্বভাবতই চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত থাকতে চান, কাজেই তিনি ইতিমধ্যেই কাজিয়া শুরু করার বিরুদ্ধে৷ তিনি নাকি এসপিডি দলের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঐকমত্যের সম্ভাবনা দেখেন, বলে বুধবার ম্যার্কেলকে বলতে শোনা গেছে৷ বৃহস্পতিবার ম্যার্কেল একটি টেলিফোন কনফারেন্সে দলের নেতৃবর্গকে এসপিডি-র সঙ্গে তাঁর কথাবার্তার ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করবেন৷ আর সামাজিক গণতন্ত্রীদের সিদ্ধান্ত জানা যাবে শুক্রবার৷ তার অর্থ কি সপ্তাহান্তের মধ্যেই জার্মানিতে তৃতীয় বৃহৎ জোট?

ক্রমশ প্রকাশ্য৷

নিনা ভ্যার্কহয়জার, সাবিনে কিনকার্ৎস/এসি

জার্মানিতে তবে কি মহাজোট সরকারই গঠন হবে? জানান আমাদের, লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ