যে দেশে মানুষ আছে, সে দেশে ঘুস থাকবেই, থাকবে দুর্নীতি৷ জার্মানিও তার ব্যতিক্রম নয়৷ তবে এখানে ব্যক্তি পর্যায়ে ছোটখাট ঘুস নেওয়া কিংবা দেওয়ার রেওয়াজ বিশেষ নেই৷ মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডারের দেশ এটি৷
বিজ্ঞাপন
জীবনের অর্ধেক কাটিয়েছি উপমহাদেশে, বাকি অর্ধেক জার্মানিতে৷ আজ যখন কেউ জিগ্যেস করেন, তফাৎটা কোথায়, তখন আমি বলি: ‘‘জানেন তো, জার্মানিতে ৩৫ বছর কাটালাম বিদেশি-বহিরাগত হিসেবে৷ কিন্তু আজ অবধি কোনো কাজের জন্য চেনাশোনা কোনো কর্তাব্যক্তিকে টেলিফোন করতে হয়নি – অর্থাৎ বলতে বা তাকে দিয়ে বলাতে হয়নি, তা সে টেলিফোন কনেকশানই হোক আর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোই হোক৷ আর ঘুস?''
জার্মানির কথা বলার আগে দেশের দু'টো অভিজ্ঞতার কথা বলি৷ বহু যুগ আগে যখন রাতের প্যাসেঞ্জারে থার্ড ক্লাস টু-টায়ার কম্পার্টমেন্টে রিজার্ভেশন ছাড়া চেপে হাওড়া থেকে পুরুলিয়া যেতাম, তখন সরকারবাবু নামের এক গার্ড ট্রেন ছাড়বার পরে বাকি বার্থগুলো বিলি করতেন এই বলে: ‘পয়সা তো দিতেই হবে৷ তা কোন সরকারকে দেবেন? এই সরকারকে, না ভারত সরকারকে?' জার্মানিতে গার্ডরা প্রধানত সিট রিজার্ভেশন বিলি করে থাকেন৷ তবে সেজন্য কোনো গার্ড কখনো পয়সা নিয়েছেন বলে আজ পর্যন্ত শুনিনি৷
দ্বিতীয় কাহিনি, এটাও ট্রেনের৷ স্থানটা কলকাতা৷ দেশে গেছি, যাব কলকাতা থেকে দিল্লি৷ ছোটভাই রেলের অফিসার, সে-ই বলে দিয়েছিল, তাই অত কম সময়ের মধ্যেও যাহোক একটা রিজার্ভেশন পাওয়া যাচ্ছিল৷ বুকিং অফিসে গিয়ে ভাইয়ের নামধাম বললাম; কাউন্টারের ক্লার্কটি সঙ্গে সঙ্গে টিকিট করে দিলেন – সে আমলে ৯০ টাকার কিছু বেশি৷ একশ' টাকার নোট দিয়ে খুচরোর অপেক্ষায় আছি, দেখি ক্লার্ক ভদ্রলোক নড়াচড়া করেন না৷ আমতা আমতা করে বললাম: ‘বাকিটা?' করণিক মহোদয় অবাক হয়ে বললেন: ‘সেকি, পান খাওয়ার পয়সা দেবেন না?' আমাকে পাঠিয়েছে কিন্তু তার অফিসার৷
ব্যবসা পেতে যেসব দেশ বেশি ঘুস দেয়
দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বা টিআই প্রতিবছর দুর্নীতির সূচক প্রকাশ করে৷ মাঝেমধ্যে তারা ঘুস নিয়েও কাজ করে৷
ছবি: Imago/blickwinkel
চুক্তি পেতে
একটি দেশের বড় কোম্পানি অন্য দেশের রাস্তাঘাট, সেতুসহ সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের সুযোগ পেতে অনেকসময় ঘুসের সহায়তা নিয়ে থাকে৷ অর্থাৎ কাজের অর্ডার পেতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে ঘুস দিয়ে থাকে৷ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বা টিআই এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছে৷
ছবি: Imago/Xinhua/Lyu Tianran
ঘুস দাতা সূচক
হ্যাঁ, ১৯৯৯ সালে টিআই প্রথমবারের মতো এই শীর্ষক একটি সূচক প্রকাশ করে৷ এরপর মোট পাঁচবার সূচক প্রকাশ করেছে সংস্থাটি৷ সবশেষটি করেছে ২০১১ সালে৷ সেই সময় ২৮টি দেশকে সূচকের আওতায় নিয়ে আসা হয়৷ এই দেশগুলো বিশ্বব্যাপী পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ লেনদেনের প্রায় ৮০ শতাংশের সঙ্গে জড়িত৷
ছবি: Imago/blickwinkel
রাশিয়া শীর্ষে
অর্থাৎ রুশ কোম্পানিগুলো অন্যদেশের কন্ট্রাক্ট পেতে সবচেয়ে বেশি ঘুসের আশ্রয় নিয়েছে৷ এরপর আছে চীন৷ ২০১০ সালে এই দু’টি দেশের কোম্পানিগুলো নিজ দেশের বাইরে ১২০ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বিনিয়োগ করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Litvinenko
অন্যদিক দিয়ে শীর্ষে নেদারল্যান্ডস
ইউরোপের এই দেশের কোম্পানিগুলো অন্যদেশে কার্যাদেশ পেতে সবচেয়ে কম ঘুসের সহায়তা নিয়েছে৷ তারপর ক্রমান্বয়ে আছে সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম আর জার্মানি৷
ছবি: Colourbox/jonnysek
নয়-এ ভারত
সবচেয়ে বেশি ঘুস দেয়া দেশের তালিকায় ভারত আছে নয় নম্বরে৷ এছাড়া ইন্দোনেশিয়া আছে চার আর সৌদি আরব সাত-এ৷
ছবি: Getty Images
কোন খাতে বেশি ঘুস
ঘুস লেনদেন হয় এমন ১৯টি খাতেরও তালিকা করেছে টিআই৷ এতে দেখা যাচ্ছে, সরকারি কাজের চুক্তি পেতে সবচেয়ে বেশি ঘুস লেনদেন হয়৷ এরপরেই আছে নির্মাণকাজ, সেবা, রিয়েল স্টেট, তেল, গ্যাস, মাইনিং ইত্যাদি৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঘুসের নেতিবাচক দিক
টিআই বলছে, বিদেশি কোম্পানিগুলোর ঘুস দেয়ার বিষয়টি বিভিন্ন দেশের মানুষের ভালমন্দের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে৷ এতে করে কন্ট্রাক্ট দেয়ার বিষয়টি পক্ষপাতহীন হয় না, মৌলিক জনসেবার গুনগত মান কমে যায়, প্রতিযোগিতামূলক বেসরকারি খাত গড়ে ওঠার সুযোগ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যায়৷
ছবি: picture alliance/CTK
৩০ দেশের উপর গবেষণা
বিদেশ বিনিয়োগ বেশি হয় এবং আমদানি বেশি করে এমন বড় ৩০টি দেশের সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৩,০১৬ জন কর্মকর্তার উপর জরিপ করে সূচকটি তৈরি করেছে টিআই৷
ছবি: Imago/blickwinkel
8 ছবি1 | 8
আমার থিওরি হলো যে, কর্মচারীদের যদি বেঁচে থাকার মতো সঠিক মাইনে না দেওয়া হয়, তবে তারা নিজেরাই কাস্টমারদের ওপর ঘুসের সারচার্জ বসিয়ে মাইনে বাড়িয়ে নেবে৷ জার্মানিতে মানুষজনের মাইনে এত বেশি যে, তাদের চুরি করার দরকার পড়ে না – থুড়ি, হাত পাতার দরকার পড়ে না৷ তার কারণ – আমার আরেক থিওরি – পৃথিবীতে আসলে চোর বলে কিছু নেই, আছে শুধু গরিব লোক৷ জার্মানিতে একজন বাস ড্রাইভারের মাইনে ইউরোপের অন্যান্য অনেক দেশের প্রফেসরদের সমান৷ কাজেই এ দেশের সাধারণ লোক ছুঁচো মেরে হাত গন্ধ করে না৷
এদেশে হয় পুকুর চুরি৷ জার্মানিতে ঘুস দেওয়া-নেওয়া আর দুর্নীতির খেলাটা খেলেন প্রাইভেট কোম্পানি আর রাজনীতিকরা – ক্ষেত্রবিশেষে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল৷ সে অনেক টাকার খেলা৷ অফিস থেকে প্রিন্টারের কাগজ নিয়ে যাওয়া, বা সরকারি কনট্র্যাক্টের উপর নির্ভরশীল কোনো কোম্পানিকে ডাকিয়ে নিখরচায় নিজের বাড়ির বাগানটা করিয়ে নেওয়া – অথবা কোনো ‘বন্ধু' কিংবা ‘শুভানুধ্যায়ী'-কে দিয়ে হোটেলের বিলটা দিইয়ে নেওয়া, জার্মানির এক সাবেক প্রেসিডেন্ট যা করতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছিলেন – এগুলোকে আমি চুরি না বলে ছ্যাঁচড়ামো বলি, যা সব দেশেই আছে৷
এ দেশে ঘুস বলতে মিলিয়ন্স, পিনাট্স নয় – অর্থাৎ কোটি কোটি টাকা এদিক থেকে ওদিক চলে যায়, যেন আকাশে এরোপ্লেন উড়ছে, মাটির মানুষ তা দেখতে পাচ্ছে না৷ জার্মান কোম্পানিগুলো যত না ঘুস খায়, তার চেয়ে বেশি ঘুস দেয় – বলে বাজারে তাদের দুর্নাম আছে, যেমন মধ্যপ্রাচ্যে কিংবা দক্ষিণ অ্যামেরিকায়৷ অন্যান্য হাতিমির বহুজাতিক কোম্পানির মতোই জার্মান কোম্পানিরাও পারলে প্রেসিডেন্ট কেনে, কেনে প্রাইম মিনিস্টার – কনট্র্যাক্ট চাই তো, না হলে কারখানার চাকা ঘুরবে কি করে?
এদেশে আরেকটা খেলা হল, বড় বড় সরকারি প্রকল্প নির্মাণের সময় আর খরচ, দু'টোই বাড়তে থাকে চক্রবৃদ্ধি হারে৷ হামবুর্গের এলব ফিলহার্মনি, বার্লিনের বিইআর বিমানবন্দর, স্টুটগার্টের রেলওয়ে স্টেশন, কতো নাম করব৷ সর্বত্রই একই কাহিনি: গোড়ায় যা খরচ ধরা হয়, শেষমেষ তার পাঁচগুণ খরচ পড়ে, সময়ও লাগে অনেক বেশি৷ এক্ষেত্রে আমার থিওরি হলো, টাকা এদেশে বাতাসে উড়ছে, পঙ্গপালের মতো৷ সেই টাকা ধরে খাওয়ার জন্য পাবলিক প্রকল্প লাগে৷ পাবলিক প্রকল্পের দেখাশোনার দায়িত্বে আবার রাজনীতি, কাজেই রাজনীতিকেও তো কিছু ফড়িং ধরে দিতে হবে?
বলতে কি, এদেশে এত টাকা যে, ২০১৫ সাল যাবৎ শুধু ভাঙাচোরা স্কুলের জিম বা ফেলে রাখা সেনা ছাউনি সারিয়ে উদ্বাস্তু আবাস করেই অনেক ছোট থেকে মাঝারি কোম্পানি লাল হয়ে গিয়েছে৷ এদেশে প্রতিটি শহর বা পৌর এলাকাকে এক একজন উদ্বাস্তু নেওয়ার জন্য বছরে ১০,৪০০ ইউরো বরাদ্দ করা হয়৷ আহা, একাত্তরের যুদ্ধের পর দণ্ডকারণ্য পুনর্বাসনের সময় যদি এরকম একটা তহবিল থাকত৷
এক কথায়, চুরি করার জন্য গাঁয়ের মাঝখানে যদি একটা বেওয়ারিশ কিন্তু বারোয়ারি পুকুর থাকে, তবে মানুষজন পরস্পরের ঘটিবাটি চুরি করতে যাবে কোন দুঃখে?
সেরা দশ দুর্নীতির দেশ, সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশ
এক সময়ের দুর্নীতির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ এবার হয়েছে ১৩তম৷ চলুন দেখা যাক ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি)-র প্রতিবেদনে এবার কোন কোন দেশ আছে দুর্নীতির সেরা দশে আর কোন দশটি দেশে এখন দুর্নীতি সবচেয়ে কম৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Antonisse
৮ থেকে ১০ নম্বরে কঠিন লড়াই
টিআইবি-র এবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমান ১৮ পয়েন্ট করে পাওয়ায় সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দশটি দেশের তালিকায় ৮ নাম্বার থেকে ১০ নাম্বার পর্যন্ত স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তান, লিবিয়া এবং ইরিত্রিয়া৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
দুর্নীতির সপ্তম স্বর্গে তুর্কমেনিস্তান
উজবেকিস্তান, লিবিয়া এবং ইরিত্রিয়ার চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট কম হওয়ায় দুর্নীতিতে সেরা দশটি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে তুর্কমেনিস্তান৷
ছবি: DW
ইরাকের দুরবস্থা
যুদ্ধ, হানাহানির মাঝে ইরাকে দুর্নীতিও চলছে পুরোদমে৷ তাই ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন দুর্নীতিতে সেরা দেশগুলোর মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে৷
ছবি: Reuters
পঞ্চম স্থানে দক্ষিণ সুদান
ইরাকের পরেই রয়েছে সদ্য স্বাধীন দেশ দক্ষিণ সুদান৷ তারা পেয়েছে ১৫ পয়েন্ট৷
ছবি: Getty Images/AFP/T. Karumba
আফগানিস্তান দুর্নীতিরও স্থান
দুর্নীতিরও স্থান না হলে আফগানিস্তান কি আর ১২ পয়েন্ট নিয়ে বিশ্বের চতুর্থ সেরা দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হতো?
ছবি: Getty Images/AFP/S. Marai
দক্ষিণ সুদানের চেয়ে দুর্নীতিতে এগিয়ে সুদান
সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান শুধু মানচিত্রেই নয়, দুর্নীতিতেও কিছুটা ব্যবধান দেখাতে পেরেছে৷ দক্ষিণ সুদান যখন সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে, সুদান তখন ১১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়৷ দুর্নীতিতে এগিয়ে থাকা তো আর ভালো কথা নয়!
ছবি: getty / C. Bouroncle
উত্তর কোরিয়া আর সোমালিয়া
সমাজতন্ত্র কায়েমের পথে হোঁচট খেয়ে প্রায় মুখ থুবড়ে পড়লেও দুর্নীতিতে খুব এগিয়েছে উত্তর কোরিয়া৷ আফ্রিকার দারিদ্র্য জর্জরিত দেশ সোমালিয়াও কম যায় না৷ ৮ পয়েন্ট করে নিয়ে এই দুই দেশই আছে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে৷
ছবি: picture alliance/dpa/R. Sinmun
সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশ ডেনমার্ক
নারীর জন্য সবচেয়ে ভালো দেশ হওয়ার পর, এবার সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশও হয়েছে ডেনমার্ক৷ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান এই দেশ পেয়েছে ৯২ পয়েন্ট৷
ছবি: Reuters/N. Ahlmann Olesen
দ্বিতীয় নিউজিল্যান্ড, তৃতীয় ফিনল্যান্ড
সবচেয়ে কম দুর্নীতির দেশগুলোর মাঝে নিউজিল্যান্ড ৯১ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে আর ৮৯ পয়েন্ট পেয়ে ফিনল্যান্ড দ্বিতীয় স্থানে৷
ছবি: picture alliance / Robert Harding
চতুর্থ স্থানে সুইডেন
আরেক স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ সুইডেনও কম দুর্নীতিগ্রস্থ দেশগুলোর মাঝে খুব ভালো অবস্থানে৷ তাদের পয়েন্ট ৮৭, অবস্থান চতুর্থ৷
ছবি: DW/T. Mehretu
নরওয়ে আর সুইজারল্যান্ডে সমতা
৮৬ পয়েন্ট করে পেয়েছে নরওয়ে আর সুইজারল্যান্ড৷ ফলে দেশ দু’টি আছে পঞ্চম এবং ষষ্ঠ স্থানে৷
ছবি: EBU
একের হেরফেরে সাত থেকে দশ
সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দশ দেশের তালিকায় সপ্তম থেকে দশম স্থানে আছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবুর্গ এবং ক্যানাডা৷ সপ্তম থেকে দশম, অষ্টম, নবম ও দশমে মাত্র এক পয়েন্ট করে ব্যবধান৷ সিঙ্গাপুরের ৮৪, নেদারল্যান্ডসের ৮৩, লুক্সেমবুর্গের ৮২ এবং ক্যানাডার পয়েন্ট ৮১৷