জার্মানিতে কোকেন প্রবেশের হার বাড়ছে৷ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ২০১৮ সালে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কোকেন বাজেয়াপ্ত করেছে৷ তদন্ত সংস্থা আশঙ্কা করছে, কোকেনের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে সহিংস পদক্ষেপ নিতে হতে পারে৷
বিজ্ঞাপন
স্পেনের বন্দর নগরী আলজিয়ার্স কোকেন পাচারের সাম্রাজ্য হয়ে উঠেছে চলতি বছরে৷ এই বন্দর নগরীতে দক্ষিণ অ্যামেরিকা থেকে আসা কোকেনের সর্বোচ্চ চালান ধরা পড়েছে সম্প্রতি৷ কলার ক্যারেটে আসে ৯ টন কোকেন৷ সেই চালানটি জার্মানির দিকেই আসছিল৷
জার্মান কাস্টম পুলিশ এই চালান পাচারকে ‘দক্ষিণ অ্যামেরিকার সুনামি' বলে আখ্যায়িত করেছে৷ জার্মান গণমাধ্যম এনডিআরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জার্মান ফেডারেল পুলিশ জানায়, প্রতি বছরই কোকেনের চালান বাজেয়াপ্তের পরিমাণ বাড়ছে৷ এ বছর এটি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে৷
জার্মান ফেডারেল ক্রাইম টিমের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অংশের প্রধান ক্রিশ্চিয়ান হপ বলেন, কোকেন পাচারের হার বাড়ার কারণ হচ্ছে উৎপাদন বৃদ্ধি৷ কলম্বিয়া, বলিভিয়া ও পেরুতে অধিক মাত্রায় কোকেন উৎপন্ন হচ্ছে৷
ইউরোপিয়ান মনিটরিং সেন্টার ফর ড্রাগস অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডিকশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোকেনের সরবরাহ বাড়ছে, কিন্তু দাম আগের মতোই আছে৷ তবে পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে কোকেনের দাম কমেছে৷ এতে করে পাইকারি ও খুচরা বাজারের মধ্যে সহিংস সংঘাত অবশ্যম্ভাবী বলে জানিয়েছে সংস্থাটি৷ তারা আরো জানায়, কোকেন পাচারকে কেন্দ্র করে, হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, পুলিশের ওপর হামলা ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের জিম্মি করা নিত্যদিনের ঘটনা৷
মাদক উৎপাদনে শীর্ষ কয়েকটি দেশ
জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনওডিসি (ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম) সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ মাদক উৎপাদনকারী দেশের একটি তালিকা তৈরি করেছে৷
ছবি: Abdelhak Senna/AFP/Getty Images
মিয়ানমার
আফিম উৎপাদনকারী দেশের তালিকার শীর্ষস্থান দখল করেছে মিয়ানমার। নানা কারণে আফগানিস্তানে আফিমের আবাদ কমে যাওয়ায় মিয়ানমার এই অবস্থানে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। ইউএনওডিসির প্রতিবেদন মতে, মিয়ানমারের আফিম চাষীরা এখন অন্য যেকোনো পণ্য চাষের তুলনায় গড়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ বেশি উপার্জন করছেন। দেশটিতে এখন প্রতি কেজি আফিম ৩৫৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে ।
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আফগানিস্তান
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আফিম চাষ হত আফগানিস্তানে৷ ২০২২ সালে তালেবান শাসক মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর দেশটিতে আফিম চাষ ৯৫ শতাংশ কমে যায়।জাতিসংঘের হিসেবে, প্রতি বছর প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টন কাঁচা আফিম উৎপাদন হত সেখানে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
কলম্বিয়া
কোকেন উৎপাদনে বিশ্বে সেরা কলম্বিয়া৷ জাতিসংঘের হিসেবে কলম্বিয়ায় প্রতি বছর তিন থেকে চার’শ টন কোকেন উৎপাদিত হয়৷ এছাড়া পেরু ও বলিভিয়াতেও কোকেনের চাষ হয়৷ ল্যাটিন অ্যামেরিকা, উত্তর অ্যামেরিকা আর ইউরোপ কোকেনের সবচেয়ে বড় বাজার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মরক্কো
উত্তর আফ্রিকার মরক্কোতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় দেড় হাজার টন মারিজুয়ানা ও হাশিশ উৎপাদিত হয়৷ যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে সীমিত আকারে মারিজুয়ানা বা গাঁজার ব্যবহার বৈধ করায় এর চাষ আরও বেড়েছে৷
ছবি: Abdelhak Senna/AFP/Getty Images
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল
মাদক উৎপাদনে এশিয়ার তিন দেশ মিয়ানমার, লাওস আর থাইল্যান্ড ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ নামে পরিচিত৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই তিন দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় এক হাজার টন আফিম উৎপাদিত হয়৷
ছবি: AP
যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো
মেথাম্ফেটামিন বা ক্রিস্টাল মেথ হলো এক ধরণের মাদক, যেটা এক ধরণের সুখানুভূতি এনে দেয় বলে মনে করেন এর সেবনকারীরা৷ ইদানীং এই মাদক সেবনের হার বাড়ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ তবে কোন দেশে এটা সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় তা জানা যায়নি৷ তবে ক্রিস্টাল মেথ ল্যাবেও তৈরি করা যায়৷ তাই সারা বিশ্বে পুলিশ এ ধরনের ল্যাবে অভিযান চালাচ্ছে৷ এ পর্যন্ত যত অভিযান হয়েছে, তার ৮০ ভাগই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর মেক্সিকোর ল্যাবে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
6 ছবি1 | 6
ভল্কমার কাবিশ, জ্যান লুকাস স্ট্রসিচ ও বেনেডিক্ট স্ট্রুনৎস/এফএ