যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একিউআই সূচকে ৩০০ পয়েন্ট মানেই বাতাস বিপজ্জনক সীমা অতিক্রম করা, সেখানে ঢাকার বাতাস সম্প্রতি ৬০০ পয়েন্টও পার করেছে৷ সূচকে ঢাকা ৩০০ থেকে ৫০০ পয়েন্টের মধ্যে সবসময়ই আছে৷ এদিকে, সম্প্রতি ডাভোসে প্রকাশিত ইনডেক্সে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শেষ থেকে দ্বিতীয়৷

ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে মঙ্গলবার এনভারনমেন্টাল পারফর্মেন্স ইনডেক্স ইপিআই-এর প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়৷ ইপিআই স্কোর কম হওয়ার অর্থ হলো, বাতাস ভীষণভাবে দূষিত, জীববৈচিত্র হুমকির মুখে, কার্বন নিঃসরণ অত্যন্ত বেশি৷

বিশ্বের দূষিত দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে বুরুন্ডি৷ এর ইপিআই স্কোর ২৭ দশমিক ৪৩৷

দূষিত দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক কঙ্গো৷ দেশটির ইপিআই স্কোর ৩০ দশমিক ৪১৷

দূষিত শহরগুলোর মধ্যে ভারতের অবস্থান চতুর্থ৷ ইপিআই স্কোর ৩০ দশমিক ৫৭৷ এ বছরের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বাতাসের গুণগত মানের দিক থেকে এখনও সর্বনিম্ন অবস্থানে ভারত, স্কোর ৫ দশমিক ৭৫, যেখানে চীনের বায়ু দূষণের স্কোর ১৪ দশমিক ৩৯ এবং পাকিস্তানের ১৫ দশমিক ৬৯৷ এ সব দেশের বাতাস জনগণের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে৷

দূষিত শহরগুলোর মধ্যে নেপাল আছে পঞ্চম স্থানে৷ এর ইপিআই স্কোর ৩১ দশমিক ৪৪৷

ষষ্ঠ অবস্থানে আছে মাদাগাস্কার৷ যার ইপিআই স্কোর ৩৩ দশমিক ৭৩৷

হাইতি রয়েছে সপ্তম অবস্থানে৷ ইপিআই স্কোর ৩৩ দশমিক ৭৪৷

এর পরেই লেসোথোর অবস্থান৷ দেশটির ইপিআই স্কোর ৩৩ দশমিক ৭৮৷

আফ্রিকার দেশ নাইজার রয়েছে নবম স্থানে৷ ইপিআই স্কোর ৩৫ দশমিক ৭৪৷

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক রয়েছে দশম স্থানে৷ ইপিআই স্কোর ৩৬ দশমিক ৪২৷

২০১১ সালে ইউরোপের আটটি দেশে বায়ু দূষণের মাত্রা ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থা ইইএ-র বেঁধে দেয়া মাত্রার চেয়ে বেশি ছিল৷ তবে আগের বছর এমন দেশ ছিল ১২টি৷ ফলে বলা যায়, সার্বিকভাবে ইউরোপের বাতাস আগের তুলণায় বিশুদ্ধ হয়েছে৷

বিদ্যুত উৎপাদনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এবং শিল্প কারখানা ও গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া বায়ু দূষণের প্রধান কারণ বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় পরিবেশ সংস্থা৷

নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইডের ৪০ ভাগের জন্য দায়ী গাড়ি ও ট্রাক৷ ইইএ-র নির্বাহী পরিচালক বলছেন প্যারিস, মার্সেই, তুরিন, মিলান, রোমসহ চেক প্রজাতন্ত্র, পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ার কয়েকটি শহর কর্তৃপক্ষকে নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন কমাতে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে৷

বায়ু দূষণের কারণে হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে শিশু কিশোরদের ফুসফুসের সমস্যাসহ নানারকমের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দিতে পারে৷

২০১০ সালের চেয়ে ২০১১ সালে ডেনমার্ক, মাল্টা, সুইডেন আর নেদারল্যান্ডসের বাতাসে দূষণের পরিমাণ কমেছে৷ শহরের মধ্যে বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে, গতিসীমা কার্যকর করে এবং শহরের মধ্যে অধিবাসীদের বেশি করে সাইকেল চালাতে উৎসাহী করে নেদারল্যান্ডস সরকার বায়ু দূষণ কমানোয় সফলতা দেখিয়েছে৷

ইইএ-র মতে, বায়ু দূষণ কমানোয় সবচেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে ডেনমার্ক সরকার৷ এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সে দেশের জলবায়ু ও জ্বালানি মন্ত্রী (বামে) ও পরিবেশমন্ত্রী (ডানে)৷

নানা পদক্ষেপ সত্ত্বেও ২০১১ সালে জার্মানিতে দূষণ বেড়েছে৷

দূষণ কমাতে দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ প্রয়োজন হলেও ঘরে লিলি জাতীয় গাছ রেখে আপনিও দূষণ কমানোয় সহায়তা করতে পারেন৷