জার্মানিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানার উদ্যোগ
১১ অক্টোবর ২০২২![Deutschland Berlin | Übergabe Bericht | Unabhängige Kommission für Erdgas und Wärme | Scholz, Habeck, Lindner](https://static.dw.com/image/63391351_800.webp)
ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে জার্মানি তথা ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে চলেছে৷ শীতের মাসগুলিতে ঘর গরম রাখার প্রয়োজন বেড়ে চলায় সেই মূল্যবৃদ্ধি আরও গতি পাচ্ছে৷ তার উপর নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে৷ শীতকালে গ্যাসের চাহিদা মেটাতে জার্মানির মতো দেশ আগেভাগে গ্যাসের সঞ্চিত ভাণ্ডার প্রায় শতভাগ ভরে রেখেও মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে পারছে না৷ ফলে জনসাধারণ ও শিল্পজগতের উপর চাপ কমাতে সরকারের উপর জরুরি পদক্ষেপ নেবার জন্য চাপ বাড়ছে৷
নীতিগতভাবে এমন সহায়তার রূপরেখা প্রস্তুত করলেও ঠিক কীভাবে সরাসরি সাধারণ মানুষ এবং ছোট ও মাঝারি মাপের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিকে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই দেওয়া যায়, সে বিষয়ে ঐকমত্য অর্জন করা সহজ হচ্ছিল না৷ সোমবার সরকার নিয়োজিত বিশেষজ্ঞদের এক কমিশন সেই লক্ষ্য নির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছে৷ এর আওতায় ডিসেম্বর মাসের গ্যাসের বিল সরকার পুরোপুরি বহন করতে পারে এবং আগামী বছরের মার্চ মাস থেকে গ্যাসের চাহিদার ৮০ শতাংশের ক্ষেত্রে মূল্যের ঊর্দ্ধসীমা বেঁধে দেওয়া হতে পারে৷ বাকি ২০ শতাংশের মূল্য মুক্ত বাজারের উপর ছেড়ে দেবার পরামর্শ দিয়েছে কমিশন৷ জার্মানির সরকার ৯,৬০০ কোটি ইউরো ব্যয় করে বিশেষজ্ঞ কমিশনের প্রস্তাব দ্রুত কার্যকর করার অঙ্গীকার করেছে৷ উল্লেখ্য, চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার আগেই জ্বালানি সংকট সামলাতে ২০ হাজার কোটি ইউরোর তহবিল গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ সেই তহবিল থেকেই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে এই সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
বিশেষজ্ঞ কমিশনের অন্যতম সদস্য ও এক শ্রমিক সংগঠনের প্রধান মিশায়েল ভাসিলিয়াডিস এ প্রসঙ্গে বলেন, জার্মানিতে সঞ্চিত গ্যাসের ভাণ্ডার প্রায় ভর্তি থাকা সত্ত্বেও সরবরাহ নিয়ে দুশ্চিন্তা থেকে যাচ্ছে৷ তার মতে, কমিশন নির্দিষ্ট প্রস্তাবের মাধ্যমে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতিতে রাশ টানার চেষ্টা করেছে৷
শুধু গ্যাসের গ্রাহক নয়, শিল্পজগতের উপরেও চাপ কমিয়ে জার্মান অর্থনীতির বর্তমান সংকট কমানো সরকারের অন্যতম লক্ষ্য৷ তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানলেই হবে না, জ্বালানির চাহিদাও এক পঞ্চমাংশ না কমাতে পারলে শীতের মাসগুলিতে সংকট এড়ানো সম্ভব হবে না৷
জ্বালানি ও মূল্যস্ফীতি সংকট সামলাতে জার্মানির সরকারের নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে৷ বিশেষ করে দেশের পূর্বাংশে নিয়মিত এমন বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে৷ সোমবার উত্তর পূর্বের মেকলেনবুর্গ-ফোয়রপমার্ন রাজ্যের ১৫টি ছোটবড় শহরে প্রায় ৭,০০০ মানুষ পথে নেমেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ কিছু বিক্ষোভকারী সংকট মেটাতে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে রাশিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার দাবি জানিয়েছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স/ডিপিএ)