জার্মানিতে চরম দক্ষিণপন্থিদের ক্ষমতা সীমিত রাখার উদ্যোগ
৩১ জানুয়ারি ২০২৪দেশজুড়ে লাগাতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জের ধরে জার্মানির চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের প্রতি জনসমর্থন এই মুহূর্তে সামান্য কমে গেলেও আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের নির্বাচনে সেই দল শক্তি আরো বাড়িয়ে নেবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ এমনকি জার্মানির একটি রাজ্যে এএফডি দলের প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদারও হতে পারেন৷ আপাতত একটি নির্বাচনে দলের ব্যর্থতা নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে৷
মঙ্গলবার প্রকাশিত এক জনমত সমীক্ষায় এএফডি দলের প্রতি সমর্থন দুই শতাংশ কমে গেছে৷ বিশাল সংখ্যক বিদেশি ও বিদেশি বংশোদ্ভূত মানুষদের দেশছাড়া করার গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এএফডি দলের একাধিক সদস্য চাপের মুখে পড়েছেন এবং দলের সার্বিক ভাবমূর্তি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে৷ তাছাড়া চরম দক্ষিণপন্থি ভাবধারায় বিশ্বাসী নন, এমন সমর্থকদের কাছে এএফডি-র ‘প্রকৃত চরিত্র' তুলে ধরার উদ্যোগও জোরালো করা হচ্ছে৷ তবে দুই শতাংশ সমর্থন কমে গেলেও এএফডি এখনো বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের পর ১৯ শতাংশ সমর্থন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে৷ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের এসপিডি দল মাত্র ১৫ শতাংশ সমর্থন পেয়ে তৃতীয় শক্তি হিসেবে পিছিয়ে রয়েছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে জার্মানির গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর আঘাত প্রতিরোধ করতে আগেভাগেই পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে৷ পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও তুরস্কের মতো দেশে চরম জাতীয়তাবাদী বা উগ্র দক্ষিণপন্থি শক্তি ক্ষমতায় এসে সর্বোচ্চ আদালতের ক্ষমতা খর্ব করে বিরোধিতার সুযোগ যেভাবে দুর্বল করে দিয়েছে, সেই উদ্যোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে জার্মানির সাংবিধানিক আদালতের সুরক্ষা বাড়ানোর দাবি উঠছে৷ সংসদে সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে জার্মানির সর্বোচ্চ আদালতকে দুর্বল করার সম্ভাবনা এড়াতে মূল স্রোতের দলগুলি যৌথভাবে সংবিধান পরিবর্তন করার কথা ভাবছে৷ সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আদালতের চরিত্র বদলাতে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হবে, যা এএফডি-র পক্ষে কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে৷ মর্জিমতো বিচারপতি বদলানো বা সাংবিধানিক আদালতের ক্ষমতা খর্ব করা সম্ভব হবে না৷
মঙ্গলবার চ্যান্সেলর শলৎসও এমন প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন৷ মঙ্গলবার নিজের নির্বাচনি এলাকায় এক আলোচনাসভায় তিনি এ বিষয়ে বিতর্ককে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এখনই এমন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত৷ একই সঙ্গে তিনি বলেন, জার্মানির গণতন্ত্রমনস্ক ভোটাররাই সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ৷ তাদের নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করার কোনো কারণ নেই৷ তবে এএফডি দলের প্রতি এত সমর্থনকে শলৎস খুবই খারাপ হিসেবে মনে করেন৷ তিনি এ প্রসঙ্গে ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, স্পেন ও ইটালির মতো ইউরোপীয় দেশে ডানপন্থি পপুলিস্ট শক্তির উত্থানের কথা মনে করিয়ে দেন৷ তবে জার্মানিতেও এমন শক্তির উত্থান তাঁকে ব্যথিত করছে, বলেন শলৎস৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)