জার্মানির কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান সংস্থার এক প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছর জার্মানিতে সাড়ে ছয় লাখ নতুন চাকরি সৃষ্টি হবে৷ এর মধ্যে এক লাখ চাকরি পাবেন শরণার্থীরা৷
বিজ্ঞাপন
কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান সংস্থার ‘ইন্সটিটিউট ফর এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চ’ আইএবি শুক্রবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ এতে বলা হয়, চলতি বছর ৪৬ মিলিয়ন মানুষ চাকরিরত থাকবেন, যা যুদ্ধ পরবর্তী জার্মানির জন্য একটি রেকর্ড৷ একই সময় কর্মহীনের সংখ্যা কমে ২ দশমিক ৩ মিলিয়নে দাঁড়াবে, যা ১৯৯০ সালে দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের পর সবচেয়ে কম৷
আইএবি প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক এনজো ভেবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘সাধারণভাবে বললে, গত কয়েক বছরে আমরা জার্মানিতে চাকরির যে ঊর্ধ্বগতি দেখছি, অভিবাসন ছাড়া সেটা সম্ভব হতো না৷’’
জার্মানদের সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য
জার্মানদের দেখে রক্ষণশীল মনে হয় বটে, আসলে কিন্তু তারাও বেশ আমুদে৷প্রতিবেশীর নিয়ে তারা কী ভাবেন ? আর মনের মতো চাকরি পেলেই বা কী করেন? জরিপের মাধ্যমে পাওয়া জার্মানদের সম্পর্কে মজার কিছু তথ্য...
ছবি: picture-alliance/JOKER
কৌতুহল
জার্মানরা প্রতিবেশিদের ব্যাপারে কতটা কৌতুহলী তা জানা যায় সাম্প্রতিক এক জরিপ থেকে৷ সেখানে প্রকাশ, শতকরা ৩৩ ভাগ জার্মান নাকি আড়াল থেকে তাঁদের প্রতিবেশীদের লক্ষ্য করেন৷ অর্থাৎ, প্রতিবেশীদের চাল-চলন, বাড়ি, গাড়ি, তাঁদের পোশাক-আশাক বলতে গেলে সবকিছু সম্পর্কে জানতেই জার্মানরা সবসময় আগ্রহী৷
ছবি: Amir Kaljikovic - Fotolia.com
ড্রিমজব
জার্মানির ‘ম্যান পাওয়ার গ্রুপ’এর করা এক সমীক্ষা থেকে বেরিয়ে এসেছে যে, ‘ড্রিমজব’ বা স্বপ্নের পেশায় চাকরি পেলে জার্মানদের শতকরা ৮৩ জনই নিজের শহর ছাড়তে রাজি আছেন৷ এমন কি পছন্দের চাকরির জন্য শতকরা ১২জন জার্মান নাকি নিজের দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাতেও প্রস্তুত৷
ছবি: picture alliance/dpa/K.D. Gabbert
জার্মানরা কখন হাসেন ?
‘ফোর্সা’ গবেষণা ইন্সটিটিউটের করা জরিপ থেকে জানা গেছে, শতকরা ৭০ জন জার্মানই হাসতে পছন্দ করেন এবং তাঁরা প্রায়ই হাসেন৷ আর অন্যদের সাথে মজা করে হাসতে বেশি ভালোবাসেন শতকরা ৯৬ জন জার্মান৷
তবে নারী এবং পুরুষের হাসির কারণে পার্থক্য রয়েছে৷ যেমন অন্য মানুষদের নিয়ে হাসতে পছন্দ করেন শতকরা ৪৭ জন পুরুষ৷ আর নারীদের সংখ্যা এক্ষেত্রে শতকরা ৩৭ ভাগ৷ জার্মানদের হাসি নিয়ে জরিপটিও করেছে ‘ফোর্সা’৷
ছবি: picture-alliance/dpa/LaPresse/Masini
চারকোটিরও বেশি মানুষ চশমা পরেন
জার্মানিতে ১৬ বছরের বেশি যাদের বয়স, তাদের মধ্যে ৪০ দশমিক ১ মিলিয়ন মানুষই চোখে চশমা পরেন৷ অর্থাৎ জার্মানির জনসংখ্যার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষের চোখেই থাকে চশমা৷
ছবি: www.shalimoff.com
6 ছবি1 | 6
অভিবাসীরা তাঁদের দেশে যে শিক্ষা অর্জন করেছেন, সেই সনদের স্বীকৃতি দেয়ার প্রক্রিয়া যদি আরও সরল করা যায়, তাহলে আরও বেশি সংখ্যক অভিবাসী চাকরি পেতে পারেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
আইএবির প্রতিবেদনে আরও একটি ভালো খবর দেয়া হয়েছে৷ এতে বলা হয়, যে ধরনের চাকরির সংখ্যা বাড়ছে, তার গুনগত মানও ভালো৷ অর্থাৎ যেসব সংস্থা এ ধরনের চাকরি সৃষ্টি করছে, আর যাঁরা চাকরি পাচ্ছেন, উভয়েই সামাজিক কল্যাণ ব্যবস্থায় অবদান রাখছে৷ অন্যদিকে, ‘মিনিজব’ বলে পরিচিত যে ধরনের চাকরি সামাজিক কল্যাণ ব্যবস্থায় অবদান রাখতে পারে না, সে ধরনের চাকরির সংখ্যা একই থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
২০১৫ সাল থেকে জার্মানিতে বিপুল পরিমাণ শরণার্থী প্রবেশ করায় ঘণ্টাপ্রতি বেতনের পরিমাণ কমে যাওয়ার আশংকা করেছিলেন অনেকে৷ তবে আইএবির প্রতিবেদনে সেই শংকা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে৷ ‘‘জার্মানিতে অনেক অভিবাসীর আগমন বেকারত্বের হার, জিডিপি ও বেতনের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেনি,’’ আরেক জরিপে লিখেছেন ভেবার ও তাঁর সহকর্মী লেখক জাবিনে ক্লিঙ্গার৷