1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ‘ভেগান’ জীবনধারা

ইসাবেলা বাউয়ার/আরবি৯ নভেম্বর ২০১৩

পয়লা নভেম্বর পালিত হলো বিশ্ব ভেগান দিবস৷ জার্মানিতে ছয় লক্ষের মতো ভেগান রয়েছেন, যাঁরা মাছ-মাংস তো দূরের কথা, দুধ-ডিমের মতো প্রাণীজাত কোনো খাবারও খান না৷

Veganes Buffet im ECCO. Veganes Buffet für ein gemischtes Publikum in der Kölner Südstadt Restaurant ECCO, Kartäuserwall 7 Das Samstagsbuffet im Restaurant ECCO Foto: Nicole Löhnert 5.10.2013
ছবি: Nicole Löhnert

জার্মানির কোলন শহরের কেন্দ্রস্থলে ছোটখাট এক দোকান৷ ভেগান খাদ্যদ্রব্য বিক্রি হয় সেখানে৷ অর্থাৎ, প্রাণীজাত কোনো খাদ্যই নেই দোকানটিতে৷ কয়েকটি ফ্রিজ, সাদামাটা শেল্ফ ও তাক৷ এতেই সাজানো রয়েছে নানা ধরনের ভেগান খাবার৷ বাদ যায়নি কুকুর-বেড়ালের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ভেগান খাবারও৷

দোকানের মালিক আনেটে ক্লিটসকে বলা যায় ভেগান খাদ্যের বিশেষজ্ঞ৷ শুরুর দিকটা অবশ্য এত সহজ ছিল না তাঁর জন্য৷ আনেটে জানান, ‘‘দশ বছর আগে ভেগান খাদ্য জোগাড় করাটা ছিল খুব কঠিন৷ আমার মাত্র দুটি মিনি ফ্রিজ ও চারটি শেল্ফ ছিল৷ তাই নিয়েই যাত্রা শুরু৷''

দোকানের মালিক আনেটে ক্লিটসকে বলা যায় ভেগান খাদ্যের বিশেষজ্ঞছবি: DW/I. Bauer

কিছুটা নিজের তাগিদেই দোকান খোলার ইচ্ছাটা জাগে আনেটের৷ নিজে ভেগান, অর্থাৎ উদ্ভিদভোজী৷ দুধ, পনির, ডিম এসবও ছুঁয়ে দেখেন না৷ আনেটের ভাষায়, ‘‘আমার একার পক্ষে ভেগান খাদ্য পাওয়াটা সহজ ছিল না৷ তাই ভেগান খাদ্যের নিজস্ব একটা দোকান খোলার ইচ্ছা জাগে৷ এক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা ছিল বলে কাজটা সহজও হয়৷''

ভেগান জীবনযাপন করা শুরু করেন নৈতিক কারণে, স্বাস্থ্যগত কারণে নয়, বলেন আনেটে৷ বলতে গেলে কি, স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি কখনই কোনো ঝোঁক ছিল না তাঁর৷ খাবারের স্বাদটাই ছিল মুখ্য৷

ভেগান রেস্তোঁরা ‘একো'

রেস্তোঁরা ‘একো'-তে অবশ্য স্বাস্থ্যকর খাবারকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে৷ কোলন শহরের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এই রেস্তোঁরায় নানা ধরনের খদ্দের আসেন৷ সেখানে অন্যান্য খাবারের সাথে আলাদাভাবে ভেগান খাবারের মেন্যুও রয়েছে৷ সেই রেস্তোঁরার একটি দৃশ্য:

দু'জন প্রবীণ মহিলা পানি ও কফি পান করতে করতে গল্প করছেন৷ কয়েকজন অল্পবয়সি মা বাচ্চাদের নিয়ে এক ধরনের ইটালিয়ান কফি, লাটে মাকিয়াটো উপভোগ করছেন৷ অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন সহকর্মী ও কয়েক জোড়া জুটিকে৷ তাঁরা গল্প করতে করতে টুকটাক খাওয়া-দাওয়া করছেন৷

রেস্তোঁরা ‘একো'-তে অবশ্য স্বাস্থ্যকর খাবারকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছেছবি: DW/I. Bauer

কেউ কেউ আবার পত্র-পত্রিকা পড়ছেন৷ একদিকে টিভিতে চলছে – পশু-পাখির প্রোগ্রাম৷ অন্যদিক থেকে ভেসে আসছে পপ ও জ্যাজের সুর৷

দোকানের মালিক নিকোল ল্যোহনার্ট ভেগান রান্না নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালোবাসেন৷ তিনি জানান, ‘‘মাছ-মাংসের খাবারের অনুকরণ করতে আমার ভালো লাগে৷ যেমন মাংসের কাটলেট, ভাজাভুজির বদলে শাক সবজির কাটলেট বা ভাজাভুজি তৈরি করতে পছন্দ করি আমি৷

ভেগান বা উদ্ভিদভোজীরা রেস্তোঁরাটিতে এত ধরনের খাবার-দাবার দেখে খুশি হন৷ অন্যরা অজান্তেই ভেগান খাবারের অর্ডার দেন৷ সালাদের সস ইত্যাদিতেও প্রাণীজাত খাদ্যদ্রব্য পরিহার করার চেষ্টা করা হয়৷

ওসকার রোমেরো হাউস''

বন শহরের ওসকার রোমেরো হাউস বিকল্পধারার একটি ‘প্রকল্প ভবন'৷ সমাজ কল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চলে সেখানে৷ মাসে একবার এই ভবনের বাসিন্দারা চাঁদা তুলে ভেগান রান্না-বান্না করেন৷ অনেক অতিথিও আসেন তখন৷ দালানের পেছন দিক ও সেলার ভরে যায় মানুষে৷ নানা রকম খাবার পরিবেশন করা হয় সেখানে৷ থাকে সবজি ও নুডল স্যালাড৷ আর ডেজার্টে থাকে নানা ধরনের ফল-ফলারি৷

দেখা যাক একটি দৃশ্য:

৫০ জনের মতো মানুষ পুরানো সোফা ও বেঞ্চে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছেন৷ অধিকাংশেরই বয়স ২০ থেকে ৪০-এর মধ্যে৷ বসবাস করেন আশেপাশের বাড়িতে৷ এই ভবনটিতে আসেন তাঁরা নিয়মিত৷ সাধারণ তরুণ তরুণী তাঁরা৷ পরনে জিনসের প্যান্ট বা জগিং স্যুট কিংবা উলের পুলওভার৷ এক প্রশ্নোত্তরে জানা যায়, একত্রিত হওয়াটাই তাঁদের কাছে বড় কথা৷ তাঁদের একজন বলেন, ‘‘আমার খুব ভালো লাগে৷ এখানে এসে আমারা একত্রে খাওয়া-দাওয়া করতে পারি ও একটি সুন্দর সন্ধ্যা পাই৷''

সুপার মার্কেটের কন্টেইনারে ফেলে দেওয়া ভালো ভালো খাদ্যদ্রব্যও অনেক সময় বেছে নিয়ে আসা হয়৷ এছাড়া, আশেপাশের অনেক দোকান থেকেও খাদ্যসামগ্রী দান করা হয়৷ তাই সস্তায় পাওয়া যায় এই সব খাবার৷ এখানে যাঁরা খেতে আসেন তাঁরা কিন্তু সবাই উদ্ভিদভোজী নন৷ অহিংসতার শিক্ষাই এখানে বড় কথা৷ ভেগান জীবনধারাও পড়ে তারই মধ্যে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ