ক্রনিক মাথাধরার মতো সমস্যাটা চিরকালই ছিল, এখনও আছে৷ ‘ড্রাগ ওয়ার' নেই; আছে ‘ড্রাগ প্রিভেনশনের' প্রচেষ্টা ও পুলিশি কড়াকড়ি৷ সব সত্ত্বেও ‘ড্রাগ সিন' আছে, বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে৷
বিজ্ঞাপন
‘ড্রাগস' বা ‘মাদক' হলো আধুনিক, শহুরে পশ্চিমি সভ্যতার একটা অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ – দেখলে তাই মনে হবে৷ ইন্টারনেটে জার্মানির ড্রাগ সিন নিয়ে প্রশ্ন দিলেই নানা ‘শুভানুধ্যায়ীরা' সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেন, কোন শহরে, কোথায় কি ধরনের ড্রাগস পাওয়া যায় অথবা যায় না৷ কেউ হয়ত লিখলেন, ‘ইলেকট্রনিক মিউজিক ক্রাউডে' খোঁজখবর করে দেখো৷ এক বিশ্বনিন্দুক লিখলেন, যেখানে ছাত্র, সেখানেই তো ড্রাগস৷ আরেক মহাত্মা লিখলেন, ক্যানাবিস এখানে সর্বত্র, তবে মানুষজন ‘সাইকেডেলিক্স' সম্পর্কে সন্দিগ্ন, তারা ‘কেমিক্যাল ড্রাগস' পছন্দ করেন না, ‘স্পিড'-এর মতো স্টিমিউল্যান্টের খুব চল, ইত্যাদি৷ ‘কোকেন' নাকি বিশেষ চালু নয়, এক বিজনেস এগজিকিউটিভ আর ম্যানেজার গোত্রীয় কিছু মক্কেল ছাড়া৷
বিশ্বের অদ্ভুত সব মাদক নিরাময় কেন্দ্র
আমাদের দেশে মাদকাসক্তি এখন বড় ধরনের সমস্যা৷ তবে মাদকাসক্তদের জন্য এখন বেশ কিছু নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে৷ কিন্তু সেগুলো এতটা অদ্ভুত হয়ত নয়৷ বিশ্বের অদ্ভুত কিছু মাদক নিরাময় কেন্দ্রের তথ্য থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/R.Gul
থাইল্যান্ডের পুনর্বাসন কেন্দ্র
থাইল্যান্ডে ফ্রা পুত্থাবাতের কাছে থামক্রাবক মঠ৷ এখানে মাদকাসক্তদের ভিন্ন উপায়ে চিকিৎসা করা হয়৷ আধ্যাত্মিক ও প্রাকৃতিক উপায়ে মাদকাসক্তদের মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি এনে দেয়ার চেষ্টা করেন মঠের সন্ন্যাসীরা৷
ছবি: N.Asfouri/AFP/Getty Images
বমনের মাধ্যমে শুদ্ধি
এখানে সাধারণত মাদকাসক্তদের ১০দিনের একটি কর্মসূচিতে রাখা হয়৷ তবে এর মধ্যে বহির্বিশ্বের সাথে মোকাবিলা করার ক্ষমতা গড়ে না উঠলে আরো দীর্ঘ সময় সেখানে থাকতে পারেন তারা৷ ভোর বেলা প্রত্যেককে একটি পানীয় খেতে বাধ্য করা হয়, যার ফলাফল বমি৷ মঠের সন্ন্যাসীদের মতে পানীয়টি খুবই বাজে, কিন্তু কার্যকর৷ এছাড়া মঠ ছাড়ার আগে প্রতিটি অংশগ্রহণকারীকে অঙ্গীকার করতে হয় যে, সে আর কখনো মাদক ছুঁয়ে দেখবে না৷
ছবি: Getty Images/Paula Bronstein
আধ্যাত্মিক চেতনা
পেরুর আয়াহুয়াস্কা নিরাময় কেন্দ্রে প্রতি বছর কয়েক হাজার মানুষ প্রাকৃতিক উপায়ে মাদকাসক্তি থেকে মুক্তির চিকিৎসা নিতে যান৷ সেখানকার আদিবাসীদের বিশ্বাস আয়াহুয়াস্কা প্রত্যেকের মধ্যে আধ্যাত্মিক চেতনার উন্মেষ ঘটিয়ে মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি এনে দেয়৷ তবে পশ্চিমা চিকিৎসকদের মতে এ ধরনের চিকিৎসার ফলে ভয়ের স্মৃতি, বমি, প্রচুর ঘাম এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷ তাই বিশ্বের অনেক দেশে এখন আয়াহুয়াস্কা নিষিদ্ধ৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V.Donev
ধর্মীয় পন্থা
ব্রাজিলের রিও ডি জানেরোর পুনর্বাসন কেন্দ্র এটি৷ এখানে আধ্যাত্মিক উপায়ে চিকিৎসা করা হয়৷ প্রতিদিন সকালে সব মাদকাসক্ত ব্যক্তি জড় হয়ে ঈশ্বরের বন্দনা করেন৷ প্রত্যেককেই একটি গির্জার পাশে থাকতে দেয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/AP/ F.Dana
শিকল বেঁধে চিকিৎসা
এই ব্যাক্তির নাম আমানউল্লাহ, যাকে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে জালালাবাদে একটি মাজারে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে৷ এখানে মাদকাসক্তদের চিকিৎসা করা হয়৷ শিকল দিয়ে ৪০ দিন বেঁধে রাখা হয় তাদের৷ খেতে দেয়া হয় একটু রুটি, অল্প পানি আর একটু মরিচের গুড়া৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/R.Gul
আধ্যাত্মিক সাহায্য
মীর আলী বাবা, যাঁর নামে এই মাজার৷ স্থানীয়দের বিশ্বাস, মাদকাসক্তদের এখানে এভাবে বেধে রাখার ফলে আলী বাবা তাদের এই আসক্তি থেকে বের হতে সাহায্য করেন৷ এই ধারণা কেবল আফগানিস্তানেই নয় বিশ্বের অনেক স্থানে রয়েছে৷ কিছু স্থানে মাদকাসক্তদের শাস্তি দেয়া হয়, এমনকি হত্যা করাও হয়৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/R.Gul
শ্রমিক শিবির
চীনে মাদকাসক্তদের পুনর্বাসন হয় জেলখানায়৷ কারাদণ্ড হওয়ার পর ঐ ব্যক্তিকে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়৷ কোকেইন, হেরোইন বা মারিজুয়ানা নিয়ে কেউ ধরা পড়লেও একই শাস্তি৷ তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, চীন মাদকাসক্তদের ক্লিনিকগুলোকে শ্রমিক ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করে৷ অর্থাৎ তাদের দিয়ে নানা কাজ করিয়ে নেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Shenglian
মৃত্যু অভিজ্ঞতা
কিরঘিজস্তানে যে পুনর্বাসন পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয় তা ভয়াবহ৷ এটাকে বলা হয় ‘কোমা চিকিৎসা’৷ মাদকাসক্তদের একটি ইনজেকশন দেয়া হয় যার প্রভাবে তারা কয়েক ঘণ্টা কোমা’র মতো অবস্থায় থাকে৷ এরপর যখন তারা ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায় বলে বিশ্বাস সেখানকার মানুষের৷ বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এর ব্যাপক সমালোচনা করেছেন৷
ছবি: picture alliance/Robert Harding World Imagery
বিলাসবহুল পন্থা
অনেক তারকারা মাদকাসক্তি থেকে মুক্তি পেতে বিলাসবহুল পথ বেছে নেন৷ সবচেয়ে বিখ্যাত পদ্ধতিটি হয় অ্যামেরিকার বেটি ফোর্ড ক্লিনিকে৷ এখানে বিখ্যাত সংগীত শিল্পী ও অভিনেতারা চিকিৎসা করান৷ এই ক্লিনিকে এমন কিছু সুযোগ সুবিধা থাকে যাতে আপনার মনে হবে আপনি একটি বিলাসবহুল হোটেলে আছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A.Rain
সবার চিকিৎসার সুযোগ নেই
বিশ্বের বেশিরভাগ মাদকাসক্তের চিকিৎসার সুবিধা নেই৷ যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরিপ অনুযায়ী, সে দেশের মাত্র ১০.৪ শতাংশ মাদকাসক্ত ব্যক্তি চিকিৎসার সুবিধা পান৷ গরীব দেশগুলোতে এ অবস্থা আরো শোচনীয়৷
ছবি: picture alliance/JOKER
10 ছবি1 | 10
বলতে কি, জার্মানির ড্রাগস পলিসি বেশ উদার হলেও, নেদারল্যান্ডসের চেয়ে বেশি কড়া বলে মনে করা হয়৷ ১৯৯৪ সালেই ফেডারাল সাংবিধানিক আদালত রায় দেন যে, ড্রাগ অ্যাডিকশন বা মাদকাসক্তি কোনো অপরাধ নয়, যেমন ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য স্বল্প পরিমাণ ড্রাগস নিজের কাছে রাখাটাও কোনো অপরাধ নয়৷ জার্মানির নার্কোটিক আইনকে বলে – তার আদ্যক্ষর অনুযায়ী – বিটিএমজি৷ ২০০০ সালে এই বিটিএমজি সংশোধন করে সুপারভাইজড ড্রাগ ইনজেকশন রুম, অর্থাৎ সরকারি তত্ত্বাবধানে ড্রাগস নেওয়ার ঘরের ব্যবস্থা করা হয়৷ ২০০৯ সালে হেরোইন আসক্তদের মেথাডন দেওয়ার মতো সরকারি তত্ত্বাবধানে হেরোইন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় – যার খরচ বহন করবে সংশ্লিষ্ট মাদকাসক্তের স্বাস্থ্য বীমা৷
‘কোনো বড় ইস্যু নয়'
ড্রাগস আর জার্মানিতে কোনো বড় ইস্যু নয়, যদিও বেআইনি ড্রাগসের বিরুদ্ধে সংগ্রামে রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিবছর আনুমানিক সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করে থাকেন৷ তাতে যে বিশেষ ফললাভ হয়েছে, এমন নয়৷ ‘উইড', ‘এক্সস্ট্যাসি' সর্বত্র পাওয়া যায়, বলে শোনা যায়৷ ‘এলএসডি' পাওয়া ততটা সহজ নয়৷ রাস্তায় কেনা অ্যাম্ফেটামাইনের কোয়ালিটি বিশেষ ভালো নয়৷ ‘মেথ' বিশেষ পাওয়া যায় না, তবে ক্র্যাক পাওয়ার চান্স মন্দ নয় – এ সবই হল ইন্টারনেট জ্ঞানদাতাদের জার্মান ড্রাগ সিন সম্পর্কে লিখিত মন্তব্যের সংক্ষিপ্তসার৷
আসল মুশকিল হলো, হিপি আমলে অর্থাৎ ষাটের দশকে ‘ক্যানাবিস' সেবন মাত্রাধিক বেড়ে যাওয়ার পর ১৯৭২ সালে যে আইন প্রণয়ন করা হয়, তার মূলমন্ত্র ছিল দমননীতি, যা আদৌ কাজ করেনি৷ এমনকি নব্বই-এর দশকের গোড়ায় নিজের কাছে ক্যানাবিস রাখা সংক্রান্ত আইনটিকে কিছুটা শিথিল করা হয় – বিশেষ করে সবুজ দলের চাপে৷ কিন্তু নতুন সহস্রাব্দে এখন বছরে প্রায় ৮০ থেকে ৯০টি নতুন ধরনের ড্রাগস প্রতিবছর বাজারে আসছে, সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নানা হালফ্যাশনের প্রবণতা, যার একটি দৃষ্টান্ত হলো ‘টোড লিকিং' বা ব্যাঙ চাটা৷
মাদক উৎপাদনে শীর্ষ কয়েকটি দেশ
জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনওডিসি (ইউনাইটেড নেশনস অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম) সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ মাদক উৎপাদনকারী দেশের একটি তালিকা তৈরি করেছে৷
ছবি: Abdelhak Senna/AFP/Getty Images
মিয়ানমার
আফিম উৎপাদনকারী দেশের তালিকার শীর্ষস্থান দখল করেছে মিয়ানমার। নানা কারণে আফগানিস্তানে আফিমের আবাদ কমে যাওয়ায় মিয়ানমার এই অবস্থানে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে। ইউএনওডিসির প্রতিবেদন মতে, মিয়ানমারের আফিম চাষীরা এখন অন্য যেকোনো পণ্য চাষের তুলনায় গড়ে প্রায় ৭৫ শতাংশ বেশি উপার্জন করছেন। দেশটিতে এখন প্রতি কেজি আফিম ৩৫৫ ডলারে বিক্রি হচ্ছে ।
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আফগানিস্তান
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আফিম চাষ হত আফগানিস্তানে৷ ২০২২ সালে তালেবান শাসক মাদকদ্রব্য ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর দেশটিতে আফিম চাষ ৯৫ শতাংশ কমে যায়।জাতিসংঘের হিসেবে, প্রতি বছর প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার টন কাঁচা আফিম উৎপাদন হত সেখানে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
কলম্বিয়া
কোকেন উৎপাদনে বিশ্বে সেরা কলম্বিয়া৷ জাতিসংঘের হিসেবে কলম্বিয়ায় প্রতি বছর তিন থেকে চার’শ টন কোকেন উৎপাদিত হয়৷ এছাড়া পেরু ও বলিভিয়াতেও কোকেনের চাষ হয়৷ ল্যাটিন অ্যামেরিকা, উত্তর অ্যামেরিকা আর ইউরোপ কোকেনের সবচেয়ে বড় বাজার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মরক্কো
উত্তর আফ্রিকার মরক্কোতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় দেড় হাজার টন মারিজুয়ানা ও হাশিশ উৎপাদিত হয়৷ যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে সীমিত আকারে মারিজুয়ানা বা গাঁজার ব্যবহার বৈধ করায় এর চাষ আরও বেড়েছে৷
ছবি: Abdelhak Senna/AFP/Getty Images
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল
মাদক উৎপাদনে এশিয়ার তিন দেশ মিয়ানমার, লাওস আর থাইল্যান্ড ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ নামে পরিচিত৷ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই তিন দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় এক হাজার টন আফিম উৎপাদিত হয়৷
ছবি: AP
যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো
মেথাম্ফেটামিন বা ক্রিস্টাল মেথ হলো এক ধরণের মাদক, যেটা এক ধরণের সুখানুভূতি এনে দেয় বলে মনে করেন এর সেবনকারীরা৷ ইদানীং এই মাদক সেবনের হার বাড়ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ তবে কোন দেশে এটা সবচেয়ে বেশি তৈরি হয় তা জানা যায়নি৷ তবে ক্রিস্টাল মেথ ল্যাবেও তৈরি করা যায়৷ তাই সারা বিশ্বে পুলিশ এ ধরনের ল্যাবে অভিযান চালাচ্ছে৷ এ পর্যন্ত যত অভিযান হয়েছে, তার ৮০ ভাগই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আর মেক্সিকোর ল্যাবে৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot
6 ছবি1 | 6
দক্ষিণ অ্যামেরিকার এই চ্যাপটা উভয়চরটিকে অনলাইনেই পাওয়া যায়৷ ব্যাঙটিকে টিপলে, তার গ্ল্যান্ড মানে লালাগ্রন্থি থেকে এক ধরনের ‘সাইকোঅ্যাকটিভ' পদার্থ নিঃসৃত হয়৷ তরুণ-তরুণীরা পার্টিতে এই ব্যাঙকে হাত থেকে হাতে হস্তান্তর করেন ও চাটেন – তাতে নাকি নেশা হয়৷ কাজেই এক হিসেবে বলতে গেলে, সরকার আর পুলিশ যতই তৎপর হোন না কেন, নেশাখোররা নেশা করার কোনো না কোনো পন্থা খুঁজে বার করবেনই৷
উদারপন্থি নেদারল্যান্ডস, যেখানে মারিজুয়ানার নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বহুলাংশে অপরাধমুক্ত করা হয়েছে, সেখানেও ২০০৮ সাল যাবৎ একাধিক পৌরপরিষদ তথাকথিত কফি শপ-গুলি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন৷ তাহলে সমাধান? আপনারাই বলুন৷
বাংলাদেশে বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম আহসানিয়া মিশন পরিচালিত মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও নিরাময় কেন্দ্র৷ ঢাকায় নারীদের জন্য একটি ও ঢাকার বাইরে পুরুষদের জন্য দু’টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সংস্থাটি কাজ করছে৷
ছবি: DW
নারীদের জন্য একটি, পুরুষদের দু’টি
ঢাকার মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে আহসানিয়া মিশন পরিচালিত অ্যাডিকশন ম্যানেজমেন্ট এবং ইন্টেগ্রেটেড কেয়ার সেন্টার৷ সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ছাড়াও এখানে আছে নারীদের জন্য মাদকাসক্তির চিকিৎসা ও নিরাময় কেন্দ্র৷ এখান থেকেই গাজীপুর ও যশোরে পুরুষদের দু’টি নিরাময় কেন্দ্রের কার্যক্রমের তদারকি চলে৷
ছবি: DW
‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’
লাল কাপড়ে সুঁচি কাজের এ লেখাগুলো শোভা পাচ্ছে আহসানিয়া মিশনের নারী মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের প্রবেশ পথে৷ এটি তৈরি করেছেন কারাবন্দি মাদকাসক্তরা৷ আহসানিয়া মিশন তাদের তিনটি কেন্দ্রের মাধ্যমে মাদকাসক্ত মানুষকে আলোর পথ দেখানোর কাজে নিয়োজিত৷ বন্দি মাদকাসক্তদের নিরাময়েও সংস্থাটি কাজ করে থাকে৷
ছবি: DW/M. Mamun
মাদকাসক্তদের মধ্যে নারীরা বেশি
আহসানিয়া মিশনের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আলোর মুখ দেখতে আসা নারী মাদকাসক্তরা৷ প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ডা. ফারাহ দিবা জানান, তাদের কাছে সেবা নিতে আসা মাদকাসক্তদের মধ্যে ১৫-২৫ বয়সের মেয়েরাই বেশি৷ নারীদের মধ্যে আসক্তির অন্যতম কারণ হিসেবে তারা চিহ্ণিত করেছেন বন্ধুদের বা পরিবারের অন্য কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ৷
ছবি: DW
বিভিন্ন রকম ‘প্রোগ্রাম’
‘ব্রোকেন ফ্যামিলির’ সন্তানদের মধ্যেও অবশ্য মাদকাসক্ত মানুষ দেখা যায়৷ তাই আহসানিয়া মিশনের নারী মাদকাসক্ত কেন্দ্রে চলছে সাইকো-সোশ্যাল এডুকেশন প্রোগ্রাম৷ এ কেন্দ্রে এ রকম নানান প্রোগ্রামের মাধ্যমে মাদকাসক্তদের সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
যাঁদের জন্য সুস্থ হয়ে উঠছেন মাদকাসক্তরা
আহসানিয়া মিশনের এই নারী মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে আছে সার্বক্ষণিক কাউন্সিলর ও চিকিৎসক৷ কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে মাদকাসক্তদের ভালো করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন এ কাউন্সিলররা৷
ছবি: DW
দেখভাল প্রয়োজন প্রতিদিন, প্রতি ঘণ্টায়
আহসানিয়া মিশনের নারী মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এখানকার সদস্যদের কার্যক্রম৷ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সদস্যদের সার্বক্ষণিক দেখভালের মধ্যেই রাখতে হয়৷
ছবি: DW
যেখানে থাকেন মাদকাসক্ত নারীরা
ঢাকার মোহাম্মদপুরে নারী মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের থাকার জায়গা৷
ছবি: DAM
পুরুষদের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র
আহসানিয়া মিশনের রাজেন্দ্রপুরের পুরুষ মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র৷ এটি পারিবারিক মিটিং বা ‘ফ্যামেলি মিটিং’-এর ছবি৷
ছবি: DAM
‘ফ্যামিলি মিটিং’
নিরাময় কেন্দ্রের সেবায় সুস্থ হয়ে ফিরে যাওয়ার পর, পরবর্তী সময় পর্যবেক্ষণের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় এ ধরনের ফ্যামিলি মিটিংয়ের৷
ছবি: DAM
খেলার ছলে চিকিৎসা
গাজীপুরের রাজেন্দ্রপর কেন্দ্রের মাদকাসক্ত চিকিংসার অংশ হিসেবে চলছে খেলাধুলা৷