জার্মানিতে দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষে দশজন নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে৷ এখনও নিখোঁজ দু’জন৷ আহত ১০ জনের অবস্থা আশংকাজনক, আটজনের অবস্থা গুরুতর, বাকি ৬৩ জন সামান্য আঘাত পেয়েছেন৷ দক্ষিণের বাভারিয়া রাজ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে৷
বিজ্ঞাপন
পুলিশের মুখপাত্র স্টেফান সনটাগ বার্তা সংস্থা এপি-কে জানিয়েছেন, ‘‘মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাতটার কিছু আগে রোজেনহাইম ও হোলৎসকির্শেন-এর মধ্যে চলাচলকারী দু'টি আঞ্চলিক ট্রেনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়৷'' গত কয়েক বছরের মধ্যে ঐ অঞ্চলে এটাই সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা বলে জানান তিনি৷
নিহতদের মধ্যে দুই ট্রেনের চালক থাকতে পারেন বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ ট্রেন দুটিতে প্রায় দেড়শ যাত্রী ছিলেন৷
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও বাভারিয়ার মুখ্যমন্ত্রী হোর্স্ট জেহোফার দুর্ঘটনায় হতাহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন৷
পনেরটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে আহত যাত্রীদের আশেপাশের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়৷ এছাড়া কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পুলিশ, প্যারামেডিকস, দমকল ও রেডক্রস কর্মীদের নিয়ে প্রায় ৫০০ সদস্যের ঊদ্ধার দল গঠন করা হয়৷
বাভারিয়া রাজ্যের বাড আইব্লিং এলাকায় এই ঘটনা ঘটে৷
জেডএইচ/ডিজি (ডিপিএ, এপি, রয়টার্স)
বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন
চলুন জেনে নেয়া যাক নতুন এবং পুরোনো সব ঝোড়োগতির ট্রেনের কথা৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ভাসমান রাজা’
জাপানের সেন্ট্রাল রেলের ‘ম্যাগলেভ ট্রেন’ নতুন রেকর্ড গড়ে বিশ্বের দ্রুততম হবার গৌরব অর্জন করেছে৷ জাপানের এই ট্রেনই প্রথম ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার, অর্থাৎ ৩৭৩ মাইল বেগে ছুটে দেখালো৷ ম্যাগলেভ নামটা এসেছে ‘ম্যাগনেটিক’ শব্দের ‘ম্যাগ’ এবং ‘লেভিটেশন’ শব্দের ‘লেভ’ নিয়ে৷ ম্যাগনেটিক লেভিটেশনের জাদুতেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সামলে রেল লাইনের ওপরে অনেকটা ভেসে চলে ম্যাগলেভ ট্রেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/Yomiuri Shimbun
‘ট্রেন নয়, যেন প্লেনে চড়েছি’
জাপানের ম্যাগলেভ ট্রেনটি এখনো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে৷ টেস্ট সেন্টারের প্রধান ইয়াসুকাজু এন্ডো জানালেন, এ পর্যন্ত হাতে গোনা যে ক’জন ট্রেনটিতে চড়ার সুযোগ পেয়েছেন তাঁদের সবাই ফিরেছেন মুগ্ধ হয়ে৷ তাঁর ধারণা প্রশ্ন করলে সবাই বলতেন, ‘‘কী গতি! মনে হলো ট্রেনে নয় যেন প্লেনে চড়েছি৷’’ জাপানের এই ট্রেন সাধারণ জনগণের জন্য পুরোদমে চলতে শুরু করবে ২০২৭ সালে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এখনো সেরা.....
৬০০ কিলোমিটার বেগে চালালেও পুরোদমে যখন যাত্রীসেবায় নামবে তখন ৫০০ কিলোমিটার বেগে চলবে জাপানের ম্যাগলেভ৷ তার আগ পর্যন্ত হয়তো যাত্রীসেবায় নিয়োজিত ট্রেনগুলোর মধ্যে দ্রুততম থাকবে চীনের শাংহাই শহরে জার্মান প্রযুক্তি দিয়ে গড়ে তোলা ট্রেন ট্রান্সরাপিড৷ শাংহাই কেন্দ্রীয় রেল স্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৪৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটে যায় ট্রেনটি, সাড়ে ৩০ কিলোমিটার দূরত্ব যেতে লাগে মাত্র ৮ মিনিট!
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রান্সের গর্ব
জাপান আর চীনের ট্রেন দুটো আসলে ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযু্ক্তির উজ্জ্বলতম নিদর্শন৷ এই দুটোর বাইরে প্রথাগত চাকার ট্রেনগুলির মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ফ্রান্সের ‘ত্র্যাঁন-আ-গ্রঁ-ভিতেস’ (টিজিভি)৷ ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫৭৪ কিলোমিটার৷ তবে ব্যয় কম রাখতে টিজিভির গতিবেগ ৩২০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়৷
ছবি: Sebastien Bozon/AFP/Getty Images
বেইজিং থেকে শাংহাইয়ের পথে গতির ঝড়
হারমোনি সিআরএইচ ৩৮০এ পুরোপুরি বিদ্যুৎ চালিত৷ ২০১০ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে চালিয়ে দেখার সময় এটি ঘণ্টায় ৪৮৬ কিলোমিটার বেগে ছুটেছিল৷ তবে স্বাভাবিক অবস্থায় বেইজিং-শাংহাই রুটে ৩৮০ কিলোমিটার বেগে চলে ট্রেনটি৷
ছবি: imago/UPI Photo
জার্মানিও আছে...
হাই-স্পিড ট্রেনের জগতে সেই ১৯৮৮ সালে সাড়া জাগিয়েছিল জার্মানি৷ সেবার আইসিই ট্রেন হ্যানোফার থেকে ভ্যুরৎসবুর্গের পথে ৪০৬ দশমিক ৯ কিলোমিটার গতি তুলে তাক লাগিয়েছিল৷ পরে ব্যয় কমানোর জন্য অবশ্য সর্বোচ্চ গতি ২৫০ কিলোমিটারে বেঁধে দেয়া হয়৷