ক্রিসমাসের পর নতুন বিধি চালু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ক্লাব এবং ডিস্কো বন্ধ হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
করোনা সংক্রমণ আগের চেয়ে খানিকটা কমলেও জার্মানি-সহ গোটা ইউরোপেই ওমিক্রনের সংক্রমণ চলছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে লকডাউন ঘোষণা করেছে নেদারল্যান্ডস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রিসমাসের পর নতুন বছরে ইউরোপে করোনার পঞ্চম ঢেউ শুরু হবে। এই পরিস্থিতিতে ক্রিসামাসের ঠিক পরেই জার্মানিতে নতুন কোভিডবিধি চালু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সোমবার জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ওলফ শলৎসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যের প্রধানরা। সেখানেই নতুন বিধি চালু করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
ওমিক্রনের কারণে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা
করোনার নতুন সংস্করণ ওমিক্রনের কারণে গত রোববার পর্যন্ত প্রায় ৫৬টি দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে কমবেশি কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে জানিয়েছে ডাব্লিউএইচও৷
ছবি: Sumaya Hisham/REUTERS
জার্মানি
সাউথ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের মোট আটটি দেশ থেকে শুধু জার্মান নাগরিক ও জার্মানিতে বাস করার অনুমতি আছে এমন ব্যক্তিরা বর্তমানে জার্মানিতে ঢুকতে পারছেন৷ এসব দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিন কোয়ারান্টিনে থাকতে হচ্ছে৷ গত সপ্তাহ থেকে এই নিয়ম চালু হয়েছে৷
ছবি: Sebastian Gollnow/dpa/picture alliance
যুক্তরাজ্য
সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার পর সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে আবারও বিমান যোগাযোগ চালু করেছে দেশটি৷ তবে ঐ দেশ ও তার প্রতিবেশী কয়েকটি দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে যাওয়া ব্যক্তিদের নিজ খরচে হোটেলে ১০ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টিনে থাকতে হচ্ছে৷
ছবি: Steve Parsons/empics/picture alliance
সুইজারল্যান্ড
সাউথ আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে৷ এছাড়া আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলসহ হংকং, ইসরায়েল, বেলজিয়াম, চেক প্রজাতন্ত্র, নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য, মিশর, মালাউয়ি ও অন্যান্য দেশ থেকে যাওয়া ব্যক্তিদের করোনা টেস্ট রেজাল্ট দেখাতে হচ্ছে৷ সঙ্গে ১০ দিন কোয়ারান্টিনেও থাকতে হচ্ছে৷
ছবি: Sumaya Hisham/REUTERS
যুক্তরাষ্ট্র
বিশ্বের যে-কোনো দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার পর যাত্রীদের করোনা টেস্ট দেখাতে হবে৷ এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর একদিনের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করতে হবে৷ আগে তিনদিনের মধ্যে পরীক্ষা করার নিয়ম চালু ছিল৷ এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পৌঁছার তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে আবারও একটি পরীক্ষা করাতে হবে কিনা সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে৷
ছবি: Chalinee Thirasupa/REUTERS
ক্যানাডা
জার্মানির মতোই ক্যানাডা সাউথ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি দেশ থেকে শুধু ক্যানাডার নাগরিক ও সে দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি আছে এমন ব্যক্তিদের সে দেশে ঢুকতে দিচ্ছে৷ তবে তাদের করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারান্টিনের নিয়ম মানতে হচ্ছে৷
ছবি: Bayne Stanley/ZUMA Wire/picture alliance
ইসরায়েল
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েল সব বিদেশিদের জন্য সে দেশে ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে৷ এছাড়া অসুস্থ ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার বিতর্কিত ব্যবস্থা আবারও চালু করা হয়েছে৷
ইসরায়েলের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে জাপান সব বিদেশি নাগরিকদের সে দেশে ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে৷
ছবি: Koji Sasahara/AP/picture alliance
ফিলিপাইন্স
পর্যটননির্ভর দেশটি টিকাপ্রাপ্ত পর্যটকদের জন্য সে দেশে প্রবেশ সহজ করার পরিকল্পনা করেছিল৷ কিন্তু ওমিক্রনের কারণে সেই পরিকল্পনা স্থগিত রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে৷
ছবি: William West/AFP/Getty Images
অস্ট্রেলিয়া
দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর বুধবার থেকে বিদেশি শিক্ষার্থী ও দক্ষ জনশক্তিদের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু ওমিক্রনের কারণে সেটা দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছে৷
ছবি: Jenny Evans/Getty Images
আফ্রিকা
অ্যাঙ্গোলা, মিশর, মরিশাস, রুয়ান্ডাসহ আফ্রিকার কয়েকটি দেশও সাউথ আফ্রিকা ও তার কয়েকটি প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/N. El-Mofty
10 ছবি1 | 10
কী হবে নতুন বিধি
যারা টিকা নেননি, তাদের উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে। বস্তুত, এখনই তাদের উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আছে। সর্বত্র তারা যেতে পারেন না। নতুন কোভিডবিধি চালু হলে তাদের উপর আরো নিষেধাজ্ঞা জারি হবে। পাশাপাশি, সমাবেশের ক্ষেত্রেও কড়াকড়ি হতে পারে।
যে প্রস্তাব এদিন নেয়া হয়েছে, ডিডাব্লিউ তা দেখেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০ জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না। যাদের ভ্যাকসিন নেয়া নেই, তারা দুইজনের বেশি এক জায়গায় হতে পারবেন না। ক্লাব, ডিস্কো বন্ধ রাখা হতে পারে। থিয়েটার এবং স্পোর্টস কমপ্লেক্সেও কড়াকড়ি জারি হবে। থিয়েটারে ৩০ শতাংশ এবং স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ৫০ শতাংশ মানুষ যেতে পারবেন।
২৮ ডিসেম্বর থেকে এই বিধি চালু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
নেদারল্যান্ডসে লকডাউনশুরু হয়ে গেছে। কিন্তু গোটা ইউরোপেই লকডাউন এবং কোভিডবিধি নিয়ে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। শনি এবং রোববার ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস-সহ একাধিক জায়গায় রীতিমতো মিছিল করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এক শ্রেণির মানুষ। এর মধ্যে টিকা-বিরোধীরাও আছেন। বুস্টার ডোজেরও বিরোধিতা করছেন অনেকে।