নোয়াখালীর বশিরের কঠিন জীবন
১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ডয়চে ভেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বশির তাঁর জার্মানি আসার গল্প ও অতীত নিয়ে কথা বলেন৷ নোয়াখালীতে তিনি কৃষক ছিলেন৷ কিন্তু পর্যাপ্ত আয় হত না বলে নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে দুবাই চলে যান৷ সেখানে তিনি নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন৷ দুবাইতে থাকাকালীন কয়েকবার বাংলাদেশে গিয়েছিলেন৷ শেষবার যান ২০০৮ সালে৷ এরপর ২০১০ সালে আরও উন্নত জীবনের আশায় ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন৷ প্রায় পাঁচ বছর পর তিনি জার্মানিতে এসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন৷
এই পাঁচ বছরের অনেকটা পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হয়েছে৷ দুবাই থেকে ওমান, ইরান হয়ে তুরস্কে পৌঁছেছিলেন৷ সেখানে দুর্বৃত্তদের কবলে পড়েন তিনি৷ প্রায় সাত মাস তাদের কাছে বন্দি থাকার পর প্রায় সাত হাজার ইউরো দিয়ে মুক্তি পান৷ দেশে বশিরের পরিবার জমিজমা বিক্রি করে সেই টাকার জোগান দিয়েছিল৷ মুক্তি পেয়ে বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, হাঙ্গেরি ও অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানিতে পৌঁছেন বশির৷
এখন তিনি থাকছেন একটি শরণার্থী ক্যাম্পে৷ এক রুমে তিনি ছাড়াও আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপ থেকে আসা দুজন থাকেন তাঁর সঙ্গে৷
বশির জানান, তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে৷ বড় মেয়ের বিয়ের জন্য কষ্ট করে টাকা জমাচ্ছেন৷ জানুয়ারি মাসে তাঁর একটি ক্ষেতে কাজ শুরুর কথা রয়েছে৷
বশির আশা করছেন তাঁর আশ্রয়ের আবেদন অনুমোদিত হবে৷ তাহলে পরিবারকে বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে নিয়ে আসবেন৷ আর যদি তা না হয় তাহলে কিছু অর্থ জমিয়ে দুই-তিন বছর পর দেশে ফিরে যাবেন৷ ততদিনে হয়ত বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে যাবে৷ আর ছেলের বয়স তখন হবে ১০ কী ১১, যাকে তাঁর কখনও কোলে নেয়া হয়নি৷
২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২,৩৯৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক জার্মানিতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন বলে অভিবাসন সংস্থা সূত্রে জানা গেছে৷
এস্থার ফেলডেন/জেডএইচ