আইটিবি মেলা
৯ মার্চ ২০১২![Mit einem Putzlappen bringt ein Messebauer am Montag (05.03.2012) in den Messehallen in Berlin eine überdimensionale "Goldmaske" des ägyptischen Pharaos Tutanchamun auf Hochglanz. Etwa 12.000 Aussteller präsentieren auf der Internationalen Tourismus Börse (ITB) vom 07. - 11.03.2012 auf dem Messegelände in den Hallen unter dem Funkturm ihre Reiseangebote. Partnerland ist Ägypten. Foto: Wolfgang Kumm dpa/lbn +++(c) dpa - Bildfunk+++](https://static.dw.com/image/15790992_800.webp)
জার্মানরা ফুটবলে একাধিকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে৷ কিন্তু একটি হিসেবে তারা প্রায় প্রতিবছরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে থাকে৷ সেটি হল পর্যটনে৷ জার্মানদের মতো আর কোনো জাতি এতো বেড়াতে ভালোবাসে না, এবং বেড়ানোর জন্য এতো টাকাও খরচা করে না৷ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আর্থিক সংকট ও বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা সত্ত্বেও জার্মানরা ২০১১ সালে শুধু বিদেশে বেড়ানোর জন্য মোট ৬১ বিলিয়ন ইউরো ব্যয় করেছে৷
বার্লিনের আন্তর্জাতিক পর্যটন বাজার বলে পরিচিত ট্যুরিজম ফেয়ারটি হল বিশ্বের বৃহত্তম পর্যটন মেলা৷ এ'বছরের মেলা শুরু হয়েছে গত বুধবার, ৭ই ফেব্রুয়ারি৷ টিভি টাওয়ারের কাছে মেলা প্রাঙ্গণে ২৬টি বড় হল'এর সব ক'টি পুরোপুরি ভর্তি৷ স্টল ও স্ট্যান্ড দিয়েছেন ১৮৭টি দেশ থেকে আগত ১০,৬৪৪ প্রদর্শক৷
আইটিবি ২০১২'র সহযোগী দেশ হল মিশর, যে কারণে মিশরের পর্যটন মন্ত্রী মুনির ফখরি আব্দেল নুর স্বয়ং উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন৷ তার বক্তব্য: ‘‘এক দশকের বেশি ধরে পর্যটন মিশরীয় অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভগুলির মধ্যে গণ্য৷ দেশের প্রতি সাতটি চাকরির মধ্যে একটি এই পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর৷ ২০১০ সালে পর্যটন থেকে মিশরের আয় হয়েছে সাড়ে বারো বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ বিদেশি মুদ্রা অর্জনে পর্যটন ছিল দ্বিতীয় স্থানে৷ সেই কারণে পর্যটন শিল্পের বিকাশ মিশর সরকারের কাছে অগ্রাধিকার পাবে, তা যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক বা কেন৷ আমরা তার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো সৃষ্টির জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ নেব, যা'তে আমরা ২০১৭ সালের মধ্যে বছরে তিন কোটি পর্যটকের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি৷''
২০১১ সালে অবশ্য মিশরে পর্যটকদের সংখ্যা ছিল এক কোটি৷ ওদিকে পর্যটনের বাজারে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা তো কম নয়৷ যেমন বার্লিন আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলায় গ্রিস এবার বড় করে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে৷ গ্রিসের অর্থনীতির যা অবস্থা, তা'তে পর্যটন থেকে আমদানিটা দেশের পক্ষে আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে৷
আশ্চর্য এই যে, আর্থিক সংকটের আগে জার্মানরাই ছিল গ্রিকদের সবচেয়ে প্রিয় পর্যটক৷ ইউরোপীয় সভ্যতার জন্ম যে দেশে, জার্মানরা জীবনে অন্তত একবার সেখানে ঘুরে আসাটাকে তাদের কর্তব্য বলে মনে করত৷ তা'ছাড়া গ্রিসে সূর্যস্নান থেকে পান-ভোজন, সবই ভালোমতো করা যায়৷ দামও জার্মানদের চোখে সস্তাই৷ কিন্তু আর্থিক সংকট দু'দেশের মানুষ, এবং রাজনীতিকদের সম্পর্কের উপর ছায়া ফেলেছে৷ গ্রিস এবার বার্লিনে ঘটা করে প্রদর্শনী করে সেই ছায়াটাকেই দূর করতে চাইছে৷
জার্মান পর্যটকদের টানতে তো অনেক দেশই চায়৷ কিন্তু যে দেশটি জার্মান পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি টানে, সেটি হল জার্মানি৷ জার্মানরা নিজের দেশেই সবচেয়ে বেশি বেড়ায়৷ পর্যটনের একটি হিসেব হল হোটেলে কত মানুষ কতো রাত কাটাল৷ গতবছর জার্মানিতে সেই রাত্রিবাসের সংখ্যা বেড়েছে চার শতাংশ৷ নতুন হল এই যে, বিদেশিরাও জার্মানিকে পর্যটনের লক্ষ্য হিসেবে আবিষ্কার করছে৷ ২০১১ সালে হোটেলে রাত্রিবাসের ১৬ শতাংশ ছিল বিদেশি পর্যটকদের অনুগ্রহে৷
তবে পর্যটন শিল্পের রমরমায় সরকার ও পৌর প্রশাসনগুলি নতুন কর আদায়ের পন্থা দেখছে৷ বিমানে চড়লে যাত্রীদের একটি নতুন কর দিতে হচ্ছে৷ হোটেলে বেড প্রতি কর চাপানো, স্টিমার যাত্রার উপর সেলস ট্যাক্স বাড়ানো, এ'সব চলেছে৷ কাজেই জার্মান পর্যটন সমিতি ডিআরভি'র প্রধান ইয়ুর্গেন বুইশি বলেছেন: ‘‘জার্মানির পর্যটন শিল্পের উপর আর ভার চাপানো চলবে না৷ এমনিতে স্থিতিশীল এবং সংকটের সময়েও অর্থনৈতিকভাবে সফল এই শিল্পটির রাজনীতি ও আর্থিক নীতির তরফ থেকে শান্তির প্রয়োজন৷''
জার্মানির জিডিপি'তে মোটর গাড়ি শিল্পের চাইতেও বেশি অবদান রাখে পর্যটন শিল্প, জানালেন বুইশি৷ চাকরি জোটায় ৩০ লাখ মানুষকে, অর্থাৎ মোট শ্রমসংস্থানের সাত শতাংশ৷ কথাটা সব জার্মান জানেন কিনা সন্দেহ৷
প্রতিবেদন: সাবিনে কিনকারৎস / অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ