1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে পানীয় জলের দূষণ

২০ সেপ্টেম্বর ২০১১

জার্মানিতে পানীয় জলের মান অত্যন্ত উন্নত হলেও কল বা ট্যাপ থেকে যে পানি আসে, তা সবসময় সন্তোষজনক নয়৷ কলের পানির নমুনা নিয়ে এক পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গেছে যে, এর অর্ধেকই জীবাণুযুক্ত৷

জার্মানিতে কলের পানি সব সময় বিশুদ্ধ নয়ছবি: Fotolia/Udo Kroener

সম্প্রতি জার্মানির ১০টি শহরের স্টেশন, টাউন হল, ইউনিভার্সিটি, বৃদ্ধাশ্রম ও হাসপাতালের কলের পানির বিশুদ্ধতা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছিল৷ যার ফলাফল বেশ উদ্বেগজনক৷ গবেষণাগারে পরীক্ষিত ৫০ শতাংশ নমুনাই বিপজ্জনক জীবাণু দ্বারা দূষিত৷ বিশেষ করে লিজিয়োনেলা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি চিন্তার উদ্রেক করে৷ যে সব মানুষের শারীরিক প্রতিরক্ষা ক্ষমতা দুর্বল, তাদের জন্য বিপজ্জনক এই ব্যাকটেরিয়া৷ রাইনলান্ড টেকনিক্যাল ইন্সপেকশন অ্যাসোসিয়েশন’এর মুখপাত্র ভাল্টার ডর্মাগেন এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘লিজিয়োনেলা উষ্ণ পানিতে আরাম বোধ করে৷ নিশ্বাস প্রশ্বাসের সাথে এটি ফুসফুসে চলে আসে, যা থেকে ফুসফুসের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে৷’’

পাইপের সংস্কারের অভাবে পানি হারায় বিশুদ্ধতা

জার্মান স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে পানীয় জল জীবাণু বা রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা দূষিত কিনা, সে ব্যাপারে নিয়মিত পরীক্ষা করা হয়৷ স্থানীয় ওয়াটার সাপ্লাই কেন্দ্রগুলি বিশুদ্ধ পানীয় জল বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়৷ কিন্তু বিভিন্ন দালান কোঠায় পানির কলের লাইনগুলি পুরানো ও ভাঙাচোরা থাকায় অনেক সময় রাসায়নিক দ্রব্য ও রোগজীবাণু খাবার পানিতে মিশে যায়৷ কখনো সখনো শেওলা ও জমে যায় পানির পাইপে৷

পানীয় জলের দুই তৃতীয়াংশই আসে ভূগর্ভস্থ পানি থেকে৷ মাটির নীচ থেকে নানা স্তর ভেদ করে আসার ফলে এই পানি ফিল্টার হয়েই আসে বেশ খানিকটা৷ তাই ওয়াটার সাপ্লাই কেন্দ্র থেকে অল্প কিছু পরিশোধন করে গৃহস্থালীর জন্য পাঠানো হয় পানি৷

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীর থেকে প্রতিদিন আড়াই লিটারের মত পানি বের হয়ে যায়৷ ফলমূল, শাকসবজি ইত্যাদির মাধ্যমে কিছুটা পূরণ হয় এই ঘাটতি৷ কিন্তু পানি ও ফলের রস ইত্যাদির মাধ্যমে বাকিটা পূরণ করতে হয়৷ বিশেষজ্ঞদের মতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক এক থেকে দেড় লিটার পানি পান করা প্রয়োজন৷ ট্যাপের পানি প্রতিটি গৃহস্থালীতেই সহজলভ্য এবং খরচও কম৷ বাজার থেকে কেনা বোতলের মিনারেল ওয়াটারের মত শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক খনিজ পদার্থ কলের পানিতেও থাকে৷ ফিল্টার করে নিলে এই পানির স্বাদ ও গুণগত মানও বৃদ্ধি পায়৷ তবে কয়েক ঘণ্টা পানি চলাচল না করলে পাইপে জারণ ও ব্যাকটেরিয়ার দূষণ হতে পারে৷ এ কারণে সকালে কিছুক্ষণ ছেড়ে না রেখে কলের পানি পান না করাই ভাল৷

বিভিন্ন ধাতুর তৈরি পানির পাইপ বিপজ্জনক হতে পারে

পুরানো বাড়িঘরে মাঝে মাঝে দেখা যায় সিসার তৈরি পানির পাইপ৷ এই সিসা ট্যাপের পানিতে চলে আসতে পারে৷ প্রতি লিটার পানিতে ২৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি সিসা থাকাটা বিপজ্জনক৷ তবে সময়ের সাথে সাথে পানির পাইপে জমে যাওয়া চুন সিসাকে কিছুটা প্রতিহত করে৷

কোনো কোনো বাড়িতে তামার তৈরি পানির পাইপ লাগানো হয়৷ পানিতে মাত্রারিক্ত তামাও স্বাস্থ্যের হানি করে৷ নতুন অবস্থায় তামার তৈরি পাইপ থেকে প্রচুর পরিমাণে তামা পানিতে চলে আসে৷ পরে অবশ্য পানিতে তামার মিশ্রণ কমে আসে৷

অন্যদিকে দিস্তার তৈরি পাইপও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে৷ প্রতি লিটার পানিতে পাঁচ মাইক্রোগ্রামের বেশি দিস্তা থাকাটা ঠিক নয়৷ পানীয় জলে দিস্তার পরিমাণ খুব বেশি থাকলে বমির ভাব হয়৷ বিশেষ করে ছোট বাচ্চা ও সন্তানসম্ভবা নারীদের জন্য ধাতু মিশ্রিত পানি পান করা বিপজ্জনক৷

দূষণমুক্ত হলে ট্যাপের পানি সুপেয় হতে পারে

পানীয় জল যাতে কীটনাশক, জীবাণু বা নানারকম রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা দূষিত না হয়, সে ব্যাপারে কঠোর আইনকানুন থাকলেও কার্যত নানা ফাঁকফোকর গলে ব্যাহত হচ্ছে এই নিয়ম৷ এই প্রসঙ্গে ভাল্টার ডর্মাগেন বলেন, ‘‘কিন্ডারগার্টেন, স্কুল ও বিভিন্ন অফিস আদালতের মত গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে খুব কমই পানির বিশুদ্ধতার ব্যাপারে পরীক্ষা করা হয়৷ পানীয় জলের বিধিবিধানকে আরো কড়াকড়িভাবে প্রয়োগ করা উচিত৷ পানিতে দূষিত পদার্থের সঠিক মাত্রা নির্ধারণ ও ঘন ঘন পরীক্ষার নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকতে হবে৷ সর্বোপরি পানির পাইপ লাইনগুলির আমূল সংস্কার প্রয়োজন৷ এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে জার্মানির বেশির ভাগ অঞ্চলেই কলের পানি স্বাস্থ্যকর ও সুলভ মূল্যের পানীয় হতে পারে৷’’

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

লিজিয়োনেলার মতো জীবাণুর মডেলছবি: Ansgar Meemken
উৎসে বিশুদ্ধ হলেও অনেক সময়ে পাইপের সংস্কারের অভাবে পানি দূষিত হয়ে যায়ছবি: picture-alliance/ ZB
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ