1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানি’র প্রতিবন্ধীরা

মার্কুস ল্যুটিকে/আরবি১১ ডিসেম্বর ২০১৩

গত ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হলো৷ প্রতিবন্ধীদের সমাজে সম্পৃক্ত করতে জার্মানি সচেষ্ট, এই কথা বলা হলেও কর্মক্ষেত্রে কিন্তু নানারকম অসুবিধার সম্মুখীন হন তারা৷

Symbolbild Behinderung
ছবি: Fotolia/apops

বসনিক খুশি মনেই কাজ করতে যান৷ প্রায় এক বছর যাবৎ ২৪ বছর বয়সি এই ব্যক্তি কোলনের একটি ওয়ার্কশপে কাজ করছেন ও প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন৷ বসে থাকলে তাঁর শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বোঝা যায় না৷ ‘স্পাসটিসিটি' রোগের কারণে ডান পা নাড়াতে পারেন না তিনি৷ ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুসিস্টেম থেকে অসুখটি হয়৷ বসনিক জানান, ‘‘আমার ডান দিকে স্পাসটিসিটি হয়েছে, শুধু পায়ে৷''

প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ কাজ

কোলনের এই ওয়ার্কশপে প্রশিক্ষণের কাজ পাওয়ার আগে বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করেছেন তিনি৷ কিন্তু সুবিধা হয়নি৷ তবে কোলনের ওয়ার্কশপে মানিয়ে নিতে পারছেন তিনি৷ ভালও লাগছে৷ বসনিক বলেন ‘‘আজ বেশ শান্ত৷ সবসময় এইরকম নয়৷ ক্রিসমাসের বাজার আমরা প্রায় শেষ করে ফেলেছি৷'' বসনিক কোলনের জনকল্যাণমূলক একটি কাঠের ওয়ার্কশপে কাজ করেন৷ প্রতিবন্ধীদের জন্য জার্মানির ৭০০ ওয়ার্কশপের মধ্যে এটি একটি৷

ছবি: Mehr

তাঁর কাজের জন্য ৫.১১ ইউরো পান বসনিক৷ এক ঘণ্টা বা এক দিনের নয় বরং এক মাসের বেতন এটি৷ প্রশিক্ষণ শেষ হলে বেশি টাকা পাবেন৷ ‘‘বেতন মাসে ৭৫ ইউরো থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় ৮০০ থেকে ৯০০ ইউরোতে৷ জার্মানিতে এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে গড় বেতন ২৩০ ইউরো,'' বলেন ওয়ার্কশপের পরিচালক এঙ্গেলব্যার্ট বেকার৷ এই অল্প টাকা দিয়ে জীবনধারণ করা সম্ভব নয় বলে সরকার বাকিটা পূরণ করে দেয়৷ এর ফলে মোটামুটি চলে যায় কর্মীদের৷ বেকার বলেন, তিনি আরো বেশি বেতন দিতে ইচ্ছুক৷ ‘‘সমস্যা হলো আমরা একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান৷ আমি তো আয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে পারি না৷''

প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা

ওয়ার্কশপগুলিকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হয়৷ ক্রিসমাসের বাজারের জন্য হাতের কাজের জিনিসের পাশাপাশি কোলনের ওয়ার্কশপটিতে গাড়ির অংশ, জানালার ফ্রেম, সোলার মডিউলের জন্য সাপোর্ট ইত্যাদি তৈরি করা হয়৷

মূলত এই ধরনের ওয়ার্কশপগুলি সাধারণ কর্মবাজারে যাওয়ার একটা সোপান হিসাবে ধরা হয়েছিল৷ কিন্তু বাস্তবের চিত্রটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যরকম৷ ওয়ার্কশপের কর্মীরা সাধারণ প্রতিষ্ঠানে কাজ করার তেমন সুযোগ পান না, বা তাদের আগ্রহও থাকে না৷

প্রতিষ্ঠানগুলি নিয়ম মেনে চলে না

নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানগুলির কমপক্ষে ৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী কর্মীকে নিয়োগ দেওয়ার কথা৷ কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানই এই নিয়মটা মেনে চলতে চায় না৷ এর চেয়ে বরং তারা কিছু খেসারত দিতেও প্রস্তুত৷ কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত নয়, বলে মনে করেন প্রতিবন্ধী এসোসিয়েশনের প্রধান ইলিয়া সাইফার্ট৷ ‘‘কেউ আইন অমান্য করলে দণ্ড পাওয়া উচিত৷ সামান্য ক্ষতিপূরণ দিয়েই পার পেয়ে যাওয়াটা ঠিক নয়৷''

ছবি: Fotolia/mangostock

সাইফার্ট কর্মবাজারে সামগ্রিকভাবে চিন্তাধারার একটা পরিবর্তন আশা করেন৷ কাজের চাপেও অনেক মানুষ ‘প্রতিবন্ধী' হয়ে পড়ে৷ ‘‘এটা হওয়া উচিত নয় যে কাজের চাপে মানুষ মানসিক দিক দিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বে এবং চাপটা কম বলে এই ধরনের ওয়ার্কশপে কাজ করা ছাড়া আর গতি থাকবে না৷''

কর্মবাজারে মানসিকতার সমস্যা ছাড়াও শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের প্রয়োজন বিশেষ সহায়ক৷ আর এজন্য প্রয়োজন অর্থ৷ ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবার পরিজনের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই কেবল সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অর্থ সাহায্য পাওয়া যায়৷

সাইফার্ট জানান, ‘‘অবশ্য গত বছরগুলিতে এক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি হয়েছে৷ ২০-২৫ বছর আগেও সরকারি যানবাহনে হুইল চেয়ার নিয়ে ঢোকার কথা কেউ চিন্তা করতে পারতো না৷ আজ শহরগুলিতে এটা কোনো সমস্যাই নয়৷ বাস একটু কাত হয় বা এজন্য বিশেষ প্রবেশ পথ থাকে৷''

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এব্যাপারে জার্মানির অবস্থান মধ্যম সারিতে৷ পূর্ব ইউরোপে প্রতিবন্ধীদের অবস্থাটা আরো খারাপ৷ অন্যদিকে স্ক্যান্ডিনেভিয়া অনেক দিক দিয়ে এগিয়ে আছে৷ এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে হলেও জার্মানিরও অগ্রগতি হচ্ছে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ