লোয়ার স্যাক্সনির বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখলেন জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎস। বললেন, এক হয়ে বন্য়ার মোকাবিলা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
জার্মানিজুড়ে প্রবল বৃষ্টির ফলে নদীগুলির জলস্তর বাড়ছে। লোয়ার স্যাক্সনির অনেক জায়গায় বন্যার জল ঢুকে পড়েছে। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হাজার হাজার কর্মী পরিস্থিতি সামলাবার চেষ্টা করছেন।
এই অবস্থায় জার্মানির বন্যাদুর্গত বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করলেন চ্যান্সেলর শলৎস। ২০২৩-এর শেষদিনে এবং নতুন বছরের ঠিক আগে তিনি ঘুরলেন বন্যাক্রান্ত এলাকায়। মানুষকে বললেন, ''আবহাওয়া ও প্রকৃতি আমাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। এখন স আমাদের এক হয়ে তার মোকাবিলা করতে হবে। এটাই এখন সবচেয়ে জরুরি কাজ।''
তিনি বলেছেন, ''বিভিন্ন সংস্থা বন্য়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। পুলিশ, দমকল, সশস্ত্র বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবীরাও তাতে সামিল হয়েছেন।''
জার্মানিতে বন্যায় হুমকিতে সাফারি পার্কের ছোট প্রাণীরা
উত্তর জার্মানির সাফারি পার্ক থেকে দুই শতাধিক বানর, লেমুর, প্রেইরি কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণীকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture alliance
জলমগ্ন সাফারি পার্ক
সেরেংগেতি চিড়িয়াখানা এবং পার্কের বড় একটি অংশ বন্য়ার জলে পুরোপুরি ডুবে গেছে। লোয়ার সাক্সনি রাজ্যে অবস্থিত এই পার্কটি মাইসে নদীর কাছেই অবস্থিত। বড়দিনের ছুটির কয়েকদিনে মুষলধারে বৃষ্টিতে নদীর জল উপচে প্রবেশ করেছে স্থলভাগেও। তবে শীতকালীন অফ-সিজনের কারণে পার্কটি এমনিতেও এখন দর্শণার্থীদের জন্য বন্ধ রয়েছে।
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture alliance
বড় প্রাণীরা আপাতত থাকছে
সাফারি পার্কটির মাসাই মারা লজ নামের একটি অংশে হরিণ এবং জিরাফের চড়ে বেড়ানোর স্থান। সেখানে অতিথিদের নিশিযাপনের জন্য কিছু কুঁড়েঘরও রয়েছে। সেখানে ঘোড়ার আস্তাবলও রয়েছে। তবে বড় প্রাণীদের এখনই পার্ক থেকে স্থানান্তর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পার্কের মুখপাত্র আস্টা ক্নোথ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আরো খারাপ হলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন তারা।
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture alliance
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ
পুরো পার্কেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। জরুরি জেনারেটরের মাধ্যমে আস্তাবল গরম রাখা হচ্ছে। পানীয় জলের সরবরাহ ঠিক রাখার জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে সাময়িক এই বিদ্যুৎব্যবস্থা।
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture alliance
ঘর ছেড়েছেন বাসিন্দারাও
কেবল পার্কটির প্রাণী নয়, আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদেরও বন্যার কারণে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে। লোয়ার সাক্সনিতে ভেসার, দ্য আলার, দ্য লাইনে এবং ওকার নদীর জল বিপজ্জনক সীমায় রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় জারি করা হয়েছে বন্যা সতর্কতা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্টেফান ভাইল বন্যাদুর্গত নানা এলাকার পাশাপাশি পরিদর্শন করেছেন সেরেংগাতি পার্কও।
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture alliance
বৃষ্টি থামলেও শঙ্কা কমেনি
জার্মানির বিভিন্ন অংশে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায় সতর্কবার্তা তুলে নেয়া হয়েছে। কিন্তু লোয়ার সাক্সনিতে এখনও সতর্কবার্তা জারি রয়েছে। বৃষ্টি থামলেও উজান থেকে বয়ে আসা বাড়তি জল এখনও নেমে যায়নি। ফলে ঝড়ের আশঙ্কা কমে গেলেও বন্যা পরিস্থিতির এখনই উন্নতি হচ্ছে না।
ছবি: Philipp Schulze/dpa/picture alliance
5 ছবি1 | 5
শলৎস উত্তর লোয়ার স্যাক্সনির বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
বন্যার অবস্থা
গত কয়েকদিন ধরে জার্মানির বিবিন্ন অ়ঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। লোয়ার স্যাক্সনি, নর্থ রাইন-ওয়েস্টলিয়ায় প্রচুর মানুষ বন্য়াক্রান্ত।
নদীর জল এখন একটু কমলেও কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, বৃষ্টি ও বন্যার ফলে বাঁধের মাটি নরম হয়ে গেছে। ফলে অনেক জায়গায় বাঁধ বা নদীর পাড় ভেঙে যেতে পারে।
জার্মানিতে জলসিক্ত বড়দিন
জার্মানির অনেক অংশেই এবার আর শুভ্র বড়দিনের দেখা মেলেনি৷ বরং ভারী বর্ষায় নদী নালা উপচে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা৷ ফলে ছুটির সময়টা অনেকের কাটছে ব্যস্ততার মাঝে৷
ছবি: Ulrich Stamm/Future Image/IMAGO
থুরিংগিয়ায় উদ্ধার তৎপরতা
জার্মানির থুরিংগিয়া রাজ্যের ছোট্ট শহর ভিন্ডাহাউসেন বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি৷ বড়দিনের সন্ধ্যায় সেখানকার সব রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যায়৷ ফলে শহরটির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়৷ শহরটির বিদ্যুৎ এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাও কাজ করছে না৷
ছবি: Stefan Rampfel/dpa/picture alliance
লোয়ার স্যাক্সনিতে বালুর বস্তা
বড়দিনের সন্ধ্যায় কয়েকশত উদ্ধারকর্মী এভাবে মানববন্ধন তৈরি করে বালুর বস্তা বহন করেছেন৷ ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পাড় ভেঙ্গে পড়ার দশা হলে বালুর বস্তা দিয়ে তা রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়৷ উদ্ধারকর্মীরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে তাদের এই উদ্যোগ এখন অবধি সফল৷
ছবি: Lars Penning/dpa/picture alliance
ড্রেসডেনের বন্যা প্রতিরোধক গেট
ঐতিহাসিক শহর ড্রেসেডেনে বড়দিনের দুপুরে বন্যা প্রতিরোধক মোবাইল গেট বসানো হয়েছে৷
ছবি: Sebastian Kahnert/dpa/picture alliance
হেসেতে বন্যার সতর্কতা
জার্মানির একেক রাজ্যের বন্যা সতর্কতার মাত্রা একেক রকম৷ সাধারণত তিন এবং চার নম্বর সতর্কবার্তা সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং ক্ষতিকর৷ হেসেতে বন্যার সতকর্তার মাত্রা তিন নম্বরে রয়েছে৷
ছবি: Nadine Weigel/dpa/picture alliance
হানোফারে পানিতে তলিয়ে গেছে মাঠঘাট
হানোফারের মারিয়েনব্যার্গ দুর্গের আশেপাশের এলাকা পানির নীচে তলিয়ে গেছে৷
ছবি: Julian Stratenschulte/dpa/picture alliance
রুহর নদীর পানি উপচে বন্যা
টানা কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রুহর নদীর পানিও উপচে পড়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে৷ বড়দিনের পর পানি আবার কমতে শুরু করেছে৷
ছবি: Jochen Tack/IMAGO
দানিউবের পানি বেড়েছে
রেগেন্সবুর্গের বারো শতকের স্টোন ব্রিজটি আজও টিকে আছে৷ দানিউব নদীর উপরের এই সেতুটি অবশ্য বন্যার পানিতে খুব একটা ঝুঁকিতে নেই৷ কারণ সেটি নিকট অতীতে সংস্কার করা হয়েছে৷ জার্মানির আরো অনেক এলাকায় বন্যার পানি বাড়লেও দেশটিতে এখনো প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি৷
ছবি: Armin Weigel/dpa/picture alliance
7 ছবি1 | 7
সরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ
সরকরি কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, মানুষ যেন বন্য়া-পর্যটনে না যান। 'তাতে জরুরি ভিত্তিতে হাতে নেয়া কাজ ব্যহত হবে।
সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, হ্য়ানোভারের কাছের শহরে ফ্লাড ট্যুরিজমের সংখ্য়া বেড়ে যাওয়ায় জরুরি পরিষেবার কাজ ব্যহত হচ্ছে। তাই অত্যন্ত জরুরি কারণ না থাকলে বাড়ির বাইরে যাওয়া বা ওই শহরে ভিড় না জমাবার জন্য অনুরোধ করেছে প্রশাসন।