ফেডারাল জার্মান সরকার ও রাজ্যসরকারগুলি মিলে যে প্রায় আটশো কোটি ইউরোর বন্যাত্রাণ তহবিল সৃষ্টি করতে চলেছেন, তা ২০০২ সালের বন্যাত্রাণ তহবিলকেও ছাপিয়ে যাবে৷
বিজ্ঞাপন
এলবে ও সালে নদীর পানি এখনও সরেনি৷ কোথাও বাঁধ ভেঙে পানি মাঠঘাট প্লাবিত করেছিল; কোথাও প্রশাসনের তরফ থেকেই রাস্তা খুঁড়ে পানি বের করে দিয়ে মাঠেঘাটে নিয়ে গিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ এখনও অনেক জায়গায় সেই পানি দাঁড়িয়ে৷ কোথাও আবার পানি ফিরে যাচ্ছে নদীখাতে৷ ধীরে ধীরে বোঝা যাচ্ছে, সংশ্লিষ্ট জনপদগুলিতে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে৷
ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছে বন্যা
ডানিউব নদীর তীরের বাসিন্দা এখন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত৷ কিন্তু জার্মানিতে বন্যা এখনো শেষ হয়নি৷ বরং এলবে এবং সালে নদীর দিকে এখন নজর সবার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বন্যার পানি বাড়ছে
জার্মানির স্যাক্সনি এবং স্যাক্সনি-আনহাল্টের বড় অংশ এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে৷ এলবে এবং সালে নদীর পানি কমার কোন ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে না৷ বৃষ্টি থেমে গেলেও পানি সরে যেতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
কিছু মানুষ নিরাপদ
ডানিউব নদী অন্তত খানিকটা স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে৷ পাসাউয়ে পানির পরিমাণ কমে গেছে, তবে এখনো শহরের অংশবিশেষের অধিবাসীদের ঘরে ফিরতে দেওয়া হয়নি৷ পাসাউবাসী বড় বন্যার কবলে পড়লেও কোন প্রাণহানি হয়নি৷ মূলত উদ্ধারকর্মী এবং সেনাদের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় চ্যান্সেলর ম্যার্কেল
হেলিকপ্টারে করে বন্যা উপদ্রুত এলাকা ঘুরে দেখছেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ আসন্ন নির্বাচনের স্বার্থে এমন ছবি রাজনীতিবিদদের বড় প্রয়োজন৷ ২০০২ সালে বন্যার সময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন ম্যার্কেলের পূর্বসূরি গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার৷ ম্যার্কেল বন্যা উপদ্রুতদের অর্থ সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছেন৷
ছবি: Reuters
পানি যা রেখে গেছে
বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর ক্ষতির মাত্রা সম্পর্কে প্রকৃত ধারণা পাওয়া যায়৷ পাসাউয়ের বাসিন্দারা এভাবে দ্রুত কাদা সরিয়ে ফেলছেন৷ কেননা, এই কাদা বেশ ক্ষতিকারক৷
ছবি: Reuters
গামবুটের সংকট
বন্যা উপদ্রুত এলাকার মানুষদের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে গামবুট৷ কিন্তু জুতার দোকানগুলোতে এই সংকট দেখা দিয়েছে৷ পানি এবং কাদা থেকে রেহাই পেতে অনেকেই এই জুতা কিনেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
এলবে পানি বাড়ছে
‘এলবের ফ্লোরেন্স’ খ্যাত ড্রেসডেন শহরের ঐতিহাসিক ভবনগুলোর অংশবিশেষে বন্যার পানি ঢুকে গেছে৷ এই পানির ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো কেউ ধারণা করতে পারছে না৷
ছবি: Reuters
ভরসা বালুর বস্তা
বন্যার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বালুর বস্তার ব্যবহারও বাড়ছে৷ বালুর বস্তা পরিবহনে সবাই হাত লাগাচ্ছেন৷
ছবি: Reuters
এই প্রাচীর কি ভেঙে পড়বে?
হালের গিমরিৎস বাঁধ রক্ষায় এভাবেই বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে৷ কিন্তু পানি বাড়তে থাকলে একসময় এই বাঁধ আর টেকানো যাবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
উদ্বিগ্ন চাহনি
স্যাক্সনি-আনহাল্টের হালে শহর সালে নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে হুমকির মুখে রয়েছে৷ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে তাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন সেখানকার বাসিন্দারা৷ ধীরে ধীরে পানির উচ্চতা বাড়ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
9 ছবি1 | 9
২০১৩ সালের বন্যা ২০০২ সালের বন্যার মতো ভয়াবহ না হলেও, মনে রাখতে হবে, এবারের বন্যা ঘটেছে প্রায় একই অঞ্চলে এবং একই রাজ্যগুলিতে৷ কাজেই ২০০২ সালে যারা বন্যায় সব কিছু হারিয়েছিলেন এবং পরে সাহায্য, ঋণ, নিজের সামর্থ্য, এ সব মিলিয়ে আবার বাড়ি-ঘর. ক্ষেত-খামার, দোকান-কারখানা-রেস্তরাঁ গড়ে তুলেছিলেন – তারাই আবার ঠিক ১১ বছর পরে সেই দুঃসহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন৷
২০০২ সালের বন্যার পর ত্রাণ তহবিলের আয়তন ছিল ৬৫০ কোটি ইউরো৷ এবার সেটাকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৮০০ কোটি ইউরো৷ পরে ক্ষতির পরিমাণ বুঝে আরো সাহায্য কি ঋণের ব্যবস্থা করা হবে৷ ত্রাণ তহবিলের জন্য সরকারি বন্ড ইস্যু করার কথা ভাবছেন সরকার৷ সাপ্লিমেন্টারি বাজেট তৈরি করেও অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নও দৃশ্যত সাহায্য করবে৷
বন্যাপীড়িতরা আপাতত স্থানান্তরিত অবস্থাতেই ৪০০ ইউরো করে হাতে পাচ্ছেন তাৎক্ষণিক সাহায্য হিসেবে৷ পরে তারা অনুরূপ সহজভাবে মোট এক হাজার ইউরো এককালীন অর্থসাহায্য পাবেন৷ তারপরে আসবে বাড়িঘর সারানোর জন্য সাহায্য, অনুদান ও ঋণ – কিন্তু তার জন্য বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থায় আবেদনপত্র জমা দিতে হবে৷
এক কথায়, জার্মানির মতো দেশে বন্যা শুধু একক মানুষ কিংবা জনপদের বিপদ নয়, দায় নয়৷ গোটা দেশ সে ভার বহণ করার জন্য এগিয়ে আসে, কাঁধে কাঁধ মেলায়৷