জার্মানিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় তহবিল ঘোষণা
২১ জুলাই ২০২১
সাম্প্রতিক বন্যায় বাড়ি-ঘর, ব্যবসা, রাস্তাঘাট ও রেলপথের কয়েকশত কোটি ইউরোর ক্ষতি হওয়ার পর তা কাটিয়ে উঠতে আক্রান্ত এলাকায় জরুরি অর্থ সহায়তা গোষণা করেছে ম্যার্কেল সরকার৷
বিজ্ঞাপন
বুধবার এ নিয়ে কথা বলতে মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠক করেনচ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী ওলাফ শোলৎস জানান, জরুরি সহায়তায় ২০ কোটি ইউরো বরাদ্দ করতে রাজি হয়েছে ফেডারেল সরকার৷
এর আগে জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছিল এই তহবিল হবে ৪০ কোটি ইউরোর৷ এর অর্ধেক দেবে ফেডারেল সরকার, বাকি অর্থ আসবে রাজ্যগুলোর তহবিল থেকে৷
পরবর্তীতে অতিপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে বড় আকারের শত কোটি ইউরোর প্যাকেজ ঘোষণা করার কথাও ভাবছে সরকার৷ বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো হিসাব করা হচ্ছে৷ তবে সড়ক ও রেলপথ মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ২০০ কোটি ইউরো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
বন্যার পর জার্মানদের বাঁচার লড়াই
চকিত বন্যার জল নেমেছে। কিন্তু তা ফেলে গিয়েছে ধ্বংসস্তূপ। আর সেই সব সরিয়ে বাঁচার লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জার্মানরা।
ছবি: Thomas Lohnes/Getty Images
বন্যার পরের ছবি
যে জায়গায় বন্যা হয়েছে, সেখানে শুধু বিপর্যয়ের ছবি। বাড়ি ভেঙেছে। গাড়ি ভেসে গেছে। আসবাব ভেঙে ছড়িয়ে আছে চারদিকে। মৃতের সংখ্যা ১৬০ ছাড়িয়েছে। এখনো অনেকে নিখোঁজ।
ছবি: Abdulhamid Hosbas/AA/picture alliance
এ কোন বাড়ি
জুটা স্কেলেকিসের অ্যাপার্টমেন্ট। তিনি ও তার আহত স্বামী দুই দিন ধরে এই অবস্থায় ছিলেন। তারপর প্রশাসনের কর্মীরা এসে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যান। তাদের অ্যাপার্টমেন্ট আর বাসযোগ্য নেই।
ছবি: Thomas Lohnes/Getty Images
রাস্তার হাল
যা একসময় ছিল মানুষের প্রিয় আসবাব ও ঘরের জিনিসপত্র, তা এখন আবর্জনায় পরিণত হয়েছে। সেই আবর্জনায় ভর্তি রাস্তা। কিন্তু এর ফলে পরিবেশ দূষিত হয়ে তার প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্যের উপর পড়তে পারে। আর কাদা একবার শুকিয়ে গেলে খুব শক্ত হয়ে যাবে। তা ওই আবর্জনাকে এমনভাবে জড়িয়ে নেবে যে, তখন পরিষ্কার করা দুষ্কর হবে।
ছবি: Bram Janssen/picture alliance/AP
কাজে নেমে পড়েছেন আবাসিকরাই
সময় নষ্ট না করে কাজে নেমে পড়েছেন আবাসিকরাই। তারাই রাস্তা সাফ করছেন। আবর্জনা ফেলছেন। ময়লা ফেলার গাড়ি এসে বারবার করে তা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বন্যাক্রান্ত একটি এলাকায় সপ্তাহান্তে ১৪ হাজার টন আবর্জনা সরানো হয়েছে।
ছবি: Thomas Frey/picture alliance/dpa
সাহায্যের হাত
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জার্মানির মানুষ। প্রচুর স্বেচ্ছাসেবক গিয়ে বন্যাক্রান্ত এলাকায় কাজ করছেন। প্রচুর ডোনেশন জমা পড়েছে। বেশ কিছু সমাজসেবী সংগঠন জানিয়েছে, তারা আর ত্রাণসামগ্রী নিতে পারছে না। বিপর্যয় এই এলাকার সব মানুষকে এক করে দিয়েছে।
ছবি: Oliver Pieper/DW
ম্যার্কেল আবার
জার্মানির চ্যান্সেলার ম্যার্কেল মঙ্গলবার আবার বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি এদিন গিয়েছিলেন নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়াতে।
ছবি: Wolfgang Rattay/AFP/Getty Images
বাসিন্দাদের সঙ্গে
ম্যার্কেল সেখানে বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন। কথা বলেন। তাদের উজ্জীবীত করেন।
ছবি: Wolfgang Rattay/AFP/Getty Images
ত্রাণ কীরকম হচ্ছে
সেখানে ত্রাণের কাজ কীরকম হচ্ছে সেটাও দেখেন জার্মান চ্যান্সেলার।
ছবি: Oliver Berg/dpa/picture alliance
সমালোচনা
বন্যার আগাম আভাস দেয়া হয়নি, তাই বিপাকে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। জার্মান প্রশাসনকে এখন এই সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। প্রশাসন অবশ্য এই সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে। ম্যার্কেল বলেছেন, মোবাইল অ্যালার্ট সিস্টেমের উপর সবসময় ভরসা রাখা যায় না। যখন মোবাইল ফোনেই কাজ করবে না, তখন কী করে অ্যালার্ট মানুষের কাছে পৌঁছবে?
ছবি: Thomas Lohnes/Getty Images
9 ছবি1 | 9
এই অর্থ ফেডারেল ও আঞ্চলিক বাজেট থেকে বরাদ্দ করা হবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংহতি তহবিল থেকে অর্থ সহায়তা চাওয়ার কথাও ভাবছে জার্মানি৷
জার্মানির বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর জোট- জিডিভি জানিয়েছে, নর্থ-রাইন ওয়েস্টফালিয়া ও রাইনল্যান্ড প্যালাটিনেট রাজ্যে বন্যার ক্ষতির জন্য তাদের ৫০০ কোটি ইউরো পর্যন্ত খরচ হতে পারে৷
তবে বাভারিয়া এবং সাক্সনি রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি এই হিসাবের মধ্য়ে ধরা হয়নি৷
এই বন্যাকে জার্মানির সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে৷