1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বিদেশি ছাত্রছাত্রী

সাবিনে দামাষ্কে/আরবি১৫ নভেম্বর ২০১৩

জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য টিউশন ফি লাগে না৷ কিন্তু বাড়িভাড়া, খাবার-দাবার, পোশাক-আশাক এসব বাবদ খরচ কম পড়ে না৷ বিশেষ করে বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা এটা ভালো করেই টের পান৷

Seminar für die Leiter der internationalen Abteilungen weißrussischer Universitäten, das am 14.10.13 in Minsk stattgefunden hat. Copyright: DAAD IC Minsk ***Achtung: grenzwertige Bildqualität! Nicht als Artikel- oder Karusselbild verwenden!***
ছবি: DAAD IC Minsk

বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের সহায়তা

এক্ষেত্রে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় বেশ কিছু ফাউন্ডেশন৷ তবে প্রতি বছর আড়াই লক্ষ বিদেশি ছাত্রছাত্রী ও ২৩০০০ ডক্টরেটের গবেষক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন৷ এঁদের মধ্যে মাত্র ২৫ শতাংশ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন৷ কোলন ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক দপ্তরের মুখপাত্র কার্ল হাইনৎস কর্নের কাছে ব্যাপারটা তেমন বিস্ময়কর নয়৷ কেননা বৃত্তির জন্য আবেদনের প্রক্রিয়াটা বেশ জটিল৷ সিদ্ধান্ত পেতে পেতে বছরও গড়িয়ে যেতে পারে৷ ফাউন্ডেশনগুলি ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরেই স্থির করে কাকে তারা সাহায্য করবে৷

গুরুত্বপূর্ণ ফাউন্ডেশন ডিএএডি

এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ফাউন্ডেশন হলো ‘ডিএএডি' বা জার্মান ছাত্র বিনিময় কর্মসূচি৷ বর্তমানে ৪৫,০০০ বিদেশি ছাত্রছাত্রীকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি৷ বৃত্তিভোগীদের ৭০ শতাংশই আসেন বিদেশ থেকে৷ এজন্য ডিএএডি-র নানা ধরনের কর্মসূচি রয়েছে৷ ব্যাচেলর কোর্সের ছাত্রছাত্রীরা মাসে ৬৫০ ইউরো, মাস্টার্সের ছাত্রছাত্রীরা ৭৫০ ইউরো আর ডক্টরেটের গবেষকরা ১০০০ ইউরো পান৷

স্নাতকের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৃত্তি পাওয়া সবচেয়ে কঠিন৷ কেননা পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই বৃত্তি দেওয়া হয়৷ ব্যাচেলরের ছাত্রছাত্রীদের বেলায় এটা নির্ণয় করা সহজ নয়৷ অন্যদিকে, মাস্টার্স ও ডক্টরেটের ছাত্রছাত্রীরা ব্যাচেলর পরীক্ষায় ভালো ফলাফল দেখাতে পারলে বৃত্তি পাওয়াও সহজ হয়৷

ডিএএডির বৃত্তি সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীরা নিজ নিজ দেশেই বিস্তারিত জানতে পারেন৷ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এসম্পর্কে তথ্যাদি পাওয়া যায়৷ কেনিয়ার ২৮ বছর বয়সি এমি নাইরোবি ইউনিভার্সিটিতে তার জার্মান শিক্ষিকার কাছ থেকে ডিএএডি-র বৃত্তি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন৷ ২০০৮ সালে বন বিশ্ববিদ্যালয়ে মিডিয়া বিজ্ঞানে মাস্টার্স কোর্সে বৃত্তির জন্য আবেদন করে সফল হন তিনি৷

ভাষায় দক্ষতা প্রয়োজন

‘‘আমার সব ধরনের সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়েছে৷ ইংরেজি ও জার্মান ভাষায় দক্ষতাও প্রমাণ করতে হয়েছে৷'' বলেন এমি৷ ভালো ফলাফল করায় মাসে ৭৫০ ইউরো বৃত্তি পান তিনি৷ এছাড়া যাতায়াত ভাড়া ও বিমার খরচও বহন করে ডিএএডি৷ এই টাকা দিয়ে খুব বেশি বিলাসিতা সম্ভব নয়৷ কেননা বনে বাড়িভাড়াই লেগে যায় ৩০০ ইউরোর বেশি৷ তবে বৃত্তির টাকা দিয়ে মোটামুটি চালিয়ে নেওয়া গেছে৷ ‘‘আমার মা বাবা বা আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে টাকা চাইতে হয়নি'', জানান এমি৷

বিদেশি ছাত্রদের জন্য সুলভ মূল্যে বাড়ি পাওয়াটা রীতিমত সমস্যাজনক৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি দপ্তরের কাছ থেকে কিছু পরামর্শ পাওয়া গেলেও আসল কাজটা ছাত্রছাত্রীদের নিজেদেরই করতে হয়৷ সুলভ মূল্যে একটি বাসস্থান পাওয়া যে কত কঠিন, সেই অভিজ্ঞতা এমিরও হয়েছে৷ ম্যুন্সটার শহরে ডক্টরেট শুরু করার সময় একটি গেস্ট হাউসে বাস করতে হয়েছে তাঁকে৷ আর এতে মোটা অংকের অর্থও গুণতে হয়েছে৷

ক্যাশ টাকা সাথে রাখতে হয়

বৃত্তি নিয়ে জার্মানিতে পাড়ি দিলেও অবশ্যই কিছু ক্যাশ টাকা সাথে রাখতে হয় বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের৷ কারণ ইউনিভার্সিটিতে নাম লেখানো ও নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার পরই ফাউন্ডেশনের তরফ থেকে মাসে মাসে টাকা আসতে শুরু করে৷ আর কেবল তাহলেই জার্মানিতে একটি বাসা ভাড়া করা যায়৷ ‘‘প্রথম তিন সপ্তাহ বিদেশি ছাত্রদের জন্য বলা যায় এক ‘সাংস্কৃতিক শক''', বলেন কার্ল হাইনৎস কর্ন৷ ‘‘তারা ভাবতেই পারেন না যে, অনেক কিছুর সুরাহা নিজেদেরই করতে হয়৷''

তবে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যের জন্য নানা রকম সমিতি ও গ্রুপ রয়েছে৷ যেমন ইন্টারনেশনাল ইউনিভার্সিটি গ্রুপ কিংবা ইউনিভার্সিটি কমিউনিটি৷ এই সব গ্রুপে স্বদেশিদের সঙ্গে মিলিত হতে পারেন বিদেশ থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা৷ তারা বাসা পেতে সাহায্য করেন, জার্মানির সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পথঘাট খুঁজে পেতে সহায়তা করেন৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাথলিক কিংবা প্রটেস্ট্যান্ট গির্জা কমিউনিটিতে সক্রিয় হলে অতিরিক্ত কিছু সুবিধাও পাওয়া যায়৷ যেমন কোনো কোনো কমিউনিটিতে বিদেশি ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত কক্ষ পেতে পারেন তারা৷

কার্ল হাইনৎস কর্ন জানান, ‘‘ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন গ্রুপে সক্রিয় হলে জার্মানি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ জীবনে খাপ খাওয়ানো সহজ হয়৷ শুধু পরীক্ষার ভালো রেজাল্টই নয়, সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়াটাও অনেক ফাউন্ডেশনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷''

ছবি: DW/S. Cords

সামাজিক তৎপরতাকে গুরুত্ব

বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ফাউন্ডেশনগুলি বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়৷ এক্ষেত্রে সিডিইউ ঘরানার কনরাড আডেনাউয়ার স্টিফটুং, এসপিডিপন্থি ফ্রিডরিশ এবার্ট শ্টিফটুং, গ্রিন পার্টির হাইনরিশ ব্যোল স্টিফটুং-এর নাম করা যায়৷ জার্মানিতে আসার পরও এইসব ফাউন্ডেশনের বৃত্তির জন্য আবেদেন করা যায়৷

এই সব ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পেতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে হবে এমন কোনো কথা নেই৷ তবে আবেদনকারীরা বিভিন্ন সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বৃত্তি পেতে সুবিধা হয়৷

ক্যাথলিক ও প্রটেস্ট্যান্ট গির্জার তরফ থেকেও বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি দেওয়া হয়, তবে সাধারণত স্ব-স্ব ধর্মের অনুসারীদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়৷

‘ওয়েল কাম সেন্টার'

জার্মানিতে আসার পর বিদেশি ছাত্রদের প্রথমেই যেখানে যেতে হয়, তা হলো তথাকথিত ‘ওয়েল কাম সেন্টার'৷ সেখানে সান্ড্রা গ্র্যোগার ও কার্ল হাইনৎস কর্নের মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন৷ তা সে পড়াশোনা, আর্থিক সমস্যা কিংবা ভিসা সমস্যা যাই হোক না কেন৷ বৃত্তিদাতা ফাউন্ডেশনগুলির ব্যাপারেও ভালো ধারণা রয়েছে পরামর্শদাতাদের৷ কার জন্য কোন ফাউন্ডেশন উপযোগী সে ব্যাপারে তারা বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের পরামর্শ দিতে পারেন৷

তবে বিদেশি ছাত্রদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভাষা শেখা৷ জার্মানিতে দাপ্তরিক ভাষা হলো জার্মান৷ এছাড়া অনেক বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য জার্মান ভাষা জানাটা জরুরি৷ এমির জন্য এটা কোনো সমস্যা ছিল না৷ তিনি তাঁর স্বদেশ কেনিয়ায় ‘বিদেশি ভাষা হিসাবে জার্মান' পড়াশোনা করেছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ