1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের রয়েছে নানা অসুবিধা

১৫ আগস্ট ২০১১

বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পড়া, লেকচারের সঙ্গে দেশের পড়া এবং লেকচারের আকাশ-পাতাল পার্থ্যক্য অনেক ছাত্র-ছাত্রীকে ভোগায়৷ পার্থক্যগুলো কোথায়? এর জন্য কীভাবে নিজেকে তৈরি করবেন?

Die chinesischen Studenten Shuang Liu, Wenau Tang und Xiao Lai (l-r) die an der TU Chemnitz studieren, bereiten sich in der Uni-Bibliothek auf ihre Seminare vor. In der Bibliothek stehen den Studenten eine Million Bücher zur Verfügung. Von den 750 ausländischen Studierenden aus 70 Ländern, die sich derzeit in Chemnitz eingeschrieben haben, kommen allein 314 aus China und sind damit die größte Gruppe unter den Ausländern an der Universität. Besonders nachgefragt sind Studienangebote aus den Wirtschaftswissenschaften, aus dem Maschinenbau und der Informatik. Für die TU Chemnitz ist Asien und dabei besonders die Volksrepublik China ein attraktiver Bildungsmarkt. Besonders enge Beziehungen unterhält sie zur Fudan-Universität Shanghai und zur Beihang-Universität Peking. Foto: Wolfgang Thieme/lsn +++(c) dpa - Report+++
চীনের ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই পরিশ্রমীছবি: picture-alliance/ ZB

জার্মানিতে পড়াশোনা হচ্ছে পড়া, শেখা এবং জানা একসঙ্গে৷ ক্লাসে যা পড়ানো হচ্ছে তা শিখতেই হবে এবং তা জেনে রাখা ভাল৷ বিষয় সাপেক্ষে তার পরিবর্তন হতে পারে৷ প্রতি সেমেস্টারে শিক্ষক ক্লাসে ঢুকবেন কয়েকশ স্ক্রিপ্ট হাতে নিয়ে৷ তা বিতরণ করবেন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে৷ সেখান থেকেই পড়াবেন৷ কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সেই স্ক্রিপ্টই যথেষ্ট৷ এর পাশাপাশি অন্তত তিন-চারটি বই ঝালাই করতে হবে – এবং তা করতে হবে নিজেকে, একেবারে একা৷

পরীক্ষায় পাস করতে হলে সবকিছু জার্মান ভাষাতেই পড়তে হবে, শিখতে হবেছবি: picture-alliance/moodboard

এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে যখন তাদের টিউটোরিয়াল বা হোমওয়ার্ক করতে বলা হয়৷ কারণ তা করতে হবে একা, কারো সাহায্য না নিয়ে৷ এবং এটা বেশ বড় একটি চ্যালেঞ্জ৷ কারণ, দেশে আমরা সবসময়ই গ্রুপ স্টাডিজের সাহায্য নিয়ে থাকি৷ কিন্তু জার্মানিতে প্রতিদিনই ইউনিভার্সিটির ক্লাসের পর বাড়িতে নিজেকে কিছুক্ষণ পড়াশোনা করতে হয়৷

তানিয়া কুপিশ হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইটালিয়ান ভাষা শেখান৷ মৌখিক পরীক্ষা হচ্ছে৷ ক্লাস রুমের বাইরে ‘পরীক্ষা চলছে, নীরবতা পালন করুন '– লিখে দরজায় লাগিয়ে রাখা হয়েছে৷ তানিয়া কুপিশ তিন বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা ভাল হচ্ছে না৷ কেউই ভাল নম্বর পাচ্ছে না৷ তানিয়া জানান, ‘‘ছাত্র-ছাত্রীদের একাই শেখার কাজটা করতে হবে৷ আমরা শুধু বুঝিয়ে দিতে পারি, বই ছাড়া বিভিন্ন কাগজ পত্র দিতে পারি৷ কিন্তু এরপর বাড়ির কাজ, শেখার দায়িত্ব তাদেরই নিতে হয়৷''

পড়াশোনা শেষ না করে নিজ দেশে ফিরে গেছে - এমন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও অনেকছবি: Studentenwerk Freiburg

তাই ৩৭ বছর বয়স্কা শিক্ষিকা সবসময়ই চেষ্টা করেন বিভিন্নভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করতে৷ ছাত্র-ছাত্রীরা চাইলে দিনের যে কোনো সময়ে তারা তানিয়ার কাছে আসতে পারে৷ এছাড়া ই-মেলের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর তিনি ক্রামাগত দিয়ে যান৷ তানিয়া বলেন, ‘‘এমন দিনও গেছে যে, আমি প্রায় একশো ই-মেলের জবাব দিয়েছি৷ এখন সব ই-মেলের উত্তর দেয়া সম্ভব হয় না৷ এতো সময় আমার হাতে নেই৷''

শিক্ষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ প্রয়োজন

ডামারেস সিমারমান অর্থনীতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সে কখনোই শিক্ষকদের সঙ্গে খুব বেশি যোগাযোগ করেনি৷ ব্রাজিলের এই ছাত্রীর নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলতে বেশ সমস্যা হয়েছিল৷ তার কথায়, ‘‘ব্রাজিলে আমি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি৷ সেখানে অধ্যাপকরা আমাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন৷ ক্লাসের পর ঘন্টার পর ঘন্টা আমাদের প্রতিটি বিষয় বেশ ভালভাবে বুঝিয়ে দিতেন৷ অধ্যাপকরা আমাদের বলে দিতেন কোন বইটি ভাল, বইটি কোথায় পাওয়া যাবে৷ সেই বিশ্ববিদ্যালয় এতো বড়ও ছিল না৷ সব কিছুই ছিল অন্যরকম৷''

ক্লাস, পড়া, লেকচারের সঙ্গে দেশের পড়া এবং লেকচারের পার্থ্যক্য অনেককেই ভোগায়ছবি: Arsalan Damghani

স্বাভাবিকভাবেই, বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্যের প্রয়োজন অনেক বেশি৷ অভিজ্ঞতার আলোকে কথাগুলো জানান অর্থনীতির অধ্যাপক থোমাস এগার৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইন্সটিটিউট অব ল অ্যান্ড ইকোনমিক্স'-এর পরিচালক তিনি৷ প্রায় ৩৩টি বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে পড়াশোনা করছে৷ আর সবাই এসেছে তার নিজের দেশ থেকে বিভিন্ন ধরণের অভিজ্ঞতা নিয়ে৷ তিনি জানান, ‘‘আমার কাছে সবচেয়ে বেশি অবাক করে বেশ কিছু দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের আচার-আচরণ৷ যেমন ভারত বা ইসরায়েল থেকে যারা আসে, তারা ক্লাসে প্রচুর প্রশ্ন করে, সহজে কোনো কিছু মেনে নিতে চায় না, অসংখ্য যুক্তি-তর্ক দেখায়৷ সেই তুলনায় চীনের ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই পরিশ্রমী৷ তারা ক্লাসে বিশেষ কোন প্রশ্ন করে না৷ এদের সবার শেখা, লেখা এবং উপস্থাপনের পার্থক্য দেখা যায় পরীক্ষার খাতায়৷ একেকজনের লেখা এবং চিন্তাধারা একেকরকম৷''

ভাষা শুধু সমস্যা নয় বিশাল একটি বাধা

ভাষা একটি বড় সমস্যা – এটি নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই৷ লেকচার অনুষ্ঠিত হয় জার্মান ভাষায়৷ পরীক্ষাও দিতে হয় জার্মান ভাষায়৷ সেই ভাষাগত সমস্যার কথা জানাল ব্রাজিলের ছাত্রী সিমারমান৷ বললো, ‘‘শুরুতে আমি সারাক্ষণ বাসায় বই নিয়ে পড়ে থাকতাম৷ ক্লাসে কী পড়ানো হয়েছে, অধ্যাপক কী বলেছেন - সেগুলো তুলে নিয়ে আসতাম৷ সবকিছু আমি প্রথমে পর্তুগিজ ভাষায় অনুবাদ করতাম, ইন্টারনেটেও পর্তুগিজ ভাষায় রিসার্চ করতাম, সবকিছুই শিখেছি পর্তুগিজ ভাষায়৷ কিন্তু অনেক পরে এসে বুঝেছি - না, পরীক্ষায় পাস করতে হলে সবকিছু জার্মান ভাষাতেই পড়তে হবে, শিখতে হবে৷''

ছাত্র-ছাত্রীদের একাই শেখার কাজটা করতে হবে : তানিয়াছবি: DW

তবে এসব সমস্যায় পড়তে হয় প্রতিটি বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীকে৷ অর্ধেকেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী এসব সমস্যার সামনে টিকতে না পেরে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়৷ এমনকি পড়াশোনা শেষ না করে নিজ দেশে ফিরে গেছে - এমন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও অনেক৷ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে কিন্তু এহেন তথ্যই পাওয়া গেছে৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ