মুসলিম অভিবাসীদের মনে ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধ করতে বিশেষ পাঠ্যসূচির ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছে জার্মানির ইহুদি ফেডারেশন৷ জার্মানিতে ইহুদিবিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য কট্টরপন্থি দল এএফডি-র নিন্দাও জানিয়েছে তারা৷
ছবি: picture alliance/dpa/Jüdisches Forum für Demokratie und gegen Antisemitismus e.V.
কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবরাহাম লেহরের প্রোটেসটান্ট প্রেস সার্ভিসকে জানিয়েছেন, ‘‘অভিবাসীরা এখানে আসার সাথে সাথে তাদের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ দমন করা না গেলে, তা চরম আকার ধারণ করবে৷ কেননা এই মানুষগুলো যখন এখানে স্থায়ী হয়ে যাবে, চাকুরি ও আবাসনের কোনো সমস্যা থাকবে না৷ তখন তারা তাদের মতামত প্রকাশ্যে বলা শুরু করবে৷ তাই এই অবস্থা প্রতিরোধে ‘ইন্টিগ্রেশন কোর্সে' ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধ সংক্রান্ত শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে৷''
লেহরের বলেন, ‘‘জার্মানির বর্তমান পরিস্থিতি তাঁকে ভাইমার রিপাবলিক যুগের শেষের দিকের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ কেননা সেসময় কট্টরপন্থা চরম আকার ধারণ করেছিল, বর্তমানে এএফডি-র উত্থানে সেই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷'' ১৯২৯ সাল থেকে জার্মানিতে ইহুদিবিদ্বেষের উত্থান হয়, যা হিটলার এবং তার নাৎসি বাহিনীর সময় চরম আকার ধারণ করে৷
কেমনিৎসের ঘটনা উল্লেখ করে লেহরের বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ সেসময় ইহুদিবিদ্বেষ রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি৷ ফলে এএফডি এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যার ফলেইহুদিবিদ্বেষ আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং যে কোনো মানুষ প্রকাশ্যে তা জানান দিতে পারে৷''
অ্যালিস্টে ভাল্শ/এপিবি
এক ছাদের নীচে মসজিদ, গির্জা আর সিনাগগ!
জার্মানির বার্লিনে এমনই এক উপাসনালয় তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ নাম – ‘হাউজ অফ ওয়ান’৷ আর এ জন্য ‘ক্রাউডফান্ডিং’-এর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের কাজ চলছে৷
ছবি: Lia Darjes
এক ছাদের নীচে
জার্মানির বার্লিনে এমন একটি ভবন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হয়েছে যেখানে এক ছাদের নীচে ইসলাম, খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের প্রার্থনার জন্য আলাদা অংশ বরাদ্দ থাকবে৷ ‘হাউজ অফ ওয়ান’ নামের এই ভবনে থাকবে অন্য আরেকটি অংশ, যেখানে তিন ধর্মের অনুসারীরা একসঙ্গে মিলিত হয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে পারবেন৷
ছবি: KuehnMalvezzi
তিন উদ্যোক্তা
প্রোটেস্ট্যান্ট যাজক গ্রেগর হোব্যার্গ, রাব্বি টোফিয়া বেন-চোরিন ও ইমাম কাদির সানচির যৌথ উদ্যোগে পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে সানচি বলেন, ‘‘তিন ধর্মের চলার পথ আলাদা হলেও লক্ষ্য একই৷’’ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিন ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলা এর অন্যতম একটি উদ্দেশ্য৷
ছবি: Lia Darjes
গির্জার স্থানে
বার্লিনের যে স্থানে ভবনটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে সেখানে আগে ছিল একটি গির্জা৷ শীতল যুদ্ধের সময় সেটি ধ্বংস হয়ে যায়৷ তারপর থেকে জায়গাটি খালি পড়ে আছে৷
ছবি: Michel Koczy
শুরুতে মুসলিমদের আগ্রহ ছিল না
প্রকল্পের শুরুতে কোনো মুসলিম সম্প্রদায় এর সঙ্গে জড়িত হতে আগ্রহী ছিল না৷ পরে ‘ফোরাম ফর ইনটেলেকচুয়াল ডায়ালগ’ নামের তুর্কিভাষী সুন্নি মুসলিমদের একটি সংগঠন এর সঙ্গে যুক্ত হয়৷
ছবি: KuehnMalvezzi
খ্রিষ্টান ও ইহুদিদের সমালোচনা
জার্মানির ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের নেতা মার্টিন মোসেবাখ বলেন, ভবনটির নকশায় ‘পবিত্র’ বিষয়টি নেই৷ নকশাটি দেখে ‘ফারাউনের কবর’-এর মতো আকারহীন মনে হয়৷ ইহুদিদের একটি অংশও এই পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে বলে জানা যায়৷
ছবি: Lia Darjes
তহবিল সংগ্রহ
ভবনটি তৈরি করতে ৪৩ মিলিয়ন ইউরো প্রয়োজন৷ ক্রাউডফান্ডিং-এর মাধ্যমে সেই টাকা তোলার প্রক্রিয়া চলছে৷