1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুসলিম মেয়েদের জন্য ফিটনেস স্টুডিও

নাদিয়া বায়েভা/আরবি১২ জানুয়ারি ২০১৩

পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে মুসলিম নারীদের খাপ খাওয়ানাটা খুব সহজ নয়৷ বিশেষ করে মাথায় হিজাব দিলে তো কথাই নেই৷ বাঁকা চোখে দেখা হয় তাঁদের৷ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশ গ্রহণ করতে পারেন না তাঁরা৷

Muslimisches Fitnessstudio Hayat in Köln, Fitnessstudio für muslimische Frauen Mitglied des Fitnessstudios „Hayat“ beim Training Bild: Emine Aydemir, Köln 2012
ছবি: Emine Aydemir

জার্মানিতে বসবাসকারী রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়েদের কঠোর অনুশাসনের মধ্যে থাকতে হয়৷ মেনে চলতে হয় পর্দা প্রথা৷ পুরুষদের সামনে খেলাধুলা বা সাঁতার কাটাও নিষেধ৷ স্বাস্থ্যের জন্য কিছু করতে চাইলে বাড়িতে ব্যায়াম করা ছাড়া আর উপায় থাকে না৷ এক্ষেত্রে এক ব্যতিক্রম এনে দিয়েছে একটি ফিটনেস স্টুডিও৷ কোলন শহরের মুসলমান মেয়েদের জন্য পাঁচ বছর আগে এক খোলা হয়েছে এটি, যেখানে তাঁরা নিঃসংকোচে ধর্মীয় বিধি নিষেধ লঙ্ঘন না করে অংশ গ্রহণ করতে পারেন৷ কেননা এই ফিটনেস স্টুডিওটিতে পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ৷

মুসলিমনারীরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন

নুর্গ্যুল কোরুক-র কাছে ফিটেনেস স্টুডিওর ‘ট্রেডবেল্ট' বা যে বেল্টের ওপর দ্রুত হাঁটতে হয়, সেই যন্ত্রটি সবচেয়ে পছন্দ৷ এটি শুধু যে মজার তাই নয়, ট্রেনিং-এর সময় আশে পাশের মেয়েদের সঙ্গেও গল্পগুজব করা যায়৷

২৬ বছর বয়স্ক নুর্গুল সবসময় খেলাধুলা পছন্দ করতেন৷ স্কুলে স্পোর্টস-এর ক্লাসে প্রথম সারির একজন ছিলেন তিনি৷ মাথায় হিজাব থাকলেও তাঁর কোনো অসুবিধা হতো না৷ সহপাঠীরা তাঁকে এইভাবেই দেখতে অভ্যস্ত৷ কিন্তু স্কুলের পড়া শেষ হওয়ার পর খেলাধুলার পাটও চুকে গেছে৷ নুর্গ্যুল কোরুক বলেন, ‘‘আমি ঢেকে ঢুকে থাকি বলে সাধারণ স্টুডিওতে ফিটনেস ট্রেনিং চালানো সম্ভব হতো না৷ সেখানে পুরুষরাও অংশগ্রহণ করে, আবার প্রশিক্ষণকারীরাও পুরুষ৷ অগত্যা নিজে নিজেই দৌড়াদৌড়িটা চালিয়ে গিয়েছি৷ কিন্তু ফিটনেসের যন্ত্রপাতিতে ট্রেনিং চালানো সম্ভব হয়নি৷''

পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ

সৌভাগ্যবশত মুসলিম মেয়েদের জন্য কোলনের বিকেনডর্ফ-এ স্থাপিত ফিটনেস স্টুডিওর খবরটি তাঁর কানে এল৷ সেখানে পুরুষরা ঢুকতে পারেনা৷ তাই মেয়েরা হিজাব ছাড়াই এখানে ট্রেনিং-এ অংশ নিতে পারে৷ এই বিশেষ ধরনের ফিটনেস স্টুডিওটি স্থাপন করেছেন তুর্কি বংশোদ্ভূত এমিনে আয়ডেমির ২০০৭ সালে৷

সম্পূর্ণভাবে মেয়েদের জন্য একটি ফিটনেস স্টুডিও জার্মানিতে কোনো বিরল ব্যাপার নয়৷ তবে হায়াত-এ অন্যান্য কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে, যা এটিকে অনন্য করে তুলেছে৷ছবি: Emine Aydemir

এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘‘সন্তান জন্মের পর আমার ওজন খুব বেড়ে গিয়েছিল৷ তাই ওজন কমানোর জন্য কিছু করার কথা মনে হচ্ছিল৷ একটি সাধারণ ফিটনেস স্টুডিওতে আমি ট্রেনিং শুরু করি৷ কিন্তু সেখানে হিজাব খোলা যেত না৷ কেননা সেই স্টুডিওর মালিক একজন পুরুষ, যিনি প্রায়ই সেখানে আসতেন৷ জানালা পরিষ্কার করতে এবং ডাক নিয়েও আসতেন পুরুষরা৷''

মেয়েদের জন্য ফিটনেস স্টুডিও ‘হায়াত'

তাই ৪৩ বছর বয়স্ক এমিনে শুধুই মেয়েদের জন্য একটি ফিটনেস স্টুডিও গড়ে তোলেন, নাম দেন ‘হায়াত'৷ যার অর্থ জীবন৷ এর আগে একটি তরিতরকারির দোকান ছিল তাঁর, তাই আত্মনির্ভর হওয়ার ব্যাপারে কোনো ভয় ছিল না এমিনের৷ ১০০ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এই স্টুডিওর, আজ ৪০০ মেয়ে ট্রেনিং নিতে আসেন এখানে৷ এর মধ্যে ৫০ জন জার্মান৷

এমিনে আইডেমিনের ভাষায়, ‘‘আমার সদস্যরা আন্তর্জাতিক৷ তুর্কি, আরব, ইয়োগোস্লাভিয়ান, পোলিশ, জার্মান – সব দেশেরই আছেন৷ অমুসলিম মেয়েরা আশে পাশে বসবাস করেন বলে এবং আমাদের প্রবেশ মূল্য তুলনামূলকভাবে কম হওয়ার কারণে এখানে আসেন৷''

বেশ কিছু বিধি বিধান রয়েছে

সম্পূর্ণভাবে মেয়েদের জন্য একটি ফিটনেস স্টুডিও জার্মানিতে কোনো বিরল ব্যাপার নয়৷ তবে হায়াত-এ অন্যান্য কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে, যা এটিকে অনন্য করে তুলেছে৷ এমিনে জানান, ‘‘আমাদের ইসলাম ধর্মে, মেয়েদের পরস্পরের মধ্যেও আব্রু বজায় রেখে চলতে হয়৷ সবার জন্য গণস্নানাগার নয়, বরং এখানে রয়েছে আলাদা আলাদা শাওয়ার কেবিন৷ কেউ কাউকে দেখতে পায় না৷ স্টিম বাথ নিতেও একটি টাওয়েল জড়িয়ে যান মেয়েরা৷''

এমিনে আইডেমির-এর খদ্দেররা এসব ছাড়াও সাধারণ ফিটনেস স্টুডিওর মতোই সবরকম সুযোগ সুবিধা পান৷ যেমন এখানে রয়েছে কার্ডিওভাসকুলার ট্রেনিং, স্টিম বাথ, সোলারিয়াম ইত্যাদির ব্যবস্থা৷ ব্যক্তিগত চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনিং প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়৷ বাচ্চাদের দেখাশোনার ব্যবস্থাও রয়েছে এই স্টুডিওতে৷ বেশিরভাগই মহিলাই কোনোদিন খেলাধুলা করেননি৷ যদিও মুসলমান মেয়েদেরই এক্ষেত্রে প্রয়োজনটা বেশি৷

এমিনের কথায়, ‘‘আমাদের খাবারে মাংসের প্রাচুর্য থাকে৷ তার ওপর কোনো শারীরিক পরিশ্রম যদি না হয়, তাহলে ওজন বাড়তে থাকে৷ বাচ্চাদের সাথে নাস্তা করতে হয়, বান্ধবীর সাথে দুপুরের খাবার, স্বামীর সঙ্গে রাতের খাবার খেতে হয়৷ সপ্তাহান্তে আসেন অতিথি, তাদের সঙ্গে না খাওয়াটা হয় অভদ্রতা৷ তাই এই সব মেয়ের জন্য এই রকম একটা স্টুডিওর দরকার ছিল৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ