1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে শরণার্থীদের অবস্থা

ইউলিয়া মানকে/আরবি২৩ জুলাই ২০১৩

বার্লিন শহরের অংশ হেলার্সডর্ফের বাসিন্দারা তাঁদের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট, সর্বোপরি শান্তি ভঙ্গের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছেন৷ কেননা তাঁদের এলাকায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের একটি বাসস্থান গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

এর প্রতিবাদে তাঁরা বিদেশি বিদ্বেষমূলক যুক্তি তুলে ধরছেন৷ কিছু দিন আগে বার্লিনের অন্য একটি অংশের বাসিন্দারা শরণার্থীদের জরুরি বাসস্থান তৈরির কথা শুনে স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযান চালান৷ অথচ এই ধরনের শিবির স্থাপন করা একান্তই প্রয়োজন৷ কেননা, রাজধানীতে শরণার্থীদের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় ছয়গুণ বেড়েছে৷

বড় বড় রাজনৈতিক দলের রাজনীতিকরাও কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিদেশি বিদ্বেষকে উস্কে দিচ্ছেন, জানান প্রো-অ্যাসাইলামের ব্যার্নড মেসোভিচ৷ যেমন এসেন কিংবা ল্যুবেক অঞ্চলের লর্ড মেয়ররা মন্তব্য করছেন: ‘‘যে সব এলাকায় রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়, সে সব অঞ্চলে সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে৷''

এমনকি অপরাধমূলক কার্যকলাপ বেড়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করেন তাঁরা৷ আর চরম দক্ষিণপন্থি পার্টিগুলি এইসব বক্তব্য লুফে নিয়ে আগুনে ঘি ঢালছে৷

অনেকেই বিদেশি বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করে

২০১২ সালে চালানো একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, জার্মানির এক চতুর্থাংশ মানুষ বিদেশি বিদ্বেষমূলক মনোভাব পোষণ করে৷ এসপিডি ঘেঁষা ফাউন্ডেশন ফ্রিডরিশ এবার্ট স্টিফটুং আয়োজিত এক সমীক্ষায় সামাজিক মনোবিজ্ঞানী এলমার ব্র্যালার, অন্যান্য গবেষকদের সঙ্গে মিলে জার্মানিতে চরম দক্ষিণপন্থী চিন্তাধারা নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন৷ এতে জানা গেছে, সাবেক পূর্ব-জার্মানির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ চান যে, বিদেশিদের তাঁদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হোক৷  কেননা এখানে চাকরি-বাকরি কমে যাচ্ছে৷ পুবের মানুষদের বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ কম বলেই তাঁদের মনে এই ধরনের ভীতি কাজ করে, মনে করেন গবেষকরা৷ অন্যদিকে পশ্চিমের মানুষরা বিদেশিদের সাথে মেলামেশা করতে অভ্যস্ত৷ তাঁদের সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব বা প্রতিবেশিদের অনেকেই বিদেশি বা অভিবাসী৷

মনোবিজ্ঞানী এলমার ব্র্যালারছবি: Fotohaus Borschel

ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে শরণার্থীদের মধ্যেও

তবে শুধু জার্মানরাই নয়, বিদেশিদের মধ্যেও রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত আইনের ব্যাপারে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ শরণার্থীরা তাঁদের স্বাধীনতা সীমিত করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছেন৷ যেমন ইরানি শরণার্থীরা, যারা স্বদেশেও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তাঁরা এখানেও নিজেদের অবস্থাকে মেনে নিতে চাইছেন না৷ তরুণ ইরানিরা জার্মানিতেও গণতন্ত্রের পক্ষে সংগ্রাম চালাতে চান৷ অসম আচরণের শিকার হতে চান না৷ এই ধারণা মেসোভিচ-এর৷

রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর আত্মহত্যা সাড়া জাগিয়েছে

২০১২ সালের প্রথম দিকে এক ইরানি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর আত্মহত্যা সাড়া জাগিয়েছিল সংশ্লিষ্টদের মধ্যে৷ এরপর অন্যান্য রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরাও নিজেদের সংঘবদ্ধ করতে থাকেন৷ গত বছরের শরতে ভ্যুরৎসবুর্গ থেকে বার্লিন পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেন তাঁরা৷ বিশেষ করে বাসস্থান সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতার আইনটি বাতিল করতে চান তাঁরা৷ এই আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের স্থির করে দেওয়া বসবাসের এলাকা ছেড়ে বাইরে যেতে পারবেন না রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীরা৷ ‘‘গত বছর আমরা যা দেখেছি, তা এর আগে কখনও ঘটেনি'', বলেন প্রো-অ্যাসাইলামের মেসোভিচ৷ জুন মাসের শেষ দিকে মিউনিখে ৯০ জন শরণার্থী খবরের শিরোনাম হন৷ তাঁরা মিউনিখ শহরের কেন্দ্রে একটি তাঁবু স্থাপন করে অনশন ধর্মঘট শুরু করেন৷ তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনকে স্বীকৃতি দিতে হবে, এই দাবি ছিল শরনার্থীদের৷ এক সপ্তাহ পর অবশ্য পুলিশ তাঁদের উঠিয়ে দেয়৷

ব্যার্ন্ড মেসোভিচছবি: Pro Asyl

জার্মানি শরনার্থীদের সংখ্যাটাকে ছোট করে দেখেছে

এর কারণ একেবারে পরিষ্কার বলে মনে করেন মেসোভিচ৷ জার্মানি শরণার্থীদের সংখ্যাটাকে ছোট করে দেখেছে৷ ‘‘সবচেয়ে কম সংখ্যক শরণার্থী যে বছর জার্মানিতে এসেছিলেন, তার ওপর ভিত্তি করেই পরিকল্পনা করা হয়েছে এখানে৷'' সে সময় ৩০ থেকে ৪০ হাজার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী জার্মানিতে এসেছিলেন৷ ‘‘এই বছর এই সংখ্যাটা ৯০ হাজারে দাঁড়াতে পারে'', জানান মেসোভিচ৷ তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় শরণার্থী দপ্তর এই ক্ষেত্রে যথেষ্ট কর্মী নিয়োগ করতে পারেনি৷ এর ফলে শরণার্থীদের এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁদের আবেদনের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করতে হয়৷ আর এই সময়টাতে তাঁদের চলাফেরার স্বাধীনতা অত্যন্ত সীমিত থাকে৷ শরণার্থীরা একাকীত্ব ও স্বাধীনতাহীনতার যন্ত্রণায় ভোগেন৷

রাজনৈতিক অঙ্গনে শরণার্থী সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা এখন সরগরম হয়ে উঠছে৷ জনসমক্ষেও প্রকাশ পাচ্ছে তাঁদের সমস্যা ও আশা-আকাঙ্খার কথা৷ তবে সংসদীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনীতিকরা বিষয়টিকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করবেন না বলে আশা করে শরণার্থী সংগঠনগুলি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ