বুধবার ভোরে জার্মানির কয়েকটি রাজ্যে সন্দেহভাজন ডানপন্থি সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ৷ পুলিশ বলছে, গত বছর থেকেই বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনা নিয়ে প্রস্তুত হচ্ছিল ডানপন্থি সংগঠন ‘রাইশব্যুর্গার’৷
বিজ্ঞাপন
সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থিদের উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তথাকথিত সন্ত্রাসী সংগঠন ‘রাইশব্যুর্গার’-ও বিভিন্ন স্থানে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে৷ সংগঠনটির সদস্যরা জার্মানির গনতান্ত্রিক সরকারকে মানে না৷ তারা মনে করে, এ দেশের পুনরায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের শাসন ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া উচিত৷ উগ্র নাৎসিবাদী এই সংগঠনের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যেই বুধবার জার্মানির বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়৷
‘রাইশব্যুর্গার’-এর ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে একই সংগঠনের আরেক সদস্যের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বার্লিন, বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ, ব্রান্ডেনবুর্গ, লোয়ার স্যাক্সনি, রইনলান্ড-পালাটিনেট এবং স্যাক্সনি-আনহাল্টের ১২টি অ্যাপার্টমেন্ট ও বেশ কিছু বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ৷ তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ‘রাইশব্যুর্গার’-এর কোনো সদস্যকে খুঁজে পাওয়া যায়নি৷
পুলিশ জানিয়েছে, তথাকথিত ডানপন্থি সংগঠনটির সদস্যরা গত বছরের বসন্ত থেকেই জার্মানির বিভিন্ন স্থানে পুলিশ অফিস, শরণার্থী শিবির এবং ইহুদিদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করে আসছে৷ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য গত কয়েক মাস তারা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তৎপরতা চালিয়েছে বলেও জানায় পুলিশ৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, এপি, ডিপিএ)
জার্মানিতে এত শরণার্থী চায় না তারা
শরণার্থীরা তাদের গন্তব্য হিসেবে জার্মানিকে বেছে নিচ্ছে৷ জার্মানিও তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছে৷ কিন্তু জার্মানিতে এত শরণার্থী চান না অনেকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘বিশ্বাসঘাতক’ ম্যার্কেল
জার্মানির ইসলাম ও অভিবাসী বিরোধী গোষ্ঠী পেগিডার হাজার হাজার সমর্থক সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের শরণার্থী নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে৷ শরণার্থীদের প্রতি নরম মনোভাবের কারণ তারা ম্যার্কেলের বিরুদ্ধে ‘উচ্চ পর্যায়ের বিশ্বাসঘাতকতা’ ও ‘জার্মানির মানুষের বিরুদ্ধে অপরাধ’-এর অভিযোগ আনেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Settnik
শরণার্থীদের নিয়ে কটূক্তি
পেগিডার (প্যাট্রিয়টিক ইউরোপিয়ান অ্যাগেনস্ট দ্য ইসলামাইজেশন অফ দ্য অক্সিডেন্ট) প্রতিষ্ঠাতা লুটৎস বাখমান সম্প্রতি শরণার্থীদের ‘পশু’, ‘আবর্জনা’ ও ‘উচ্ছৃঙ্খল জনতা’ বলে আখ্যায়িত করেন৷ এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে সরকার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O.Berg
সমাজে অন্তর্ভুক্তি সম্ভব নয়
সোমবার বিক্ষোভের সময় বাখমান বলেন, শরণার্থীর সংখ্যা দেড় কিংবা দুই মিলিয়নেই থেমে থাকবে না৷ এরপর আসবে তাদের স্ত্রী; আসবে এক, দুই কিংবা তিন সন্তান৷ ফলে এতগুলো লোকের জার্মান সমাজে অন্তর্ভুক্তির কাজ অসম্ভব হয়ে পড়বে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Settnik
জার্মান সরকারের অস্বীকার
জার্মানির জনপ্রিয় পত্রিকা ‘বিল্ড’ সরকারের গোপন ডকুমেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, চলতি বছর জার্মানিতে প্রায় দেড় মিলিয়ন শরণার্থী আসবে বলে মনে করছে সরকার৷ যদিও প্রকাশ্যে সরকার বলছে সংখ্যাটা এক মিলিয়ন হতে পারে৷ তবে জার্মান সরকারের এক মুখপাত্র এ ধরনের কোনো গোপন ডকুমেন্টের কথা তিনি জানেন না বলে সাংবাদিকদের বলেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Thalia Engel
শরণার্থীর মৃত্যু
জার্মানির পূর্বাঞ্চলের এক শরণার্থীদের বাসস্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইরিত্রিয়া থেকে আসা ২৯ বছরের এক শরণার্থীর মৃত্যু হয়েছে৷ অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনও জানা যায়নি৷ এদিকে, জার্মান সরকারের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর শরণার্থী ও তাদের বাসস্থানের উপর হামলার সংখ্যা বেড়েছে৷ এ বছরের প্রথম ছয় মাসেই এরকম ২০২টি ঘটনা ঘটেছে বলে সরকার জানিয়েছে, যেখানে গত বছর সংখ্যাটি ছিল ১৯৮৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিপদে ম্যার্কেল
শরণার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণের কারণে নিজ দল সহ অন্যান্য দলের রাজনীতিবিদদের তোপের মুখে পড়েছেন ম্যার্কেল৷ তাঁরা জার্মানির শরণার্থী নীতি ও শরণার্থীদের আগমনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে চ্যান্সেলরকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন৷