1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ‘সবুজ জ্বালানি’র ব্যবহার ব্যাপক বাড়ছে

৪ সেপ্টেম্বর ২০১১

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই এক বিস্ময়কর অগ্রগতি লক্ষ্য করেছেন জার্মানরা৷ এই দেশে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের হার বাড়ছে দ্রুত৷ বর্তমানে জার্মানির প্রয়োজনীয় জ্বালানির ২০ শতাংশের উৎসই বায়ু, সূর্য কিংবা বিকল্প কোন সবুজ উৎস৷

জার্মানিতে বায়ুশক্তির ব্যবহার বাড়ছেছবি: picture alliance / Wang bichun - Imaginechina

পরিসংখ্যান

২০০০ সালে জার্মানিতে উৎপাদিত মোট জ্বালানির মাত্র ৬.৭ শতাংশ এসেছিল নবায়নযোগ্য উৎস থেকে৷ লক্ষ্য ছিল ২০১০ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানো হবে ১২ শতাংশ৷ কিন্তু জার্মানি সেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ২০০৭ সালেই৷ জার্মানির জ্বালানি এবং পানি বিষয়ক এসোসিয়েশন বিডিইডব্লিউ'র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎপাদন ২০ শতাংশে পৌঁছেছে৷

পরমাণু শক্তি

জার্মানির জন্য এই খবর খুবই আনন্দের৷ কেননা, এই দেশ ক্রমান্বয়ে পরমাণু শক্তি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকেই নিজেকে এগিয়ে নিতে চাইছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল রাজনৈতিকভাবে এই বিষয়ে সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়েছেন৷ আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই জার্মানির সব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও ক্রমন্বয়ে বন্ধ করে দেওয়া হবে৷

সৌরশক্তি ব্যবহারেও জার্মানি এগিয়ে যাচ্ছেছবি: picture alliance / abaca

বিডিইডব্লিউ জানিয়েছে, এই প্রথম জার্মানিতে সবুজ জ্বালানির উৎপাদন ২০ শতাংশের সীমারেখা অতিক্রম করেছে৷ ২০১০ সালে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারের পরিমাণ ছিল মোট চাহিদার ১৮.৩ শতাংশ৷

উৎপাদন ৫৭.৩ বিলিয়ন কিলোওয়াট

২০১০ সাল থেকেই অবশ্য জার্মানিতে জ্বালানি ব্যবহারের পরিমাণ ২৭৫.৫ বিলিয়ন কিলোওয়াট-আওয়ার্সে রয়েছে৷ চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বায়ুচালিত কল, বায়োমাস, হাইড্রোইলেকট্রিক প্লান্টস, সৌরশক্তি, এবং বর্জ্য ভস্মকরণ খাত থেকে উৎপাদিত জ্বালানির পরিমাণ ৫৭.৩ বিলিয়ন কিলোওয়াট৷ এর মধ্যে বায়ু শক্তি ব্যবহার করে উৎপাদিত জ্বালানির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ২০.৭ বিলিয়ন কিলোওয়াট বা ৭.৫ শতাংশ৷ বায়োমাস থেকে উৎপাদন হয়েছে ৫.৬ শতাংশ, সৌরশক্তি থেকে উৎপাদন ৩.৫ শতাংশ৷

সৌর শক্তি

সবুজ জ্বালানি'র এই ব্যবহার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তনটি এসেছে সৌর শক্তি'র খাত থেকে৷ ২০১০ সালের তুলনায় বর্তমানে সৌরশক্তি থেকে উৎপাদন বেড়েছে ৭৬ শতাংশ৷ বিডিইডব্লিউ'র বিবৃতি অনুযায়ী, নতুন ধরনের সোলার প্যানেলের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং বসন্তে সূর্যের প্রখরতা উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে৷ তাছাড়া সৌরশক্তি সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম কমে যাওয়া এবং সবুজ জ্বালানি বিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের ভর্তুকি দেওয়ার ফলেও উৎপাদন বাড়ছে৷

জার্মানিতে জ্বালানির বিভিন্ন উৎস নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানী মাজহারুল এম. ইসলাম৷ এই দেশে সবুজ জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বাড়াতে জার্মানি সেই নব্বই দশক ধরে চেষ্টা করছে৷ এখন দ্রুত উন্নতির পেছনে কারণ হচ্ছে, এই দেশ কয়েকটি খাতে খুবই জোর দিয়েছে৷ একটি হচ্ছে অফসোর উইন্ড পাওয়ার, এটা তাদের নতুন প্রক্রিয়া৷ বায়োমেস বা বায়োফুয়েল উৎপাদনের মাধ্যমে সবুজ জ্বালানির ব্যবহার বাড়ছে৷ তাছাড়া ফটোভোল্টিক সোলার পাওয়ার খাতেও জার্মানি বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দ্রুত উত্থানশীল দেশ৷ এভাবে সবুজ জ্বালানির প্রতিটি খাতকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিয়ে জার্মানি তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে৷

আঙ্গেলা ম্যার্কেলছবি: dapd

বাংলাদেশের পরিস্থিতি

মাজহারুল নজর দিলেন নিজের দেশ, বাংলাদেশ-এর পরিস্থিতির দিকেও৷ তাঁর মতে, বাংলাদেশে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে হলে, সরকারকে আরো এগিয়ে আসতে হবে৷ এজন্য ব্যাপক গবেষণা এবং বিনিয়োগেরও প্রয়োজন৷ তিনি বলেন, জার্মানিতে ইতিমধ্যে ২৬ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করা হয়েছে৷ সুতরাং এধরনের ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছা দরকার৷ তাছাড়া বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাও বাড়াতে হবে৷ আমাদের অ্যাটোমিক এনার্জি কমিশনের মত আরেকটি কমিশন করতে হবে, যেটি হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি কমিশন৷

উল্লেখ্য, ২০৫০ সালের মধ্যে জার্মানি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ৮০ শতাংশে উত্তীর্ণ করতে চায়৷ একই সঙ্গে জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে এই দেশ৷

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ