সিডিইউ সদরদপ্তরের বাইরে প্রতিবাদ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ। অতি ডানপন্থিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজের অভিযোগে সিডিইউ এর বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ তাদের৷
সিডিইউ-এর সদরদপ্তরের সামনে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখান।ছবি: Christoph Soeder/dpa/picture alliance
বিজ্ঞাপন
জার্মানির পার্লামেন্টে একটি একটি কড়া অভিবাসন আইন করার জন্য খসড়া বিল আনেন সিডিইউ-এর চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী ফ্রিডরিখ মেরৎস। অতি ডানপন্থি এএফডির সমর্থনে তা পাস হয়।
তারপরই বৃহস্পতিবার সিডিইউ-এর সদরদপ্তরের সামনে হাজার হাজার মানুষ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ১৩ হাজার মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। পুলিশ জানায়, ছয় হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ
এএফডির সাহায্য নিয়ে খসড়া বিল পাস করানোর পর সিডিইউয়ের প্রবল সমালোচনা করেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। গ্রিন পার্টি এবং অনেকগুলি মানবাধিকার সংগঠন ও চার্চও এর সমালোচনা করেছে। তাদের বক্তব্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমঝোতা হয়েছিল, অতি ডানপন্থিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কেউ চলবে না। সেই সমঝোতা ভেঙেছেন মেরৎস।
এখনো পর্যন্ত জার্মানির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি এই সমঝোতা মেনে চলেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে হাতিয়ার করে নাৎসিদের উত্থানের কথা মাথায় রেখে তারা এই সমঝোতা করে।
ইউরোপের নির্বাচনে জার্মানিতে দ্বিতীয় স্থানে উগ্র-ডানপন্থি এএফডি
02:17
This browser does not support the video element.
'ডাপন্থিদের বিরুদ্ধে জোট' বৃহস্পতিবারের প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিল। তাদের দাবি, এএফডি-র সঙ্গে কোনো সহযোগিতা নয়।
এই বিক্ষোভের সংগঠক ক্যারোলিন মোসার মেরৎসকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, তিনিই এএফডি-র অতি ডানপন্থাকে সামাজিক দিক থেকে গ্রহণযোগ্য করে দিচ্ছেন।
মেরৎসের জনসভায় বিক্ষোভ
ড্রেসডেনে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী মেরৎসের জনসভায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। মেরৎস সেখানে নির্বাচনী প্রচারের জন্য গিয়েছিলেন।
২০২৫-এর নির্বাচনে জার্মানির চ্যান্সেলর প্রার্থী যারা
২০২৫-এর ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জার্মান সংসদ বুন্ডেসটাগের আগাম নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করছে৷ ছবিঘরে দেখে নেয়া যাক কারা হতে পারেন চ্যান্সেলর প্রার্থী।
ছবি: Kay Nietfeld/dpa/picture alliance
ওলাফ শলৎস, এসপিডি
বর্তমান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এবারও চ্যান্সেলর হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। জার্মানির সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের ৬৬ বছর বয়সি চ্যান্সেলর প্রার্থী ওলাফ শলৎসের নিজের একটি আইন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অতীতে হামবুর্গ শহরের মেয়র, দেশের শ্রমমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা শলৎসের জনপ্রিয়তা এখন অবশ্য বেশ পড়তির দিকে।
ছবি: Annegret Hilse/REUTERS
ফ্রিডরিশ ম্যারৎস, সিডিইউ
রক্ষণশীল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটদের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী ফ্রিডরিশ ম্যারৎসের জন্ম ১৯৫৫ সালে। আইনজীবী ম্যারৎস বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংস্থা ব্ল্যাকরক-এ কাজ করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার।
ছবি: Ruffer/Caro/picture alliance
রবার্ট হাবেক, গ্রিন পার্টি
৫৫ বছর বয়সি রবার্ট হাবেক গ্রিন পার্টি চ্যান্সেলর প্রার্থী। তার সবচেয়ে বড় গুণ নিজের ভুল স্বীকার করতে পিছপা হন না। রবার্ট হাবেক-ই প্রথম বর্তমান জোট সরকারের ব্যর্থতা ও জোটের শরিকদের মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেন। রাজনীতির বাইরে হাবেক একজন লেখক, অনুবাদক ও দার্শনিক।
ছবি: appeler/dpa/picture alliance
আলিস ভাইডেল, এএফডি
অর্থনীতিতে পিএইচডি করা আলিস ভাইডেলের জন্ম ১৯৭৯ সালে৷ উগ্র ডানপন্থি দল এএফডির কো-চেয়ারম্যান পড়ালেখা ও চাকরি করেছেন চীনে। অভিবাসনবিরোধী প্রচারণার কারণে আলিস ভাইডেল ইতিমধ্যে বেশ আলোচিত-সমালোচিত। শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভূত এক নারী তার ‘সিভিল পার্টনার’৷ বছরের বেশির ভাগ সময় সেই নারীর সঙ্গে সুইজারল্যান্ডে থাকেন আলিস। দুটি শিশু দত্তক নিয়েছেন তারা।
আলিস ভাইডেলের মতো জার্মানির বর্তমান অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনারের জন্মও ১৯৭৯ সালে। মন্ত্রীসভা থেকে তাকে বহিষ্কার করার মাধ্যমেই ভেঙে পড়ে জোট সরকার। ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার পড়াশোনা করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে৷ একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ সংস্থার মালিক লিন্ডনার জার্মান বিমান বাহিনীর একজন রিজার্ভ সদস্যও। ৩৪ বছর বয়সে নিওলিবারেল রাজনৈতিক দল ফ্রি ডেমোক্র্যাট (এফডিপি)-র চেয়ারম্যান হন তিনি।
ছবি: Hannes P Albert/dpa/picture alliance
জাহরা ভাগেন্কনেখট, বেএসভে
রাজনৈতিক টকশোর পরিচিত মুখ, সাবেক বাম রাজনীতিবিদ জাহরা ভাগেন্কনেখট বর্তমানে পপুলিস্ট মতাদর্শের প্রচারক। রক্ষণশীল সামাজিক নীতি, বাম ধারার অনুপ্রাণিত অর্থনৈতিক নীতি ও অভিবাসন বিরোধিতার কারণে তিনি বেশ পরিচিত। জারাহ জলবায়ু পরিবর্তন ও ন্যাটোর বিষয়েও কঠোর।
ছবি: Kay Nietfeld/dpa/picture alliance
ইয়ান ফান আকেন, লেফট পার্টি
পশ্চিম জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করা ইয়ান জীববিজ্ঞানে পিএইচডি৷ ২০০৪ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত কাজ করেছেন জাতিসংঘের বায়োলজিক্যাল উইপন্স পরিদর্শক হিসেবে। ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত জার্মান সংসদে বামদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ইয়ান। চলতি বছর অক্টোবরে জার্মান বাম দলের কো-চেয়ার নির্বাচিত হয়েছেন ৬৩ বছর বয়সি ইয়ান।