জার্মানিতে সিরীয় শরণার্থী
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজেদের ভিটে-মাটি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে৷ জার্মানি সহ শিল্পোন্নত দেশগুলির উপর মানবিকতার খাতিরে তাদের আশ্রয় দেবার জন্য চাপ বেড়ে চলছিল৷ জার্মান সরকার ৫,০০০ সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ বুধবারই প্রথম পর্যায়ে ১০৭ শরণার্থী হানোফার শহরে এসে পৌঁছেছেন৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স পেটার ফ্রিডরিশ স্বয়ং বিমানবন্দরে বৈরুত থেকে আসা সিরীয় শরণার্থীদের স্বাগত জানান৷ তাদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু৷ প্রথম দুই সপ্তাহ কাছের একটি এলাকায় তাদের রাখা হবে৷ তারপর তাদের বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়ে দেয়া হবে৷ জার্মানির ফেডারেল সরকারের এক কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছেন, রাজ্য সরকারগুলিও আলাদা করে সরাসরি সিরীয় শরণার্থীদের আশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷
সাধারণ নির্বাচনের ঠিক আগে জার্মান সরকারের এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ মানবাধিকার সংগঠন ও বিরোধীরা বলছেন, বর্তমান সংকটের আলোকে এই সংখ্যা যথেষ্ট নয়৷ জার্মানির এক শরণার্থী সংগঠন এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়েছে, কসোভো যুদ্ধের সময় জার্মানি ১৫ থেকে ২০ হাজার শরণার্থী গ্রহণ করেছিল৷ বসনিয়া যুদ্ধের সময়ে সংখ্যাটা ছিল প্রায় ৩ লক্ষ৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানাল ইউরোপের দেশগুলির উদ্দেশ্যে সিরিয়ার শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে৷
সবুজ দলের নেতা ইয়ুর্গেন ত্রিটিন-ও জার্মানির সরকারের উদ্দেশ্যে আরও সিরীয় শরণার্থী গ্রহণের ডাক দিয়েছেন৷ সেইসঙ্গে বাতলে দিয়েছেন এক সহজ পথও৷ তাঁর মতে, জার্মানিতে বসবাসরত সিরীয় বংশোদ্ভূত মানুষ দেশ থেকে আত্মীয়-স্বজনদের আশ্রয় দিতে চাইলে সরকার সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে প্রায় ৫০,০০০ শরণার্থী জার্মানি আসতে পারেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া জার্মানির দায়িত্বের মধ্যে পড়ে৷
বিরোধী সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের নেতা টোমাস অপারমান বলেন, যেখানে সিরিয়ার প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, সেখানে মাত্র ৫,০০০ মানুষকে জার্মানিতে আশ্রয় দিলে তেমন কোনো লাভ হবে না৷ সেইসঙ্গে সিরিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলিকে আরও সহায়তা করাও জার্মানি তথা ইউরোপের দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন৷
এসবি/ডিজি (ডিপিএ, ইপিডি)