মিউনিখ শহরে হামলার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবার রাতে দু'টি স্টেশন বন্ধ করে দিয়েছিল পুলিশ৷ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও এখনো বিপদ কাটেনি৷ এদিকে জার্মানিতে হামলা চালাতে নাকি জঙ্গি খুঁজছে আইএস৷
বিজ্ঞাপন
Munich terror warning
00:39
এবারের বর্ষবরণ উৎসবের সময় সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি ছিল৷ সুনির্দিষ্ট হামলার আশঙ্কায় বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে পুলিশ স্বাভাবিক ছন্দে উৎসব পালন করতে দেয়নি৷ জার্মানির মিউনিখ শহরেও নাকি বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী হামলার ছক কষছিল তথাকথিত ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরা৷ পুলিশ শহরের মূল স্টেশন বন্ধ করে দেয়৷ অন্য একটি স্টেশনও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়৷
সারারাত কোনো অপ্রিয় ঘটনা ঘটেনি৷ সকালে মিউনিখ পুলিশ টুইট করে সব ভুক্তভোগীদের শান্ত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে৷ বিভিন্ন ভাষায় মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে পুলিশ৷
কিছু সূত্র অনুযায়ী প্যারিসের মতো শহরের বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে হামলার ছক কষছিল আইএস জঙ্গিরা৷
বর্ষবরণ উৎসবে সেই ষড়যন্ত্র বানচাল হয়ে গেলেও বিপদ এখনো পুরোপুরি কাটেনি বলে মনে করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ৷ বাভেরিয়ার রেডিও ও টেলিভিশন কেন্দ্র বিআর-এর সূত্র অনুযায়ী সাতজন ইরাকি শহরের দু'টি স্টেশনে আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল৷
ফরাসি ও মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র থেকে মিউনিখ কর্তৃপক্ষকে হামলার বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করছে কিছু সূত্র৷
জার্মানির ‘ডেয়ার স্পিগেল' পত্রিকার ইংরাজি অনলাইন সংস্করণের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী আইএস জার্মানিতে হামলা চালাতে জঙ্গি বাছাই করছে৷
কোথা থেকে অর্থ পাচ্ছে আইএস?
পেট্রোলিয়াম বিক্রি থেকে শুরু করে ব্যাংক ডাকাতি, অধিকৃত এলাকায় কর চাপানো এবং প্রাচীন সামগ্রী বিক্রি করে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট প্রায় ২০০ কোটি ডলার একত্র করেছে৷ তাতে তাদের আরও ২ বছর চলে যাবার কথা৷
ছবি: picture alliance/abaca
বেআইনি তেল বিক্রি
বেআইনি ভাবে পেট্রোলিয়াম বিক্রি আইএস-এর আয়ের প্রধান উৎস৷ সিরিয়া ও ইরাকে বেশ কিছু বড় তৈলকূপ আপাতত তাদের দখলে৷ মূলত তুরস্কের মধ্য দিয়েই তারা চোরাচালানের কাজ চালিয়ে থাকে৷ মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, কালোবাজারে তেল বিক্রি করে আইএস-এর মাসে প্রায় ৪ কোটি ডলার আয় হয়৷
ছবি: Getty Images/J. Moore
ব্যাংক ডাকাতি
সিরিয়া ও ইরাকে কোনো এলাকা দখলের পর আইএস সবার আগে ব্যাংকগুলি কবজা করে ফেলে৷ মার্কিন প্রশাসনের ধারণা, এভাবে তারা ৫০ থেকে ১০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ করেছে৷ শুধু মোসুল শহর দখল করেই তারা নাকি ৬২ কোটি ডলার লুট করেছিল৷ বছরে প্রায় ৫০,০০০ জিহাদি কর্মীর বেতন দিতে এই অর্থ যথেষ্ট৷
ছবি: Getty Images/S. Platt
কর আদায় ও চাঁদাবাজি
আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকার প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষকে ৫ থেকে ১৩ শতাংশ আয়কর দিতে হয়৷ জার্মান সরকারের সূত্র অনুযায়ী, আইএস অ-মুসলিমদের কাছ থেকে জিজিয়া করও আদায় করে৷ তাছাড়া চাঁদাবাজিও তাদের আয়ের আরেকটি উৎস৷
ছবি: DW/Andreas Stahl
প্রাচীন সামগ্রী বিক্রি
‘জিহাদিরা’ আইএস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ ধ্বংস করতে অভ্যস্ত৷ তবে বেশি দামি অ্যান্টিক সম্পদ সযত্নে সরিয়ে ফেলে কালোবাজারে বিক্রি করে তারা৷ প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছ থেকেও অমূল্য সম্পদ কেড়ে নিয়ে বিক্রি করতে পিছপা হয় না এই গোষ্ঠী৷ তবে বিক্রিমূল্যের সঠিক অঙ্ক জানা নেই৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Eid
মুক্তিপণ ও প্রচারণা
মানুষজনকে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় আইএস-এর দু-মুখী চাল৷ একদিকে এটা আয়ের একটা উৎস, অন্যদিকে এর মাধ্যমে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রচারণার কাজও হয়ে যায়৷ কিছু ‘মূল্যবান’ জিম্মির শিরশ্ছেদ করে সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে প্রচারণার ক্ষেত্রে বিপুল সাফল্য পায় আইএস৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
সহানুভূতি দেখাতে চাঁদা
আইএস-এর প্রতি সহানুভূতিপ্রবণ মানুষ গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে রয়েছে৷ তারা এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তহবিলে আর্থিক অবদান রাখে৷ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সূত্র অনুযায়ী সৌদি আরবে ২০১০ সাল থেকে ৮৬০ জন ব্যক্তিকে সন্ত্রাসের কাজে আর্থিক সাহায্য দেবার অভিযোগে শাস্তি দেওয়া হয়েছে৷ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ সেখানে ১০০ জনের শাস্তি হয়েছে৷